এনবিআরের ‘এ চালান’ সিস্টেমে শুল্ক-কর জমা এখন আরো সহজ
Published: 5th, July 2025 GMT
সরকারি ট্রেজারিতে শুল্ক ও কর সরাসরি জমা দেওয়ার নতুন ব্যবস্থা চালু করেছে অর্থ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ‘এ চালান’ নামের এ পদ্ধতির মাধ্যমে এখন আমদানিকারক, রপ্তানিকারক এবং তাদের মনোনীত সিএন্ডএফ এজেন্টরা অনলাইনে ঘরে বসেই শুল্ক ও কর সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা দিতে পারবেন।
রবিবার (৫ জুলাই) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নতুন অর্থবছরের শুরুতে আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট সব ধরনের শুল্ক-করাদি ‘এ চালান’-এর মাধ্যমে অনলাইনে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এনবিআরের ‘Asycuda World’ সিস্টেম এবং অর্থ বিভাগের ‘আইবাস’ প্ল্যাটফর্মের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে এ ব্যবস্থা চালু হয়। ফলে আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক তাদের নিজস্ব ব্যাংক হিসাব থেকে অনলাইন কিংবা অফলাইন পদ্ধতিতে সরাসরি সরকারি কোষাগারে শুল্ক-কর জমা দিতে পারবেন।
এনবিআর জানিয়েছে, বিদ্যমান ব্যবস্থায় করদাতারা দিনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আরটিজিএস পদ্ধতিতে শুল্ক ও কর জমা দিলেও তা সরকারি কোষাগারে পৌঁছাতে কয়েকদিন সময় লেগে যেত। এতে সরকারের নগদ অর্থ প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হতো। নতুন ব্যবস্থায় যেকোনো স্থান থেকে যেকোনো সময় অনলাইনের মাধ্যমে শুল্ক পরিশোধ করা যাবে। পরিশোধিত অর্থ তাৎক্ষণিকভাবে ট্রেজারিতে জমা হবে, ফলে সরকার সেই অর্থ সঙ্গে সঙ্গেই খরচ করতে পারবে।
এ চালান একটি ওয়েবভিত্তিক ডিজিটাল সেবা। এর মাধ্যমে আমদানিকারক, রপ্তানিকারক বা তাদের প্রতিনিধি যেকোনো ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (যেমন: বিকাশ, রকেট, নগদ, উপায়, এমক্যাশ, ট্রাস্টপে ইত্যাদি) ব্যবহার করে শুল্ক-কর পরিশোধ করতে পারবেন। পরিশোধের পর সিস্টেম-জেনারেটেড চালান নম্বর ব্যবহার করে পণ্য খালাস করা যাবে। একই সঙ্গে দেশের ৬১টি ব্যাংকের ১১,৭০০টি শাখায় চেক ক্লিয়ারিং বা অ্যাকাউন্ট ডেবিটের মাধ্যমেও অর্থ জমা দেওয়া যাবে।
গত ২৩ এপ্রিল কমলাপুর আইসিডি কাস্টমস হাউসে পরীক্ষামূলকভাবে এই সিস্টেম চালু করা হয়। পরে তা পানগাঁও কাস্টমস হাউসে সম্প্রসারিত হয়। সর্বশেষ ৩ জুলাই থেকে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসেও এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। আগামী ৭ জুলাই থেকে ঢাকা কাস্টমস হাউসসহ দেশের সব কাস্টমস হাউসে ‘এ চালান’ ব্যবস্থার মাধ্যমে অনলাইনে শুল্ক-কর জমা নেওয়া হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বলছে, এই পদ্ধতির মাধ্যমে সরাসরি ট্রেজারিতে শুল্ক-কর জমা হওয়ায় রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা আসবে এবং সরকারের আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে।
ঢাকা/এনএফ/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ ন ক রক পর শ ধ সরক র আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
অন্য ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক আছে-এমন সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে লাশ রাখেন নজরুল
স্ত্রী তাসলিমা আক্তারের সঙ্গে নজরুল ইসলামের দীর্ঘদিন ধরে কলহ চলছিল। অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে তাসলিমার সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করতেন নজরুল। তিনি আরও সন্দেহ করছিলেন, তাঁর সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে পারেন তাসলিমা। এই দুই সন্দেহ থেকে নজরুল তাঁর স্ত্রী তাসলিমাকে হত্যা করেন। লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখেন।
রাজধানীর কলাবাগানে তাসলিমা হত্যা মামলায় তাঁর স্বামী নজরুলকে গ্রেপ্তারের পর আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বংশালের নবাবপুর রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে নজরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর নজরুলকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি উল্লিখিত তথ্য দিয়েছেন।
নজরুল-তাসলিমা দম্পতি কলাবাগান এলাকার একটি বাড়ির এক দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন। ডিসি মাসুদ আলম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল বলেছেন, তাসলিমাকে সন্দেহ করতেন তিনি। অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে তাসলিমার সম্পর্ক আছে বলে তিনি সন্দেহ করছিলেন। তাঁর সম্পত্তি স্ত্রী হাতিয়ে নিতে পারেন, এমন সন্দেহও কাজ করছিল। এই সন্দেহ থেকে তিনি স্ত্রীকে প্রতিনিয়ত মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। গত রোববার রাতে বাসায় ফিরে নজরুল দেখেন, ফ্ল্যাটের দরজার তিনটি লকের মধ্যে দুটি খোলা। সন্দেহ থেকে তিনি উত্তেজিত হন। দিবাগত রাত ১২টার দিকে তিনি ঘুমন্ত স্ত্রীকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন। লাশ গামছা দিয়ে বেঁধে, বিছানার চাদর ও ওড়না দিয়ে মুড়িয়ে বাসার ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন। রক্তমাখা তোশক উল্টিয়ে, মেঝে পরিষ্কার করে, নিজের জামাকাপড় ধুয়ে আলামত গোপনের চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুনডিপ ফ্রিজ থেকে নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পলাতক স্বামী গ্রেপ্তার২ ঘণ্টা আগেডিসি মাসুদ আলম বলেন, পরদিন সকালে নজরুল বড় মেয়েকে জানান, তাঁর মা অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে গেছেন। এ সময় বড় মেয়ে ঘরের দেয়ালে রক্তের দাগ দেখতে পায়। এরপর নজরুল তাঁর দুই মেয়েকে নানার বাড়ি রেখে আসার কথা বলেন। কিন্তু তিনি মেয়েদের নিয়ে যান রাজধানীর আদাবরে তাঁদের ফুফুর বাসায়। মেয়েদের রেখে নজরুল প্রাইভেটকারে পালিয়ে যান। সন্দেহ হলে তাসলিমার ছোট ভাই নাঈম হোসেনসহ এই দম্পতির দুই মেয়ে গত সোমবার সন্ধ্যায় কলাবাগান থানায় অভিযোগ দেয়।
আরও পড়ুনডিপ ফ্রিজ থেকে নারীর লাশ উদ্ধার: দাম্পত্য কলহের জেরে হত্যা, ধারণা পুলিশের১৮ ঘণ্টা আগেঅভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলাবাগান থানা-পুলিশের একটি দল ফ্ল্যাটটিতে যায় বলে জানান ডিসি মাসুদ আলম। তিনি বলেন, পুলিশ দরজার তালা ভেঙে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে ডিপ ফ্রিজের খোলে তারা। ফ্রিজের ওপরের দিকে থাকা মাছ-মাংস সরালে চাদর দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় তাসলিমার লাশ পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় গত সোমবার রাতে তাসলিমার ছোট ভাই নাঈম বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সংবাদ সম্মেলন জানানো হয়, মামলার পর পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে। গোয়েন্দা তথ্যসহ প্রযুক্তির সহায়তায় কলাবাগান থানা-পুলিশ নজরুলের অবস্থান শনাক্ত করে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুনকলাবাগানে ডিপ ফ্রিজ থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার, স্বামী পলাতক১৩ অক্টোবর ২০২৫