তুর্কমেনিস্তানকে ৭ গোলে ভাসিয়ে বাংলাদেশের তিনে তিন
Published: 5th, July 2025 GMT
ইয়াঙ্গুনের থুউন্না স্টেডিয়ামে আজ তুর্কমেনিস্তানকে গোলবন্যায় ভাসিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ২০২৬ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে তুর্কমেনিস্তানকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রথমার্ধেই ৭ গোল করে ফেলে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। শামসুন্নাহার জুনিয়র, ঋতুপর্ণা চাকমা, তহুরা খাতুন, মনিকা চাকমা ও স্বপ্না রানীকে ঘিরে হয়েছে এই গোল উৎসব। আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশের মেয়েদের সবচেয়ে বড় জয় নিয়েও গবেষণা শুরু হয়ে গিয়েছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনো গোল হয়নি। তাতে কী, ৭-০ ব্যবধানও কম নয়!
আগের ম্যাচে শক্তিশালী মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারিয়েই নিশ্চিত হয় প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলা। আজ জয় দিয়ে সফর শেষ করে দেশে ফিরছেন মনিকারা।
ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই স্বপ্না রানীর দূরপাল্লার শটে শুরু হয় গোল-উৎসব। এরপর একে একে গোল করেন শামসুন্নাহার জুনিয়র (৬ ও ১৩ মিনিট), মনিকা (১৬ মিনিট), ঋতুপর্ণা (১৮ ও ৪০ মিনিট), ও তহুরা খাতুন (২১ মিনিট)। ৪০ মিনিটে মনিকার কর্নার থেকে ঋতুপর্ণার বাঁ পায়ের শটে আসে সপ্তম গোলটি।
জোড়া গোল করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল শামসুন্নাহার জুনিয়র ও ঋতুপর্ণা চাকমার সামনে। তবে কোচ পিটার বাটলার দ্বিতীয়ার্ধে আর নামাননি ঋতুপর্ণাকে। শামসুন্নাহারকে তুলে নেন ৬৮ মিনিটে। নির্ভার এই ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের কোচ তুলে নেন গোলকিপার রুপণাকে, তাঁর জায়গায় নামেন স্বর্ণাকে। আসেন উমেলাহ, হালিমা, ও রিপারাও।
তুর্কমেনিস্তান প্রথমার্ধে দিশেহারা থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। যদিও পুরো ম্যাচে তাদের খেলায় শুরুর স্কুল-স্তরের দুর্বলতাই বেশি চোখে পড়েছে। বিশেষ করে তাদের গোলকিপারের এক হাস্যকর ভুলে ঋতুপর্ণা চাকমার শটে হজম করা গোলটি ছিল ম্যাচের সবচেয়ে আলোচিত মুহূর্তগুলোর একটি।
এই জয়সহ গ্রুপে তিন ম্যাচের তিনটিতেই জিতে ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। আগামী মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় হবে নারী এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্ব। সেখানে ১২ দলের মধ্যে প্রথম ছয়ে থাকলেই ২০২৭ নারী বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ মিলবে। সেরা আটে থাকলে সুযোগ থাকবে আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফ খেলে বিশ্বকাপে যাওয়ার। বাংলাদেশের মেয়েদের এমন দুর্দান্ত অর্জন নারী ফুটবলে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
গ্রুপে রানার্সআপ হয়েছে স্বাগতিক মিয়ানমার, যারা আজ শেষ ম্যাচে বাহরাইনকে হারিয়েছে ৬-০ গোলে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত র কম ন স ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হলো রথ উৎসব
উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে শনিবার শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব। এ উপলক্ষে রাজধানী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উল্টো রথটান ছাড়াও পদাবলি কির্তন, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্রী যজ্ঞ, প্রার্থনা, আলোচনা সভা, ধর্মীয় বৈদিক নৃত্য, ভাগবতকথা, প্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গত ২৭ জুন রথ শোভাযাত্রা, রথের মেলাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এবারের রথযাত্রা উৎসব শুরু হয়েছিল। রথযাত্রার ৯ দিনের মাথায় অনুষ্ঠিত হয় উল্টো রথযাত্রা।
গতকাল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে স্বামীবাগের ইসকন আশ্রম মন্দির পর্যন্ত বর্ণাঢ্য উল্টো রথের শোভাযাত্রা আয়োজন করে। দুপুরে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উল্টো রথযাত্রা উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী।
আলোচনা সভার পর বিকেলে বরণানুষ্ঠান ও পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনটি বিশাল রথে শ্রীশ্রী জগন্নাথ, বলদেব ও সুভদ্রা মহারানীর প্রতিকৃতিসহ উল্টো রথযাত্রা শুরু হয়। ঢাক, কাঁসর, ঘণ্টা ও উলুধ্বনির মধ্যে সব বয়সের শত শত নারী-পুরুষ বর্ণাঢ্য সাজে এতে অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি পলাশীর মোড় থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব, পল্টন, শাপলা চত্বর, টিকাটুলি ও জয়কালী মন্দির হয়ে স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়।
এ ছাড়া পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের জগন্নাথ জিউ ঠাকুর মন্দির, জয়কালী রোডের রামসীতা মন্দির এবং শাঁখারীবাজার একনাম কমিটিসহ রাজধানীর অন্যান্য মন্দিরেও উল্টো রথযাত্রা হয়।
এদিকে গতকাল বিকেলে চট্টগ্রামে নগরীর তুলসীধাম মন্দিরের কেন্দ্রীয় রথযাত্রা উদযাপন কমিটি, নন্দনকানন শ্রী শ্রী রাধামাধব মন্দির এবং শ্রীকৃষ্ণ ইসকন মন্দিরের উদ্যোগে আলাদা আলাদাভাবে উল্টো রথযাত্রা বের হয়। এসব আয়োজনে অংশ নেন বিপুলসংখ্যক মানুষ।
সনাতনী রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দির থেকে এই রথযাত্রার প্রচলন।