আগামী নভেম্বরে হতে যাওয়া নির্বাচনে জয়ী হলে জোহরান মামদানি নিউ ইয়র্ক সিটির প্রথম দক্ষিণ এশীয় মেয়র এবং প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভূত মেয়র হতে পারেন। তবে নির্বাচনের আগেই তাকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু করেছে হিন্দু ডানপন্থীরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সমালোচকরা হচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমর্থকরা, যারা ভারতে সংখ্যালঘুদের অধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত।

যেসব ইস্যুতে মামদানির সমালোচনা করা হচ্ছে সেগুলো মামদানির ধর্মের উপর নির্ভরশীল। ৩৩ বছর বয়সী মামদানি মুসলিম। হিন্দুত্ববাদীরা নিউ ইয়র্কের এই মেয়র প্রার্থীকে ‘জিহাদি’ এবং ‘ইসলামপন্থী’ বলে অভিযুক্ত করেছেন। অন্যরা তাকে হিন্দুবিরোধী এবং ভারতবিরোধী বলেছেন।

ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অফ অর্গানাইজড হেট এর গবেষণা পরিচালক কায়লা বাসেট জানান, মামদানির বিরুদ্ধে আক্রমণ মুসলিম সম্প্রদায়কে আরো বিস্তৃতভাবে আক্রমণ করার একটি মাধ্যম।

তিনি বলেন, “এটি কেবল একজন ব্যক্তির কথা নয়। এটি এমন একটি আখ্যান প্রচারের বিষয়ে যা মুসলিমদের সহজাতভাবে সন্দেহভাজন বা অ-আমেরিকান হিসাবে উপস্থাপন করে।”

এই আখ্যানটি সম্ভাব্যভাবে মামদানির প্রচারণার জন্য পরিণতি ডেকে আনতে পারে। কারণ তিনি নিউ ইয়র্কের ভোটারদের মধ্যে তার সমর্থন বাড়ানোর জন্য কাজ করছেন।

নভেম্বরের ভোটে আরো প্রতিষ্ঠিত নামীদামী ব্যক্তিদের সাথে মামদানির প্রতিযোগিতা হবে। চূড়ান্ত ভোটে তিনি বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের মুখোমুখি হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো এখনো স্বাধীনভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি।

মেয়র পদপ্রার্থী মামদানি এর আগে গাজা এবং ভারতের মতো জায়গাগুলোসহ বিভিন্ন স্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা করেছেন। এই অবস্থান কেবল তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কাছ থেকে নয়, বিদেশ থেকেও তাকে সমালোচনার মুখে ফেলেছে।

উদাহরণস্বরূপ, মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সদস্যরা মামদানির মন্তব্যের নিন্দা এবং মেয়র পদের জন্য তার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

বিজেপির সংসদ সদস্য কঙ্গনা রানাউত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, মামদানিকে ‘ভারতীয় এর তুলনায় চেয়ে বেশি পাকিস্তানি শোনাচ্ছে।’

মামদানির মা পরিচালক মীরা নায়ারের হিন্দু পরিচয়ের দিকে ইঙ্গিত করে কঙ্গনা আরো লিখেছেন, “তার হিন্দু পরিচয় বা রক্তের বংশের যাই হোক না কেন, এখন তিনি হিন্দুত্ববাদকে নিশ্চিহ্ন করতে প্রস্তুত।”

মামদানির প্রাথমিক জয়ের পরপরই ভারতের  বিজেপিপন্থী সংবাদ চ্যানেল, আজতাক দাবি করে, মামদানি ‘ভারতবিরোধী’ এজেন্ডা প্রচারকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে অর্থ পেয়েছেন। সংবাদমাধ্যমটি নিউ ইয়র্ক সিটিতে ক্রমবর্ধমান মুসলিম জনসংখ্যা সম্পর্কেও সতর্ক করে দিয়েছে।

ভারতের বাইরে নিউ জার্সিভিত্তিক ইন্ডিয়ান আমেরিকানস ফর কুওমো’ নিউ ইয়র্ক সিটির উপর দিয়ে একটি ব্যানার উড়ানোর জন্য তিন হাজার ৫৭০ ডলার খরচ করেছে যাতে লেখা ছিল-‘বিশ্বব্যাপী ইন্তিফাদা থেকে নিউ ইয়র্ক সিটিকে বাঁচাও। মামদানিকে প্রত্যাখ্যান করো।’

মামদানির ওপর হিন্দু জাতীয়তাবাদী এবং মোদির সমর্থকদের ক্ষিপ্ত হওয়ার কারণ হচ্ছে, নিউ ইয়র্ক সিটির এই মেয়রপ্রার্থী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কট্টর সমালোচক। অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের স্থানে হিন্দু মন্দির নির্মাণের প্রতিবাদে ২০২০ সালে মামদানি টাইমস স্কয়ারে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। ২০২৩ সালে, মামদানি মোদির নিউ ইয়র্ক সিটি সফরের আগে কারাবন্দী অধিকারকর্মী উমর খালিদের লেখা নোট উচ্চস্বরে পড়ে শুনিয়েছিলেন। মে মাসে মেয়র প্রার্থীদের একটি অনুষ্ঠানে মামদানিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছি, মোদি যদি আবার শহর পরিদর্শন করেন তবে তিনি কি তারসাথে দেখা করবেন? জবাবে মামদানি জানিয়েছিলেন, তিনি মোদির সাথে দেখা করবেন না।

(আল-জাজিরা থেকে সংক্ষেপিত)

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম দ র সমর ম মদ ন র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমস্যা কী, সমাধান কোথায়: শুনুন তামিমের মুখে

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? কোন বিষয়টি সবার আগে সমাধান করা উচিত?

দুটি প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই অনেক কথাই বলবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কারও বিষয়টি ভালো জানার কথা। যেমন তামিম ইকবাল। প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্র তামিমের সামনে দুটি প্রশ্ন রেখেছিলেন। তামিমের উত্তর, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের ফ্যাসিলিটিজ (অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধা) নাই।’

প্রথম আলোর কার্যালয়ে উৎপল শুভ্রকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে আড্ডার মেজাজে তামিম বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। নিজের ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য—এসব নিয়েও বেশ খোলামেলা কথা বলেন সাবেক এই ওপেনার।

আলাপচারিতার একপর্যায়েই বাংলাদেশ ক্রিকেটে এ মুহূর্তের সমস্যার প্রসঙ্গ উঠেছিল। অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধার অভাবকে সামনে টেনে এনে তামিম বলেছেন, ‘একটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার হয় কিংবা বাংলাদেশের মতো দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার একটি (ক্রিকেট), যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, তার আশপাশেও নেই। পৃথিবীর তৃতীয়, চতুর্থ ধনী বোর্ডের যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, আমরা এর আশপাশেও নেই।’

তামিম বিষয়টি ভালোভাবে ব্যাখ্যা করলেন, ‘ক্রিকেট দলের প্রতি ভক্তদের যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণের জন্য যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার, আমরা তার আশপাশেও নেই। আপনি মাঝারি মানের ক্রিকেটার হতে পারেন কিংবা মাঝারি মানের ব্যাটসম্যান হতে পারেন, সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে কিন্তু আপনি মাঝারি মান থেকে দুই ধাপ ওপরে উঠতে পারবেন।’

মুশফিকুর রহিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ