পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় উল্টো রথ টানার মধ্য দিয়ে শেষ হলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে পৌর শহরের জগন্নাথ নাট মন্দির থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে চিংগড়িয়া হয়ে আবার মন্দির প্রাঙ্গণে ফিরে আসে।
এতে শিশু থেকে শুরু করে নানা বয়সী ভক্তবৃন্দ অংশ নেন। এ সময় ঢাকের বাদ্য, কাঁসর ঘণ্টা, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। এছাড়া পটুয়াখালী পৌর শহরের জুবলী বিদ্যালয় সংলগ্ন ইসকন মন্দিরসহ সব উপজেলার মন্দির থেকে উল্টো রথযাত্রা বের করা হয়।
আরো পড়ুন:
‘অবুঝ মন’ থেকে ‘উৎসব’
মায়া-মমতাহীন জীবনেও ঈদ আনন্দ পেল শিশুরা
এদিকে এ উৎসবকে ঘিরে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রত্যেকটি রথযাত্রায় থানা পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এই তিথিতে জগন্নাথ দেব মাসির বাড়ি থেকে নিজ আশ্রমে ফেরেন, আর সেই উপলক্ষেই অনুষ্ঠিত হয় উল্টো রথযাত্রা। প্রতি বছর হাজারো ভক্ত এ উৎসবে অংশ নেন।
চিংগড়িয়া এলাকার সম্রাট কর্মকার বলেন, “প্রতি বছর এ উৎসবকে ঘিরে এলাকা জুড়ে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। এটি শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্য।”
আখড়াবাড়ি এলাকার সুমন চন্দ্র হাওলাদার বলেন, “বৃষ্টির মধ্যেও রথ টানতে পারাটা সত্যিই পরম সৌভাগ্যের বিষয়। রথের রশি ধরার সঙ্গে সঙ্গে মনে এক ধরনের শান্তি আর আনন্দ কাজ করছে। পৃথিবীর সব প্রাণী মঙ্গল হোক জগন্নাথ দেবের কাছে, এটাই আমাদের চাওয়া।”
শ্রী শ্রী জগন্নাথ নাট মন্দিরের সভাপতি টিঙ্কু মুখার্জী বলেন, “বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজারো ভক্তদের অংশগ্রহণে শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের রথযাত্রা উৎসব সম্পন্ন হয়েছে। আমরা বিশ্ব শান্তি এবং সব জীবের শান্তি কামনা করেছি।”
কলাপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুয়েল ইসলাম বলেন, “রথযাত্রা উপলক্ষে শহরে পর্যাপ্ত পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব সম্পন্ন হবে।”
ঢাকা/ইমরান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উৎসব রথয ত র জগন ন থ মন দ র
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে শহীদ মিনার ভেঙে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন, কলেজ কর্তৃপক্ষের দুঃখ প্রকাশ
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে ভাষাশহীদদের স্মরণে নির্মিত জেলার প্রথম শহীদ মিনার ভেঙে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। বুধবার দুপুরে ক্যাম্পাসে কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়। এদিকে এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের পথ বের করা হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
আজ মানববন্ধনে সুনামগঞ্জের লেখক-গবেষক সুখেন্দু সেন, সাবেক ছাত্রনেতা রেজাউল হক, পঙ্কজ কান্তি দে, মুহাম্মদ মুনাজ্জির হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, মুজাহিদুল ইসলাম, সালেহীন চৌধুরী, মোহাম্মদ রাজু আহমেদ, নাসিম চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন। তাঁরা স্মারকস্তম্ভ কলেজের অন্য কোনো জায়গায় নির্মাণ এবং শহীদ মিনারের ভাঙা অংশ সংস্কারের দাবি জানান। পরে অধ্যক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।
সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুহাম্মদ মুনাজ্জির হোসেন বলেন, ‘এটি জেলার প্রথম শহীদ মিনার, ইতিহাসের অংশ। এটি ভাঙা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা কথা বলার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ এ জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। তাঁরা স্মারকস্তম্ভ কলেজের অন্য জায়গায় নির্মাণ ও শহীদ মিনার যেভাবে ছিল, সেভাবে আবার সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন।’
জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘সাবেক ছাত্রনেতারা আমাদের কাছে এসে তাঁদের দাবির বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি এখানে নতুন। আমি বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশলীর সঙ্গে দ্রুত কথা বলে সমস্যার সমাধান করব।’
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে ভাষাশহীদদের স্মরণে ১৯৬৬ সালে এই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছিল। এটি সুনামগঞ্জে ভাষাশহীদদের স্মরণে নির্মিত প্রথম শহীদ মিনার। প্রায় ৬০ বছরের পুরোনো এই শহীদ মিনার ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সেখানে নির্মাণ করা হচ্ছে কলেজের ৭৫ বছর পূর্তির একটি স্মারকস্তম্ভ।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাছননগর এলাকায় ১৯৪৪ সালে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়। সরকারীকরণ করা হয় ১৯৮০ সালে। কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০২০ সালের ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উৎসব হয়। এই উৎসবের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তখন ক্যাম্পাসে একটি স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। মাসখানেক আগে ওই স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ কোথায় এটি নির্মাণ করা হবে, সেই স্থানটি নির্ধারণ করেছে। স্থান নির্ধারণে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোনো ভূমিকা নেই।
আরও পড়ুনসুনামগঞ্জের প্রথম শহীদ মিনার ভেঙে স্মারকস্তম্ভ নির্মাণ, সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ-প্রতিবাদ৯ ঘণ্টা আগে