পাকিস্তানি মডেল-অভিনেত্রী হুমায়রা আজগর আলীর পচাগলা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) করাচির ডিফেন্স হাউজিং অথরিটির একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে অভিনেত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন এ খবর প্রকাশ করেছে।
এক বিবৃতিতে পুলিশ জানিয়েছে, ইত্তেহাদ কমার্শিয়ালের একটি ফ্ল্যাট থেকে হুমায়রা আজগর আলীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদেহটি ৩২ বছর বয়সি অভিনেত্রী হুমায়রার বলে শনাক্ত করেছে পুলিশ। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে মারা গিয়েছেন তিনি।
ডিআইজি সৈয়দ আসাদ রাজা ডনকে বলেন, “আদালতের নির্দেশে গিজরি পুলিশ অ্যাপার্টমেন্টটি খালি করার জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে পুলিশ দরজায় কড়া নাড়লে কেউ সাড়া দেয়নি। এরপর তালা ভেঙে পুলিশ অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশ করে এবং তার মৃতদেহটি দেখতে পায়। এ অ্যাপার্টমেন্টে ভাড়া থাকতেন অভিনেত্রী হুমায়রা। প্রমাণ সংগ্রহের জন্য পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিটকে ডাকা হয়।”
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশ সফরে পাকিস্তান দল ঘোষণা, নেই একাধিক তারকা
পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টিপাত, ১৯ জনের মৃত্যু
হুমায়রা আজগর আলীর মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। এ বিষয়ে ডিআইজি রাজা বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আইনি প্রক্রিয়ার জন্য মৃতদেহটি জিন্নাহ পোস্টগ্র্যাজুয়েট মেডিকেল সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।”
মঙ্গলবার রাতে পোস্ট মর্টেম সম্পন্ন হয় হুমায়রা আজগর আলী। এরপর পুলিশ সার্জন ডা.
এসএসপি মাহজুর আলী ডনকে জানান, হুমায়রা আজগর আলী একাই অ্যাপার্টমেন্টটি ভাড়া নেন। ২০২৪ সাল থেকে বাড়ির মালিককে ভাড়া দেন না হুমায়রা। এরপর বাসা খালি করার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন বাড়ির মালিক।
পুলিশের ধারণা, এটা কোনো হত্যাকাণ্ড নয়। কারণ অ্যাপার্টমেন্টের লোহার গেট, কাঠের দরজা, ব্যালকনির দরজা লক করা ছিল। দরজা ভেঙে পুলিশ সেখানে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। তবে ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত পুলিশ কোনো সিদ্ধান্তে যাবে না বলে জানিয়েছেন এসএসপি আলী।
টিভি রিয়েলিটি শো ‘তামাশা ঘরে’-এ অংশ নিয়ে আলোচনায় আসেন হুমায়রা। ২০১৫ সালে তার অভিনীত ‘জালাইবি’ সিনেমা মুক্তি পায়। এ সিনেমা তাকে খ্যাতি এনে দেয়।
ঢাকা/শান্ত
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র অ য প র টম ন ট র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
চন্দ্র কেন কম আলো দেয়
আদিকালের কথা। সূর্য তার সন্তানসন্ততি নিয়ে আকাশে বিচরণ করত। সূর্যের ছিল প্রখর তাপ। তার সন্তানদের তাপও কম ছিল না। একেকজন ছিল সূর্যের মতোই তেজোদ্দীপ্ত। পিতা ও পুত্ররা এক হয়ে আকাশে উঠত। ফলে দিনের বেলায় প্রখর তাপে পৃথিবীর সবাই অতিষ্ঠ হয়ে উঠল।
এত তাপে মানুষ চলাফেরা করতে পারত না। অন্যান্য প্রাণী ও গাছপালাদের জীবনও যায় যায়।
সূর্যের তাপ থেকে নিজেদের বাঁচাতে সবাই ছুটে গেল সূর্যের বোন চন্দ্রের কাছে। সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনল সে। এরপর চন্দ্র এক বুদ্ধি আঁটল।
কী সেই বুদ্ধি?
চন্দ্র জানত তার ভাই সূর্য কী কী খেতে পছন্দ করে। একদিন সে খরগোশের মাংস রান্না করে সূর্যকে দাওয়াত করে।
সূর্যের ছিল প্রখর তাপ। তার সন্তানদের তাপও কম ছিল না। একেকজন ছিল সূর্যের মতোই তেজোদ্দীপ্ত। পিতা ও পুত্ররা এক হয়ে আকাশে উঠত। ফলে দিনের বেলায় প্রখর তাপে পৃথিবীর সবাই অতিষ্ঠ হয়ে উঠল।সূর্য আদরের বোন চন্দ্রের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়।
ছোট বোন ভাইকে যত্ন করে খরগোশের মাংস খাওয়াল।
তা খেয়ে সূর্য তো আত্মহারা।
এমন সুস্বাদু মাংস সে আর কখনোই খায়নি। সূর্য ভাবতে থাকল, এটা কিসের মাংস? কিন্তু বোন থেকে কীভাবে সে জানবে এর উত্তর!
বোনকে সে আড়ালে ডেকে নিল। এরপর জিজ্ঞাসা করল, ‘চন্দ্র, তোমার রান্নার তুলনা হয় না। কিন্তু এমন মজাদার মাংস আমি কখনো খাইনি। এটা কিসের মাংস?’
চন্দ্র ভাই সূর্যকে উত্তরে বলে, ‘তুমি হয়তো বিশ্বাস করবে না, এ আমারই সন্তানদের মাংস।’
খানিক গম্ভীর হয়ে সে সূর্যকে আরও বলে, ‘তোমার সন্তানদের মাংস এর চেয়েও সুস্বাদু হবে। তুমিও আমার মতো তাদের মাংস খেয়ে দেখতে পারো।’
প্রিয় বোন চন্দ্রের কথাগুলো সূর্যের মনে গেঁথে গেল। সূর্য বাড়ি ফিরেই বোনের কথায় একে একে সব সন্তানকে রান্না করে খেয়ে ফেলল।
সূর্যের সন্তানেরা না থাকায় পৃথিবীতে তাপ গেল কমে।
এভাবে চন্দ্রের বুদ্ধিতে রক্ষা পেল গোটা পৃথিবী।
আনন্দে কাটতে থাকল মানুষ ও অন্য প্রাণীদের জীবন।
কিন্তু পালিয়ে গিয়ে বেঁচে রইল একটি তারা। তার নাম—‘শুকতারা’।
আজও সে আকাশে জ্বলজ্বল করে।
গারো বা মান্দি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীরা মনে করে, চন্দ্র ও সূর্য ভাই-বোন।
কিন্তু চন্দ্র কেন কম আলো দেয়?
চন্দ্র ছিল খুবই সুন্দরী। ভাই সূর্য থেকে অনেক বেশি উজ্জ্বলও। তার দিকে কেউ তাকাতেও পারত না। কে বেশি সুন্দর, এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হতো। একজন আরেকজনের পেছনে লেগেই থাকত।
সূর্য বোন চন্দ্রের রূপ–লাবণ্যে হিংসা করতে থাকে। ফলে দুই ভাই–বোনে ঝগড়া চলত নিত্যদিন।
তাদের মা দুজনকেই থামাতেন। রাগ হতেন। ঝগড়া নয়, ভাই-বোনকে মিলেমিশে থাকতে বলতেন।
একদিন ঘটল এক ঘটনা।
চন্দ্র-সূর্যকে বাড়িতে রেখে জরুরি কাজে মা গেলেন বাইরে। সে সুযোগে ভাই–বোনে শুরু হয় তুমুল ঝগড়া। সে ঝগড়া এক সময় রূপ নেয় হাতাহাতিতে। প্রচণ্ড ক্ষেপে যায় সূর্য। মুঠিভরা কাদা নিয়ে সে বোন চন্দ্রের মুখে তা লেপ্টে দেয়।চন্দ্র-সূর্যকে বাড়িতে রেখে জরুরি কাজে মা গেলেন বাইরে। সে সুযোগে ভাই–বোনে শুরু হয় তুমুল ঝগড়া। সে ঝগড়া এক সময় রূপ নেয় হাতাহাতিতে। প্রচণ্ড ক্ষেপে যায় সূর্য। মুঠিভরা কাদা নিয়ে সে বোন চন্দ্রের মুখে তা লেপ্টে দেয়।
বোনও হয় উত্তেজিত।
ভাই সূর্যকে শায়েস্তা করতে হবে।
তাই মুখের কাদা না ধুয়ে মাকে দেখাতে হবে। সে ওই অবস্থাতেই মায়ের অপেক্ষায় থাকে। বাড়িতে পা রেখেই মা বুঝে যান সবকিছু।
চন্দ্রের কাদামাখা মুখ দেখে তিনি অবাকও হন।
আরও পড়ুননদী মা তুইচংগী১২ নভেম্বর ২০২৫চন্দ্র মুখ দেখিয়ে ভাই সূর্যের বিরুদ্ধে মায়ের কাছে নালিশ দেয়।
কিন্তু মা চন্দ্রের মনোভাব বুঝতে পারেন।
সব শুনে মা চন্দ্রের প্রতি সদয় হন না।
বরং তার এমন আচরণে রাগান্বিত হন। মিলেমিশে না থাকায় মা ক্ষেপে যান।
তিনি মেয়ে চন্দ্রকে বলেন, চিরদিনই তোমার মুখ যেন এমনি কর্দমাক্ত থাকে।
মান্দি বা গারোরা বিশ্বাস করে, সে থেকেই চন্দ্রের মুখে কলঙ্ক লাগে এবং সূর্যের চেয়ে কম আলোর অধিকারিণী হয়।