আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) মো. দিদারুল আলম।

আজ শনিবার চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে প্রায় ২০০ আসনে প্রার্থী বাছাই সম্পন্ন হয়েছে এবং বাকি আসনগুলোতেও প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তবে দেশের স্বার্থে কোনো যৌক্তিক সমঝোতা বা জোট গঠন প্রয়োজন হলে এবি পার্টি সে পথও উন্মুক্ত রেখেছে।

মতবিনিময় সভায় এবি পার্টির রাজনৈতিক দর্শন, সাম্প্রতিক জাতীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং হাটহাজারীর জন্য একটি সুপরিকল্পিত উন্নয়ন রূপরেখা উপস্থাপন করা হয়।

সভায় দিদারুল আলম বলেন, ‘হাটহাজারী আমার জন্মভূমি, আমার আশা ও স্বপ্ন। আমি এই মাটির সন্তান, তাই হাটহাজারীর মানুষের জন্য কাজ করতে চাই।’

বিগত সরকারের আমলে নির্যাতিত হওয়ার কথা তুলে ধরে দিদারুল আলম বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ আমার জীবন থেকে ১০ বছর কেড়ে নিয়েছে। বিনা বিচারে আমাকে কারাবন্দী করা হয়েছিল।’

এবি পার্টির নেতৃত্বে দেশ গঠনের প্রসঙ্গ টেনে দিদারুল আলম বলেন, ‘চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে এবি পার্টি সম্মুখসারিতে ছিল। বর্তমানে দেশে নতুন রাজনৈতিক ধারা প্রতিষ্ঠায় এবি পার্টি একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হয়ে উঠেছে। আমরা দুর্নীতিমুক্ত, কল্যাণভিত্তিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চাই। শুধু নির্বাচনে অংশগ্রহণ নয়, বরং মানুষের জীবনে গুণগত পরিবর্তন আনা আমাদের লক্ষ্য। জনগণের আস্থা ও অংশগ্রহণের ভিত্তিতে আধুনিক, সবুজ ও স্মার্ট হাটহাজারী গড়তে চাই।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম মহানগর আহ্বায়ক গোলাম ফারুক। বিশেষ অতিথি ছিলেন এবি পার্টির জাতীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিদ্দিকুর রহমান।

এবি পার্টির চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সমন্বয়ক জিয়া চৌধুরীর উপস্থাপনায় ওই মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহমুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার আলী চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো.

বোরহান উদ্দিন, হাটহাজারী উপজেলার সদস্য জয়নুল আবেদীন, মোস্তাফা কামাল প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ দ র ল আলম র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

রাঙামাটির ৭ সড়কই ভালো

রাঙামাটি জেলার সাতটি সড়কই ভালো, বড় কোনো সমস্যা নেই। ২৩২ কিলোমিটার দূরত্বের এসব সড়ক যানবাহন চলাচল উপযোগী। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নিয়মিত তত্ত্বাবধান ও রক্ষাবেক্ষণের কারণে বর্ষায়ও তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। 
এদিকে সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ কয়েকটি সড়কে ছোটখাটো পাহাড়ধস ও ভাঙন দেখা দেয়। তবে সেগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মেরামত করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে সওজ।  
জানা গেছে, জেলার সওজ বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২৩২ কিলোমিটারের সাতটি সড়ক রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মধ্যে রয়েছে– রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, রাঙামাটি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়ক, ঘাগড়া-চন্দ্রঘোনা-বান্দরবান সড়ক, বাঙ্গাহালিয়া-রাজস্থলী সড়ক, বগাছড়ি-নানিয়ারচর-লংগদু সড়ক। তবে এসব সড়কের ১৬ কিলোমিটার অংশ এখনও কাঁচা। 
২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙামাটিতে ভয়াবহ পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে। এতে ১২০ জনের প্রাণহানি হয়। জেলার অভ্যন্তরীণ ও আন্তঃসড়কের ১৪৫টি স্থানে ভাঙন দেখা গিয়েছিল। এ দুর্যোগে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক, রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি-বান্দরবান সড়ক, রাঙামাটি-কাপ্তাই সড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ১৫ দিন ও রাঙামাটি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কে এক মাস যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। পরে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয়। ২৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ৬টি সড়কের ৫ হাজার ৪৭০ মিটার অংশে আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হয়। আরসিসি সসার ড্রেন তৈরি করা হয় ৬ হাজার ২২৫ মিটার, আরসিসি ইউ ড্রেন ১ হাজার ৫১০ মিটার ও কংক্রিট স্রোপ প্রটেকশন ৭২ হাজার ১৫০ বর্গমিটার। এছাড়া এ প্রকল্পের আওতায় কাপ্তাই হ্রদের পানির তোড়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাঙামাটি শহরের কাঁঠালতলী-ফিশারি বাঁধের ৬৬৩ মিটার অংশে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ ও মাটি ভরাট করা হয়। এতে সড়কের একপাশে বিশাল খালি জায়গার সৃষ্টি হয়। এ জায়গাটি অবৈধ দখলকারীদের হাত থেকে রক্ষা করতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) পর্যটক ও পথচারীদের বিনোদনের জন্য দৃষ্টিনন্দন আকর্ষণীয় বিনোদন স্পট নির্মাণ করেছে। বর্তমানে যা এ বাঁধটি রাঙামাটির পর্যটন খাতে নতুন মাত্রায় যোগ করেছে।  
চলতি বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার সাতটি সড়কে ছোটখাটো পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটলেও তা তাৎক্ষণিকভাবে মেরামত করা হয়েছে। 
অপরদিকে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ আসামবস্তি-কাপ্তাই সংযোগ সড়ক তৈরি করেছে। পরে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প’-এর আওতায় সড়কটি দুই লেনে উন্নীত করা হয়। এ সড়ক পর্যটকদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ সড়কেও পাহাড়ধস হয়। তবে তা দ্রুত মেরামত করে যানবাহন চলাচল সচল রাখা হয়। এ সড়কেই রয়েছে জনপ্রিয় পর্যটন স্পট বার্গী লেক ভ্যালি, রাইন্যা টুগুন, জুম কিংস, বড়গাঙ। সড়কের বড়াদম নামক স্থানে রয়েছে বৌদ্ধদের  মহাসাধক ও পরিনির্বানপ্রাপ্ত সাধনানন্দ মহাস্থবির (বনভান্তে) জন্মস্থান ও স্মৃতিমন্দির। ২০১৭ সালে  ভয়াবহ পাহাড়ধসের কারণে সড়কটির ব্যাপক ক্ষতি হয়। 
রাঙামাটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইিডি) নির্বাহী প্রকৌশলী আহামদ শফি বলেন, ‘রাঙামাটি শহর থেকে কাপ্তাইয়ে যাওয়ার জন্য এটি হচ্ছে একটি বিকল্প সড়ক। এ সড়কটির কারণে রাঙামাটি থেকে কাপ্তাইয়ের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার কমেছে। এটি সড়ক দিয়ে ভ্রমণ করলে কাপ্তাই হ্রদ ও পাহাড়ের সৌন্দর্য একসঙ্গে উপভোগ করা যায়। বর্তমানে এই সড়ক ঘিরে নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে 


উঠছে, যা রাঙামাটির অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।’ 
সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সুবজ চাকমা বলেন, ‘জেলার ২৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ সাতটি সড়কই যানবাহন চলাচল উপযোগী রয়েছে। এসব সড়কের কোথাও খানাখন্দ নেই। ভারী বৃষ্টিপাতে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কয়েকটি স্থানে ছোট মাটিধ্বস হলেও তা তাৎক্ষণিভাবে মেরামত করা হয়েছে।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ