নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এবি পার্টি: দিদারুল আলম
Published: 5th, July 2025 GMT
আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) মো. দিদারুল আলম।
আজ শনিবার চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে প্রায় ২০০ আসনে প্রার্থী বাছাই সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকি আসনগুলোতেও প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তবে দেশের স্বার্থে কোনো যৌক্তিক সমঝোতা বা জোট গঠন প্রয়োজন হলে এবি পার্টি সে পথও উন্মুক্ত রেখেছে।
মতবিনিময় সভায় এবি পার্টির রাজনৈতিক দর্শন, সাম্প্রতিক জাতীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং হাটহাজারীর জন্য একটি সুপরিকল্পিত উন্নয়ন রূপরেখা উপস্থাপন করা হয়।
সভায় দিদারুল আলম বলেন, ‘হাটহাজারী আমার জন্মভূমি, আমার আশা ও স্বপ্ন। আমি এই মাটির সন্তান, তাই হাটহাজারীর মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।’
বিগত সরকারের আমলে নির্যাতিত হওয়ার কথা তুলে ধরে দিদারুল আলম বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ আমার জীবন থেকে ১০ বছর কেড়ে নিয়েছে। বিনা বিচারে আমাকে কারাবন্দী করা হয়েছিল।’
এবি পার্টির নেতৃত্বে দেশ গঠনের প্রসঙ্গ টেনে দিদারুল আলম বলেন, ‘চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে এবি পার্টি সম্মুখসারিতে ছিল। বর্তমানে দেশে নতুন রাজনৈতিক ধারা প্রতিষ্ঠায় এবি পার্টি একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হয়ে উঠেছে। আমরা দুর্নীতিমুক্ত, কল্যাণভিত্তিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। শুধু নির্বাচনে অংশগ্রহণ নয়, বরং মানুষের জীবনে গুণগত পরিবর্তন আনা আমাদের লক্ষ্য। জনগণের আস্থা ও অংশগ্রহণের ভিত্তিতে আধুনিক, সবুজ ও স্মার্ট হাটহাজারী গড়তে চাই।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম মহানগর আহ্বায়ক গোলাম ফারুক। বিশেষ অতিথি ছিলেন এবি পার্টির জাতীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিদ্দিকুর রহমান।
এবি পার্টির চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সমন্বয়ক জিয়া চৌধুরীর উপস্থাপনায় ওই মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহমুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ দ র ল আলম র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার
২০০৫ ও ২০১৭, ভারতের নারী ক্রিকেট দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের খুব কাছে গিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি। হারমানপ্রীত কৌররা লম্বা সেই অপেক্ষা দূর করলেন দুই হাজার পঁচিশে।
মুম্বাইয়ের নাভিতে প্রায় ষাট হাজার দর্শকের সামনে উচিুঁয়ে ধরলেন ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭ সালের ফাইনালেও খেলেছিলেন হারমানপ্রীত। রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। এবার আর ভুল করলেন না। অধিনায়ক হয়ে জিতলেন শিরোপা। গড়লেন ইতিহাস। যে ইতিহাস কখনো মুছবে না। কখনো জং ধরবে না।
ঝলমলে হাসিতে হারমানপ্রীত ট্রফি হাতে নিয়ে প্রেস কনফারেন্স রুমে প্রবেশ করেন। এবার তার আবেগের ধরণ ছিল ভিন্ন, যেন স্বপ্ন পূরণের মাখামাখি। লম্বা সংবাদ সম্মেলন জুড়ে বারবার তার কণ্ঠ ধরে আসে। আবেগ, রোমাঞ্চ, গর্ব, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। তবে একটি শব্দের ওপর বারবার ফিরে আসছিলেন তিনি, তা হলো আত্মবিশ্বাস,
‘‘আমি কেবল আমার অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। আমি স্তম্ভিত, আমি বুঝতে পারছি না। আসলে, এতে উত্থান-পতন ছিল, কিন্তু দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ছিল। আমি প্রথম দিন থেকেই এটা বলে আসছি। আমরা বাম বা ডানে তাকাচ্ছিলাম না। আমরা কেবল আমাদের মূল লক্ষ্যের দিকে তাকিয়েছিলাম।’’ - বলেছেন হারমানপ্রীত।
স্বপ্ন পূরণের রাতে হারমানপ্রীত কাছে পেয়েছিলেন সাবেক তিন ক্রিকেটার মিতালি রাজ, ঝুলন গোস্বামী এবং অঞ্জুম চোপড়াকে। প্রত্যেকেই স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতকে বিশ্বকাপ জেতানোর। তাদের অধরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন জেমিমা, দীপ্তি, শেফালি, স্মৃতিরা।
শিরোপা উৎসবে যোগ দেন মিতালি, ঝুলন, আঞ্জুমরা। তাদের হাতেও ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। প্রাক্তন খেলোয়াড়দের সাথে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে হারমানপ্রীত বলেন, ‘‘ঝুলন দি আমার সবচেয়ে বড় আইডল ছিলেন। যখন আমি দলে যোগ দিই, তখন তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। আমি যখন খুব কাঁচা ছিলাম এবং ক্রিকেট সম্পর্কে তেমন কিছু জানতাম না, তখনও তিনি সবসময় আমাকে সমর্থন করতেন। অঞ্জুম দি-ও তাই। এই দুজন আমার জন্য দারুণ সমর্থন ছিলেন। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি তাদের সাথে এই বিশেষ মুহূর্তটি ভাগ করে নিতে পেরেছি। এটি খুব আবেগপূর্ণ মুহূর্ত ছিল। আমার মনে হয় আমরা সবাই এটার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে, আমরা এই ট্রফি স্পর্শ করতে পেরেছি।’’
তার জন্য বিশ্বকাপের পুরো অভিযানটিই ছিল গভীরভাবে আবেগপূর্ণ। রাউন্ড রবিন লিগে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হার। চোট, অফ ফর্ম, জড়তা। সব সামলে সেরা হয়েছেন। তাইতো নিজেদের নিয়ে গর্বটাও বেশি হারমানপ্রীতদের, ‘‘আমরা প্রথম বল থেকেই অনুভব করেছিলাম যে আমরা জিততে পারি, কারণ শেষ তিন ম্যাচে আমাদের দল যেভাবে খেলছিল, তাতে আমাদের জন্য অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছিল, বিশেষ করে আমাদের আত্মবিশ্বাস। আমরা অনেকদিন ধরেই ভালো ক্রিকেট খেলছি। আমরা জানতাম দল হিসেবে আমরা কী করতে পারি।”
"গত এক মাস খুব আকর্ষণীয় ছিল। সেই দিনটির (ইংল্যান্ডের কাছে হারের) পর আমাদের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই রাত আমাদের জন্য অনেক কিছু বদলে দিয়েছিল। এটি প্রত্যেকের উপর প্রভাব ফেলেছিল। আমরা বিশ্বকাপের জন্য আরও প্রস্তুত হলাম। আমরা ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং মেডিটেশন শুরু করেছিলাম। আমরা বারবার বলছিলাম, যে জন্য আমরা এখানে এসেছি এবং এবার আমাদের এটা করতেই হবে।" - যোগ করেন হারমানপ্রীত।
প্রথম যে কোনো কিছুই আনন্দের। রোমাঞ্চের। এই অভিজ্ঞতা শব্দে বয়ান করা যায় না। বয়ান করা সম্ভব হয় না। হারমানপ্রীতও পারেন না নিজের সবটা উজার করে বলতে। তবে এই শিরোপায় তাদের নাম লিখা হবে সেই আত্মবিশ্বাস তারও ছিল, ‘‘আমরা বহু বছর ধরে এটি নিয়ে কথা বলছি—আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, কিন্তু আমাদের একটি বড় শিরোপা জিততেই হতো।"
ঢাকা/ইয়াসিন