যুদ্ধবিরতির ইঙ্গিত পাওয়ার পরে গাজায় হামলা জোরদার ইসরায়েলের
Published: 5th, July 2025 GMT
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিতে পারে এমন ইঙ্গিত পাওয়ার পরে গাজায় হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। শনিবার ভোর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ৫৬ জন নিহত হয়েছে। এর আগের দিন অর্থাৎ শুক্রবার এই সংখ্যা ছিল ১৩৪।
নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিস শহরের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকায় বাস্তুচ্যুত তাঁবুতে ইসরায়েলি বাহিনীর গোলাবর্ষণে কমপক্ষে ছয়জন নিহত এবং ১০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। গাজা শহরের জেইতুন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী আল-শাফি স্কুলে বোমাবর্ষণ করে। এ ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত এবং আরো অনেকে আহত হয়।
চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে, গাজা শহরের কাছে একটি পানি বিশুদ্ধকরণ কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলায় দুই ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়েছে।
নাসের হাসপাতালের চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, রাফাহর উত্তরে একটি সাহায্য কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে তিন শিশুসহ নয়জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
মধ্য গাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে একটি বাড়ি লক্ষ্য করে ইসরায়েলি সামরিক বিমান হামলায় দুইজন নিহত হয়েছেন।
মধ্য গাজার নুসেইরাতের আল-আওদা হাসপাতাল জানিয়েছে, ওয়াদি গাজার দক্ষিণে সালাহ আল-দিন স্ট্রিটে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালানোর পর চারজন নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে কমপক্ষে ৭০টি মৃতদেহ এবং ৩৩২ জন আহত ব্যক্তি এসেছে।
১৮ মার্চ হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে কমপক্ষে ৬ হাজার ৭৮০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৩ হাজার ৯১৬ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী কমপক্ষে ৫৭ হাজার ৩৩৮ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এর বাইরে আরো হাজার হাজার মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছে।
গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থিত গাজার যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজী হয়েছে ইসরায়েল। তবে হামাস এখনো এ ব্যাপারে তাদের সম্মতির কথা জানায়নি। শুক্রবার হামাসের নেতারা জানিয়েছেন, তারা গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবিত চুক্তিতে সম্মত হওয়ার কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন। তবে তারা যুদ্ধের স্থায়ী অবসান ঘটানো হবে সেই ব্যাপারে নিশ্চয়তা চেয়েছেন।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল কমপক ষ ন ন হত ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
দাবানলে পুড়ছে গ্রিস, নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে দমকলবাহিনী
গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য ক্রিট দ্বীপে ইরাপেত্রা পৌরসভার কাছে বুধবার (২ জুলাই) বিকেল থেকে একটি ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। আগুনে বনভূমি পুড়ে গেছে এবং বাড়িঘর, জ্বালানি স্টেশনসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
দেশটির দমকল কর্তৃপক্ষ বলছে, আগুন ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের অন্তত ছয়টি এলাকায় থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
আরো পড়ুন:
গ্রিসে ফের দাবানল, বাংলাদেশিদের নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার আহ্বান
ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে ইসরায়েল
গ্রিসের জরুরি পরিষেবা সংস্থাগুলোর মতে, আগুনের সম্মুখভাগ এখন কমপক্ষে ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত, যা নিয়ন্ত্রণ ক্রমশ কঠিন করে তুলছে। ঘন ধোঁয়া বিস্তৃত এলাকাকে গ্রাস করেছে, কিছু জায়গায় দৃশ্যমানতা প্রায় শূন্যে নেমে এসেছে।
লাসিথির আচলিয়া থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে মাক্রি গিয়ালোস সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে, ওই এলাকায় আগুন নেভাতে দমকলকর্মীরা কাজ করছেন।
পুলিশ আগিয়া ফোটিয়ার বসতিস্থলের কাছের প্রধান রাস্তাটি বন্ধ করে দিয়েছে। একইসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদেরকে বাতাসের নিম্নমান, প্রচণ্ড তাপ ও ছাই পড়ার কারণে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়াতে অনুরোধ করেছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, দাবানলে আগিয়া ফোটিয়ায় বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও হোটেল পুড়ে গেছে ও এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টের কারণে কমপক্ষে চারজন বয়স্ক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গ্রিসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আগাম সতর্কতা হিসেবে ক্রিটের হাসপাতালগুলোকে জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে।
দাবালন ফেরমা পৌরসভাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ঘরবাড়ি ও হোটেলগুলো থেকে মানুষজনকে ব্যাপকভাবে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা জারি করেছে।
গ্রিসের দমকল পরিষেবা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৩৮টি ইঞ্জিন ও জলবাহী ট্রাকের পাশাপাশি ৪টি হেলিকপ্টার দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালন করছেন অন্তত ১৫৫ জন দমকল কর্মী এবং ৮টি বিশেষায়িত পদাতিক দল।
দমকল বাহিনী আরো জানায়, অতিরিক্ত সাহায্যবাহী দল ও বিমান রাজধানী এথেন্স থেকে পাঠানো হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দমকলকর্মী ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, আগুনের ভয়াবহতা অনেক বেশি এবং এটি এখনও নিয়ন্ত্রণে নেওয়া যায়নি। ঝড়ো বাতাস এবং ভূ প্রকৃতির কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা বেশ জটিল হয়ে পড়েছে।
ইউরোপের দক্ষিণে অবস্থিত গ্রিসে গ্রীষ্মকালের উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে প্রায়ই দাবানলের ঘটনা ঘটে। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, জলবায়ুর দ্রুত পরিবর্তনের কারণে সাম্প্রতিক দাবানলগুলো আরো ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
ঢাকা/ফিরোজ