আগামীকাল রবিবার থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের আলোচিত নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনা করবে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগাং ড্রাইডক লিমিটেড (সিডিডিএল)।

শনিবার (৫ জুলাই) দুপুরে এ তথ্য জানান, প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আজাদ মজুমদার।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, “চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনায় ঐতিহাসিক পরিবর্তন আসছে ৭ জুলাই। এদিন সাইফ পাওয়ারটেকের হাত থেকে ছয় মাসের জন্য বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব বুঝে নেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত ড্রাইডক লিমিটেড।” 

“চট্টগ্রামের নিউমুরিংয়ে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণের পর থেকেই এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে সাইফ পাওয়ারটেক। অভিযোগ আছে, বন্দর ব্যবস্থাপনার নামে তারা এখানে বহুপাক্ষিক এক ম্যানেজতন্ত্র কায়েম করেছিল যা দুর্নীতির বিস্তার ঘটিয়েছে, কন্টেইনার জট তৈরি করেছে, দেশকে প্রাপ্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেছে এবং দেশের ব্যবসা বানিজ্যের বিস্তারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।”

ছয় মাসের জন্য ড্রাইডক দায়িত্ব পাচ্ছে জানিয়ে তিনি লেখেন,  “আগামীকাল সাইফ পাওয়ারটেকের সঙ্গে চুক্তি শেষ হচ্ছে যা অন্তর্বতীকালীন সরকার নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ছয় মাসের জন্য বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পাচ্ছে ড্রাইডক। সব স্বাভাবিক থাকলে বন্দর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক অপারেটরদের সংযুক্ত করা হবে।” 

“বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিদেশি অপারেটরদের সম্পৃক্ত করার উদ্যোগের বিপক্ষে অপপ্রচার চলছে অনেক দিন ধরেই। যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই এধরনের উদ্যোগ প্রথম নেয়নি। সৌদি আরব ভিত্তিক রেড সি গেটওয়ে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালের পাশেই পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে ৬ এপ্রিল ২০২৪ থেকে।” 

তিনি লেখেন, “গতকাল বিজেএমই'র এক পরিচালক একটি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে দাবি করেছেন, পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল সৌদি কোম্পানির হাতে যাওয়ায় বিভিন্ন চার্জ "কয়েকশ গুণ" বেড়ে গেছে। আমরা বন্দর কতৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জেনেছি এই দাবি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। কথা বলেছি বিজেএমইর সাথেও। "কয়েকশ গুণ" চার্জ বেড়ে যাওয়ার কোনো তথ্য তারা দিতে পারেনি।” 

“চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার ব্যবস্থাপনায় গতি আসলে এর সবচাইতে বড় বেনিফিসিয়ারি হবে বিজেএমইর সদস্যরা। আমরা আশা করবো নিজেদের স্বার্থেই বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার থেকে তারা নিবৃত্ত থাকবেন,” বলেন তিনি। 

এনসিটি চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে বড় টার্মিনাল। টার্মিনালটিতে পাঁচটি জেটি রয়েছে। এতে চারটি সমুদ্রগ্রামী জাহাজ এবং একটি অভ্যন্তরীণ নৌপথে চলাচলকারী জাহাজ বার্থিং করতে পারে। ২০২৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দর ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ৬২৭ টিইইউস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করে। যার মধ্যে ১২ লাখ ৮১ হাজার টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে এনসিটিতে। যা বন্দরের মোট কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ৪৪ শতাংশ।

এনসিটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে বিতর্ক চলে আসছে। অনেকে এ ধরনের সম্ভাব্য সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন, করেন প্রতিবাদ।

ঢাকা/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর চ ল এনস ট

এছাড়াও পড়ুন:

কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে মাশুল বাড়বে না

কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে মাশুল (ফি) বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় গত এপ্রিলে কাঁচা পাট রপ্তানিতে মাশুল সাড়ে তিন গুণ ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে পাঁচ গুণ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। গত ২৬ জুন সেই প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করেছে। অর্থাৎ আগের মাশুলই তারা বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল বৃহস্পতিবার এ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি ব্যাংকগুলোকে আগের হারেই মাশুল আদায়ের নির্দেশনা দিয়েছে।

গত এপ্রিলে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, প্রতি বেল কাঁচা পাট রপ্তানিতে রাজস্ব বাড়িয়ে সাত টাকায় নির্ধারণ করা হয়, যা আগে ছিল দুই টাকা। অর্থাৎ এই মাশুল বাড়ানো হয় প্রায় সাড়ে তিন গুণ। আর পাটজাত পণ্যের প্রতি ১০০ টাকা রপ্তানি মূল্যের বিপরীতে রাজস্ব ১০ পয়সা থেকে পাঁচ গুণ বাড়িয়ে ৫০ পয়সা করা হয়।

এর আগে ১৯৯৫ সালের জুলাইয়ে মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছিল। ২৬ জুন জারি করা সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘৭ এপ্রিল জারি করা মাশুল নির্ধারণসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করা হলো। পাশাপাশি আগের মতো প্রতি বেল কাঁচা পাট রপ্তানিতে সরকার রাজস্ব হিসেবে দুই টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। এ ছাড়া পাটজাত পণ্যের ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ টাকা রপ্তানি মূল্যের বিপরীতে ১০ পয়সা হারে মাশুল আদায়ের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।’

কমছে নগদ সহায়তা, রপ্তানিতে ধাক্কা

সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দিন, অর্থাৎ গত বছরের ১ জুলাই থেকে এ খাতে নগদ সহায়তা কমানো হয়। তখন বৈচিত্র্যময় পাটপণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করে সরকার। এ ছাড়া পাটজাত পণ্যে নগদ সহায়তা ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ এবং পাট সুতায় ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

বিদ্যমান রপ্তানি নীতি অনুযায়ী, কাঁচা পাট হচ্ছে শর্ত সাপেক্ষে রপ্তানি পণ্য। একসময় বাংলাদেশি পাটপণ্যের বড় বাজার ছিল ভারত। কিন্তু বাংলাদেশের পাটপণ্য রপ্তানির ওপর দেশটি অ্যান্টিডাম্পিং শুল্ক আরোপ করে রাখায় দেশটিতে পাট সুতা রপ্তানি কমে ৫ ভাগের ১ ভাগে নেমেছে।

এদিকে পাটজাত পণ্য রপ্তানি বছর বছর কমছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১১২ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলারের পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা কমে হয় ৯১ কোটি ১৫ লাখ ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানি আরও কমে হয় ৮৫ কোটি ৫২ লাখ ডলার, যা সদ্য বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আরও কমে ৮২ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএসএ) সূত্রে জানা গেছে, দেশে বছরে ৭৫ থেকে ৮০ লাখ বেল কাঁচা পাট উৎপাদন হয়। এর মধ্যে পাটপণ্য উৎপাদনের জন্য লাগে ৬০ লাখ বেল।

পাট অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, চীনসহ ১৩টি দেশে ১৩ লাখ ৪৪ হাজার ৮৩৫ বেল কাঁচা পাট রপ্তানি হয়েছে। ওই অর্থবছরে ১ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা বা ১৬ কোটি ৪ লাখ ৮৭ হাজার মার্কিন ডলারের কাঁচা পাট রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে ৯ কোটি ডলারের বেশি এসেছে ভারত থেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাঁচ বছরে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে ২২৮ শতাংশ
  • প্রথম প্রান্তিকে ১২৯ কোটি টাকার বিমা দাবি দিয়েছে গার্ডিয়ান লাইফ
  • হিলি কাস্টমসে রাজস্ব আদায় ৭১৯ কোটি টাকা 
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় : র‍্যাগিংয়ের অভিযোগে একটি ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত, তদন্ত কমিটি গঠন
  • কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে মাশুল বাড়বে না
  • গ্যালারি কায়ার আলোকপথ
  • ইসরায়েলি সেনারা তাঁর বাবা-ভাইকে মারল, পরিবারের জীবিত সদস্যদের উপহাস করল
  • গত অর্থবছরে রপ্তানি ৯% বেড়েছে
  • সোনারগাঁয়ে কৃষকদের ফলজ চারা ও সার বীজ বিতরণ