সফল অভিনয়জীবন। গল্প, চরিত্র নির্বাচন থেকে শুরু করে অনিন্দ্য অভিনয়ের জন্য বরাবরই সাধারণ দর্শক ও চলচ্চিত্রবোদ্ধার প্রশংসা কুড়িয়ে আসছেন জয়া আহসান। এবারের ঘটনাটি শুধু এই অভিনেত্রী নন, অনেকের জন্যই ছিল চমকে দেওয়ার মতো। বলিউড শাহেনশাহখ্যাত কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের কাছ থেকে এলো জয়ার সিনেমার জন্য শুভেচ্ছাবার্তা।

জয়া আহসানের পাশাপাশি ভারতের আনন্দবাজারসহ একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আসছে ১৮ জুলাই মুক্তি পাচ্ছে অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী পরিচালিত সিনেমা ‘ডিয়ার মা’। দীর্ঘ ১০ বছর পর আবার বাংলা সিনেমা নির্মাণ করেছেন অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী। যে কারণে এই সিনেমাটি ঘিরে ইতোমধ্যে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা। জোরকদমে চলছে সিনেমার প্রচার। ‘ডিয়ার মা’র মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। তাঁর সহশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন চন্দন রায় স্যান্যাল, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। 

যে সব বাঙালি পরিচালক বাংলা সিনেমার পাশাপাশি হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সমানভাবে সফল, তাদের মধ্যে অনিরুদ্ধ অন্যতম; যার সুবাদে মুক্তির আগে এই নির্মাতার নতুন সিনেমা নিয়ে অমিতাভ বচ্চনের কাজ থেকে এলো শুভেচ্ছাবার্তা। 

সংবাদমাধ্যমগুলো আরও জানিয়েছে, প্রকাশ করা হয়েছে ‘ডিয়ার মা’ সিনমার ট্রেলার। সিনেমার পোস্ট প্রোডাকশন নিয়ে এই মুহূর্তে ব্যস্ততা তুঙ্গে পুরো টিমের। এরই মধ্যে শুক্রবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকের নজর কাড়ে একটি পোস্ট। বলিউড মহাতারকা অমিতাভ বচ্চন নিজেই শেয়ার করেছেন ‘ডিয়ার মা’-এর ট্রেলার। এক মুহূর্তের জন্য যেন সবকিছু থমকে গিয়েছিল পরিচালক ও অভিনেত্রীর। বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, সব ঠিক দেখছেন তো? 

সিনেমার ট্রেলার শেয়ার করে অমিতাভ বচ্চন লিখেছেন, ‘টনিদা, আমার অনেক শুভেচ্ছা রইল।’ সাতসকালে এমন শুভেচ্ছায় খানিক বাকরুদ্ধ পরিচালক। পুরো টিমের কাছেই এটি বড় প্রাপ্তি বলেও মনে করেন তিনি। 

অনিরুদ্ধর কথায়, ‘এটি শুভেচ্ছা নয়, আমাদের কাছে আশীর্বাদ। পুরো টিমের জন্য খুব বড় প্রাপ্তি। এমন একজন মানুষের আশীর্বাদ পেলাম, যা সত্যিই অনুপ্রেরণার। এই আনন্দ ভাগ করার কোনো ভাষা নেই আমার। ঠিক যেন কাঁধে হাত রেখে কেউ একজন বললেন এগিয়ে যেতে। মনটা ভরে গিয়েছে।’

একই সময়ে বিমানবন্দরে বসে তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর পর এক শুভেচ্ছাবার্তা পড়ে যাচ্ছিলেন অভিনেত্রী জয়া অহসান।

তিনি বলেন, ‘আমি ভাষাহীন। এমন একজন মানুষ আমাদের সিনেমার জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন এবং নিজের প্রোফাইলে শেয়ার করেছেন, আমি তো বলব এটি পরম পাওয়া। পাশাপাশি বাংলা সিনেমার জন্যও খুব বড় প্রাপ্তি। অমিতাভ বচ্চনের সিনেমা দেখে কত মানুষ ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছেন। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের বড় হয়ে ওঠা তাঁকে দেখে। তিনি তো মেগাস্টার। আজ সেই মানুষটা আমার কাজের জন্য আশীর্বাদ করছেন, এটি যে কত বড় আনন্দের বলে বোঝাতে পারব না।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জয় আহস ন ম র জন য অন র দ ধ কর ছ ন পর চ ল আহস ন

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে

বান্দরবানের থানচি উপজেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসার জায়গা ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকটে এই হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। বর্তমানে পুরো হাসপাতাল চালাচ্ছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। গত পাঁচবছরে চিকিৎসাধীন ও রেফার্ড করা ২৪ জন রোগী মারা গেছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালে ৩১ শয্যার থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যাত্রা শুরু করে। পরে এটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র দুইজন। তাদের মধ্যে একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন। এ কারণে রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ১৮ জন নার্স পদে রয়েছেন মাত্র চারজন। চারজন মিডওয়াইফ থাকার কথা, নেই একজনও।

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে পাগলা ঘোড়ার কামড়ে আহত ২০

বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লেন কাদের সিদ্দিকী

প্রাথমিক থেকে শুরু করে জরুরি চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে ছুটে যান পাহাড়ি ও বাঙালিরা। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা যোগ হয়নি। প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক না থাকায় গর্ভবতী নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন। 

দুর্গম এলাকার রোগীরা অনেক সময় নদীপথ কিংবা পাহাড়ি রাস্তা পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে এলেও কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা পান না। বরং তাদের বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। অনেক সময় বান্দরবানে যাওয়ার পথে রোগীরা মারা যান। এ কারণে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন তারা।

হাসপাতালের পরিসংখ্যানবীদ পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এখানে ভর্তি হয়েছেন ৫ হাজার ১৯৮ জন রোগী। এর মধ্যে ৪৫৬ জনকে রেফার্ড করা হয় বান্দরবান সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৭ জন রোগী। 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক মংক্যসিং মারমা বলেন, “২০১৯ সালে চাকরিতে যোগদান করার পর থেকে অন্তত সাতজন রেফার্ড করা রোগী মাঝপথে আমার গাড়িতেই মারা গেছেন।”

 

শৈসাই মং মারমা তিন বছর আগে বিনা চিকিৎসায় তার মাকে মারা যেতে দেখেছেন। তিনি জানান, তার মা শৈমেপ্রু মারমা (৩৪) অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর হঠাৎ তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। রেমাক্রী বাজার থেকে নদীপথে থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান মাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ভাড়া গাড়িতে জেলা হাসপাতালে যাওয়ার সময় চিম্বুক বারো মাইল এলাকায় তার মা মারা যান।

লেংরু ম্রো নামে চার সন্তানের মা হারিয়েছেন স্বামীকে। তিনি জানান, তার স্বামী রেং য়ুং ম্রো (৪৫) কিডনি জটিলতা নিয়ে থানচি হাসপাতালে যান। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে তাকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। থানচি থেকে বান্দরবান যাওয়ার মাঝপথে মারা যান তার স্বামী।

স্থানীয় বাসিন্দা মংমে মারমা বলেন, ‍“হাসপাতালে চিকিৎসক, ওষুধ ও যন্ত্রপাতির সংকট দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বদলি হলেও অনেকেই থানচিতে যোগ দেন না, ডিপুটেশনে থেকে যান সদর হাসপাতালে। ফলে এ অঞ্চলের পাহাড়ি ও বাঙালি প্রায় ৩০ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”

রিয়েং ম্রো নামে অপর বাসিন্দা বলেন, “পাহাড়ে বসবাসকারীদের অধিকাংশ গরিব। জেলা সদর হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া ব্যয়বহুল ও কষ্টকর। রেমাক্রি, বড় মোদক, তিন্দু থেকে থানচি সদরে রোগী আনতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপর আবার বান্দরবান সদর হাসপাতালে রেফার্ড করলে সাধারণ মানুষ কীভাবে চিকিৎসা করাবে?” 

থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, “বর্তমানে হাসপাতালে আমিসহ দুইজন চিকিৎসক রয়েছেন। একজন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন। তিন রোগীদের সেবা দিতে পারছেন না। ফলে পুরো হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্ব আমাকে একাই সামলাতে হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “জনবল ও সরঞ্জাম সংকটের কারণে গুরুতর রোগীদের রেফার্ড করা ছাড়া উপায় থাকে না। দীর্ঘ পথের কারণে অনেকেই জীবিত অবস্থায় সদর হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেন না।”

বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, “শুধু বান্দরবান নয়, পুরো তিন পার্বত্য জেলাতেই চিকিৎসক সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। নতুন করে ৪৮তম বিসিএসের ডাক্তার পদায়ন না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও বিভাগীয় প্রধানকে বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের আট-দশজন চিকিৎসককে বান্দরবানে বদলি করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ
  • সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
  • ৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে