গুজরাটে বসবাসকারী ২৫০ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে ভারত
Published: 5th, July 2025 GMT
ভারতের গুজরাট থেকে আটক ২৫০ জন অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিককে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) সর্বভারতীয় টেলিভিশন ইন্ডিয়া টিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে ভাদোদরা বিমান ঘাঁটি থেকে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমান ব্যবহার করে তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। নিরাপদ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে স্থানান্তরের সময় সকল বাংলাদেশি নাগরিকের হাতকড়া পরানো ছিল। রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে বাসে করে পুলিশ পাহারায় তাদের বিমানবন্দরে আনা হয়েছিল।
এই পদক্ষেপটি গুজরাটে বসবাসকারী অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর অভিযানের অংশ। গত দুই মাসে রাজ্যের আহমেদাবাদ, সুরাট, ভদোদরা এবং রাজকোটের মতো প্রধান শহরগুলোতে অবৈধভাবে বসবাসকারী ১,২০০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে চিহ্নিত করে বহিষ্কার করা হয়েছে। গুজরাট প্রশাসন বলছে, এই শহরগুলোতে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা লক্ষণীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নজরদারি ও যাচাইকরণ জোরদার করেছে।
আরো পড়ুন:
রামায়ণ: রাম-সীতা হতে কত কোটি টাকা নিলেন রণবীর-সাই পল্লবী?
৮০ বলের সেঞ্চুরিতে জেমির রেকর্ড, শতকের দেখা পেলেন ব্রুকও
অভিযানের অংশ হিসেবে, কর্তৃপক্ষ জাল পরিচয়পত্র ব্যবহার করে ভারতে অবস্থানকারী ব্যক্তিদের শনাক্ত করার জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খ নথি পরীক্ষা করেছে। আটক ব্যক্তিদের অনেকের কাছেই জাল আধার কার্ড, প্যান কার্ড এবং অন্যান্য পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে গুজরাট সরকার সমস্ত অননুমোদিত বিদেশি নাগরিকদের অপসারণের প্রচেষ্টা জোরদার করছে।
গুজরাট পুলিশ ইঙ্গিত দিয়েছে যে, আগামী সপ্তাহগুলোতেও কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে একই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। কর্তৃপক্ষ নাগরিকদের সন্দেহজনক কার্যকলাপের খবর দেওয়ার এবং যাচাইকরণ অভিযানে সহযোগিতা করে জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অনুরোধ করেছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে কেমন খেলল আনচেলত্তির ব্রাজিল
গ্রিক দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন ‘ফর্ম’ বা ‘আইডিয়াজ’-এর কথা। তাঁর মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি চিরস্থায়ী, নিখুঁত ও আদর্শ রূপ আছে। আমরা পৃথিবীতে যা দেখি, তা আসলে সেই নিখুঁত রূপেরই অনুকরণ। যেমন কালো রঙের একটা নিখুঁত ধারণা আমাদের মনের ভেতরে আছে বলেই আমরা চারপাশে কালো রঙের নানা রূপ দেখি। বাস্তবে আমরা যে কালো দেখি, সেটা আসলে সেই নিখুঁত কালোরই প্রতিলিপি।
ফুটবলকে যদি প্লেটোর এই ধারণার আলোকে দেখি, তবে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সৃষ্টি ‘জোগো বনিতো’কে নিখুঁত ফুটবল বলা যায়। আমরা যে ফুটবলের নান্দনিকতা, কৌশল আর সৌন্দর্য দেখি, তা মূলত সেই নিখুঁত ফুটবলেরই প্রতিফলন। আমাদের চোখ সব সময় সেই আদর্শ ফুটবল খুঁজে বেড়ায়। কোথাও তার আভাস পেলেই আমরা উল্লসিত হয়ে উঠি। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই প্রত্যাশা থাকে ব্রাজিলের কাছেই, যারা নিজেরাও অনেক আগেই সেই খেলা পেছনে ফেলে এসেছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ ঘিরে আবারও সামনে এসেছে ‘জোগো বনিতো’র আলাপ। সেদিন ৯০ মিনিট ধরে অসাধারণ ফুটবল খেলেছিল ব্রাজিল। এরপরই কিছু সংবাদমাধ্যম ও সমর্থক প্রশ্ন তোলে—ব্রাজিলের ‘জোগো বনিতো’ কি আবার ফিরে এল? তবে প্লেটোর ফর্মের যুক্তি মেনে নিলে, সেই নিখুঁত রূপ আসলে কোথাও নেই।
আরও পড়ুনদক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে যা বললেন ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তি১০ অক্টোবর ২০২৫বরং মনে হয়, ব্রাজিলও হয়তো ভুলে গেছে সেই রূপটা কেমন ছিল। কিন্তু হারানো ঐতিহ্যের প্রতি টানই মাঝেমধ্যে আমাদের মনে করিয়ে দেয় সেই খেলার কথা। ‘জোগো বনিতো’র আলোচনাটা সরিয়ে রাখলেও, সেদিন ৫–০ গোলে জেতার পথে ব্রাজিলের ফুটবল সত্যিই ছিল চোখধাঁধানো। অনেক দিন পর সমর্থকেরা হয়তো খেলা দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছিলেন। যদিও পরের ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে সেই ব্রাজিলকে পাওয়া গেল সামান্যই।
প্রথমার্ধে ২–০ গোলে এগিয়েও শেষ পর্যন্ত ৩–২ গোলে হেরে যায় ব্রাজিল। আনচেলত্তি এ ম্যাচে দলে অনেক পরিবর্তন এনেছিলেন। তবু প্রশ্ন উঠতেই পারে—আসল ব্রাজিল কোনটা? দক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দেওয়া দল, নাকি জাপানের বিপক্ষে এগিয়েও হেরে যাওয়া দল? হয়তো আসল ব্রাজিলকে খুঁজতে হবে এই দুই রূপের মাঝামাঝি কোথাও।
ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি