বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, কিছু দল পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের কথা বলছে। কিন্তু দেশের বেশির ভাগ মানুষ পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে বোঝেন না। তাঁরা এ পদ্ধতিতে কখনো ভোট দেননি। কিছু দেশে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়, কিছু দেশে এখনো পরীক্ষামূলক রয়েছে। যারা পিআর নির্বাচনের কথা বলে, তাদের ভোট নেই। নির্বাচন হলে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

আজ শনিবার বিকেলে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘যথাসময়ে’ সংস্কার ও দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশের প্রধান বক্তা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ছাত্রদের দল দাবি করছে মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হবে না। আমরা নাকি সংস্কার চাই না, শুধু নির্বাচন নির্বাচন করি। যারা এসব বলে, তাদের কোনো ভোট নেই। যাদের কোনো প্রার্থী চেয়ারম্যান ও মেম্বার হতে পারেননি, তারা এসব কথা বলছে। আমরাও সংস্কার চাই, তবে নির্বাচনের মাধ্যমে। সংস্কারের নামে যারা অনির্দিষ্টকাল ক্ষমতায় থাকতে চায়, তারা অনুপাতের নির্বাচনের কথা বলছে। আমরা নির্বাচনের কথা বললে আমাদের এজেন্ট বলা হচ্ছে। এসব কারা বলে? আমরা বলতে চাই, সবার আগে বাংলাদেশ। বিগত সরকারের আমলে দিল্লি থেকে আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনা করা হতো। আমরা আর কখনো অন্য কোনো দেশের তাঁবেদারি মেনে নেব না।’

সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ সব রাজনৈতিক দল যদি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়, তখন বিএনপিও ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। তখন দেখা যাবে, কারা বেশি আসন পায়। কার জনপ্রিয়তা বেশি। যারা নির্বাচন চায় না, তারা ভারতের দালাল।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, ‘আমরা ১৭ বছর নির্বাচনের জন্য লড়াই করেছি। এখন আবার নির্বাচনের কথা কেন আসবে? নির্বাচন হতে হবে। ছোট শিশু, সন্তানহারা মায়ের চোখের জলে আমরা পেয়েছি নতুন বাংলাদেশ। দেশের সমস্যা আমাদের নিজেদেরই সমাধান করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘হাসিনা পালিয়ে গেছে। কিন্তু জনগণ যেমন ছিল, তেমনই রয়েছে। শেখ হাসিনা অনেক কথাই বলেছিল। সে বলেছিল, লন্ডনে বসে তারেক রহমান নাকি দেশকে উল্টে দেবে। সেই তারেক রহমানই ফ্যাসিবাদের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করেছেন।’

ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি নিপুণ রায়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, নির্বাহী কমিটির তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সুলতান নাসির, কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জিনজিরা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোজাদ্দেদ আলী, ঢাকা জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক জুয়েল মোল্লা, ঢাকা জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোকাররম হোসেন, ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্রদলের সভাপতি পাভেল মোল্লা প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স

এছাড়াও পড়ুন:

মাদ্রাসায় তালা দিয়ে জামায়াত প্রার্থীর পথসভায় শিক্ষকরা

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা চলাকালে মাদ্রাসা তালাবদ্ধ রেখে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থীর পথসভায় অংশ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নে সীমান্তবর্তী কলাগাঁও জামেয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় এমন ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয়ভাবে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। 
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বাদাঘাট বাজারে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনী পথসভা ও গণসংযোগ ছিল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর) আসনের জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী মাওলানা তোফায়েল আহমদ খান। তিনি জামায়াতের জেলা আমিরও। এই সভা সফল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে জামায়াতের কর্মী-সমর্থকরা আসেন। বেলা ১১টার দিকে কলাগাঁও জামেয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল মান্নানের নেতৃত্বে কর্মী-সমর্থকরা সমাবেশস্থলে আসেন। 
অভিযোগ উঠেছে, মাদ্রাসার চলমান অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা বন্ধ করে, মাদ্রাসা তালাবদ্ধ রেখে সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী বাদাঘাট বাজারের জামায়াত প্রার্থীর নির্বাচনী পথসভায় অংশগ্রহণ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের কেউ কেউ প্রতিবাদ জানান। ওইদিন মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির বাংলা, অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান এবং দশম শ্রেণির আরবি পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল বলে দাবি করেন প্রতিবাদকারীরা।
কলাগাঁও গ্রামের আজহার ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার মাদ্রাসার অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা ছিল। মাদ্রাসার সুপার শিক্ষার্থীদের চলমান পরীক্ষা না নিয়ে নির্বাচনী পথসভায় অংশ নেন। এ সময় মাদ্রাসার দরজা তালাবদ্ধ রেখে যান তিনি। পরে কয়েকজন পরীক্ষার্থী তাদের বিষয়টি জানালে, গ্রামবাসীসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা মাদ্রাসায় গিয়ে এর সত্যতা পান।
জঙ্গলবাড়ীর মোর্শেদ আলম সাদ্দাম বলেন, এই মাদ্রাসার একজন শিক্ষক জামায়াতের স্থানীয় আমির। তিনি হয়তোবা তাঁর দলের কর্মসূচিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে গেছেন। 
মাদ্রাসার সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, বৃহস্পতিবার মাদ্রাসায় কোনো বিষয়ে পরীক্ষা ছিল না। মাদ্রাসা বন্ধ ছিল কিনা, এই প্রশ্নের উত্তর কৌশলে এড়িয়ে যান তিনি। 
এ বিষয়ে জেলা জামায়াতের জেলা আমির ও সুনামগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থী তোফায়েল আহমদ খান বললেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। বাদাঘাটের সমাবেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে দলের হাজারো কর্মী-সমর্থক, সুধী ও শুভাকাঙ্ক্ষী এসেছেন। তারা নিজ নিজ উদ্যোগে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। কে কীভাবে এসেছেন বিষয়টি জানেন না তিনি।  
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বললেন, মাদ্রাসা বোর্ড আলাদা। বিষয়টি দেখভাল করে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি। এখানে তাদের কিছুই বলার থাকে না।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  মোহাম্মদ আবুল হাসেম বললেন, খোঁজ নিয়ে যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, সুনামগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী মনোনয়নপ্রত্যাশী সাতজন। তারা আলাদা সভা সমাবেশ ও শোডাউন করছেন। অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমিরকে এ আসনে তাঁর সংগঠন ইতোমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। তিনি দলের একক প্রার্থী হিসেবে এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সালাহউদ্দিন আহমদকে তাঁর বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে: ইসলামী আন্দোলন
  • সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন চাইছে চরের দল: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • দেশে এখন রাজনৈতিক দলের অভাব নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রামে বৃষ্টি, সড়কে ভোগান্তি
  • মাদ্রাসায় তালা দিয়ে জামায়াত প্রার্থীর পথসভায় শিক্ষকরা
  • দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশির ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবি
  • জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ছিল অনিবার্য এক রাজনৈতিক বিস্ফোরণ
  • উচ্চ ও নিম্ন আদালতকে ‘ফ্যাসিস্টমুক্ত’ করতে হবে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমের বিচারের দাবিতে বিএনপির ঝাড়ুমিছিল