সরকারী ছাড়পত্র (জিও) না পাওয়ায় শেষ মুহূর্তে চীনে একটি উচ্চশিক্ষা প্রোগ্রামে অংশ গ্রহণ করা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের।

তারা হলেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক হায়দর আলী।

শনিবার (৫ জুলাই) বেলা ১১টায় শাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

আরো পড়ুন:

সিকৃবির প্রধান ফটকের নাম ‘জুলাই ৩৬’

গোবিপ্রবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের বিরুদ্ধে বহিরাগত এনে শোডাউন দেওয়ার অভিযোগ

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.

এসএমএ ফয়েজ চীনের উচ্চশিক্ষা অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধি দলের প্রধান। ২০ সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলে রয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব প্রমুখ।

আগামী ৬ থেকে ১১ জুলাই চীনের কুনমিং, উহান, গঞ্জু প্রদেশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্রমণ ও চুক্তিপত্র  স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে চীন সরকারের শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

গত জুনে প্রতিনিধিদলের সদস্যদের পক্ষ থেকে চীনে যাওয়ার জন্য সরকারি ছাত্রপত্রের জন্য আবেদন করা হয়। গত কয়েকদিনে সবার ছাড়পত্র হলেও ওই দুইজন উপাচার্যের ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। এতে তাদের চীনের উচ্চশিক্ষা প্রোগ্রামে অংশগ্রহণে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। 

এ বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হায়দার আলী জানান, তিনি গত ২৫ জুন আবেদন করেছিলেন। তবে এখনো তার ছাড়পত্র অনুমোদন হয়নি।

শাবিপ্রবির উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “চীনের এই উচ্চশিক্ষা প্রোগ্রামে জয়েন করতে গত ২৩ জুন আবেদন করেছি। এখনো জিও লেটার পাইনি। আমরা অপেক্ষায় আছি। সরকারের অনুমোদন পেলে যাব।”

ছাড়পত্র নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) নুরুন আখতার গনমাধ্যমকে বলেন, “গত বৃহস্পতিবার আমরা সামারি তৈরি করে রেখেছি। আচার্যের কাছ থেকে এখনো অনুমোদন আসেনি। তাই আমরা অনুমোদন দিতে পারছি না।”

ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য ছ ড়পত র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

শাকসু নির্বাচন : দলীয় প্রভাবমুক্ত শিক্ষকদের নির্বাচন কমিশনে রাখার দাবি শিক্ষার্থীদের

দীর্ঘ ২৮ বছর পর সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের (শাকসু) আমেজ ফিরে এসেছে। নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে।

গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে শাকসু নির্বাচনের কথা ভাবছেন। আগামী দুই-তিনদের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার বা আগামীকাল যেকোনো সময় নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা আসতে পারে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে হচ্ছেন, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। অনেকের নামই প্রস্তাব করা হচ্ছে। উপাচার্য নির্বাচন কমিশনারদের নাম ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে।

এদিকে নির্বাচন কমিশন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা মত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, দলান্ধ কাউকে কিংবা এক আদর্শ চর্চাকারী কট্টরপন্থী কেউ যাতে দায়িত্ব না পান। নির্বাচন কমিশন হতে হবে নিরপেক্ষ। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, এমন কাউকেই বেছে নিতে হবে।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আদিল হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশনটা হতে হবে নিরপেক্ষ। কমিশনাররা যেন রাজনৈতিক প্রভাব বা ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা করেন। যাতে প্রত্যেক শিক্ষার্থী মুক্তভাবে তাঁদের প্রতিনিধি বেছে নিতে পারেন। পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী মহসিনা আক্তার বলেন, এমন নির্বাচন কমিশন দরকার, যা ডাকসু, জাকসুর নির্বাচনের অসংগতিগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি নির্বাচনী মডেল দাঁড় করাবে।

সাবেক সমন্বয়ক দেলোয়ার হোসেন (শিশির) বলেন, ‘আমরা এমন একজন নির্বাচন কমিশনার চাই, যিনি সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকবেন, শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করতে পারবেন এবং প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করবেন। তিনি যেন সাহসের সঙ্গে যেকোনো দুর্নীতি, প্রভাব বা অনিয়মের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারেন।’

আরও পড়ুনশাহজালালে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে: উপাচার্য১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জানতে চাইলে শাবিপ্রবি ছাত্রদলের সভাপতি রাহাত জামান বলেন, নির্বাচন কমিশনারের যাতে রাজনৈতিক পরিচয় না থাকে, শুধু নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয়, সে জন্য কমিশন কাজ করবে।

এ বিষয়ে উপাচার্য এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরীকে একাধিকবার কল দিলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। জানতে চাইলে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক মো. এছাক মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন কমিশনার নিয়ে আলোচনা চলছে। এখনো চূড়ান্ত হয়নি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে যে অসংগতিগুলো তৈরি হয়েছে, সেগুলো যাতে না হয়, সে জন্য কর্মঠ ও যোগ্য ব্যক্তিদের খুঁজছে প্রশাসন। পাশাপাশি ছাত্রসংগঠনগুলোরও যাতে আস্থা থাকে, এমন কাউকেই বেছে নিতে হবে। শিগগিরই নির্বাচন কমিশনারদের নাম ঘোষণা করবেন উপাচার্য।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন সর্বশেষ হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। এর আগে ১৯৯৩ সাল থেকে তিনবার শাকসু নির্বাচন হয়েছে। ২৮ বছর ধরে শাকসু অচল রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাকসু নির্বাচন : দলীয় প্রভাবমুক্ত শিক্ষকদের নির্বাচন কমিশনে রাখার দাবি শিক্ষার্থীদের