কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহারে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা দরকার
Published: 8th, August 2025 GMT
চোখের সমস্যায় বাড়ছে কন্ট্যাক্ট লেন্সের ব্যবহার। দৃষ্টিশক্তিজনিত দুর্বলতার ক্ষেত্রে চশমার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে এই লেন্স। এটি তৈরি করা হয় পলিমিথাইল ইথা ক্রাইলেট অথবা সিলিকন হাইড্রোজেল দিয়ে।
কন্ট্যাক্ট লেন্স আয়তনে চোখের কালো অংশের চেয়ে একটু বড় হয়। এর বক্রতা এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়, যেন কর্নিয়ার ওপর প্রতিস্থাপন করলে খুব সহজেই চোখের উপরিভাগের বক্রতার সঙ্গে মিলে যায়। ফলে বাইরে থেকে দেখলে কন্ট্যাক্ট লেন্সের উপস্থিতি বোঝা যায় না। আবার ব্যবহারকারীও সাধারণত কোনো অস্বস্তি বোধ করেন না। তবে কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহারে যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।
ধরন ও ব্যবহারবিধি অনুযায়ী কন্ট্যাক্ট লেন্সকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন সফট লেন্স ও রিজিড গ্যাস পারমিয়েবল লেন্স। সফট লেন্স প্লাস্টিক–জাতীয় উপাদানে তৈরি। এর ব্যবহার বেশ স্বস্তিদায়ক। তবে সহজেই জীবাণু সংক্রমিত হতে পারে। অপরদিকে রিজিড লেন্স দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। তবে চোখের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। কর্নিয়ার সমস্যা—এস্টিগমাটিজমে এটি বেশ কার্যকর।
ব্যবহারবিধি অনুযায়ী কন্ট্যাক্ট লেন্স আবার দুই ধরনের হয়। একটি ‘ডেইলি ওয়্যার’ বা দিন শেষে খুলে ফেলতে হয়। অন্যটি ‘এক্সটেন্ডেড ওয়্যার’ বা একনাগাড়ে ৭ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে টানা বেশি দিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ব্যবহারের নিয়ম
প্রথমে হাত সাবান ও পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে-মুছে নিতে হবে।
কন্ট্যাক্ট লেন্সের উপরিভাগ ও ভেতরের অংশ ঠিক করে নিতে হবে।
চোখের দুটি পাতা এক হাতের আঙুলের সাহায্যে যত্ন করে মেলে ধরতে হবে। তারপর অন্য হাতের আঙুলের ডগায় কন্ট্যাক্ট লেন্সটি রেখে আস্তে করে চোখের উপরিভাগে স্পর্শ করিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। কন্ট্যাক্ট লেন্সটি নিজে থেকে যথাস্থানে থিতিয়ে যাওয়ার পর চোখের পাতা হালকা করে ছেড়ে দিতে হবে।
খোলার সময় লেন্সটিকে প্রথমে কালো অংশ থেকে সাদা অংশে চাপ দিয়ে সরিয়ে নিতে হবে। তারপর আঙুলে চেপে ধরে বের করে আনতে হবে।
কন্ট্যাক্ট লেন্স পরিষ্কার করতে নির্ধারিত সলিউশন ব্যবহার করতে হবে। পানি দিয়ে লেন্স পরিষ্কার করা যাবে না।
প্রতিদিন পরিষ্কার সলিউশনে লেন্সটিকে চুবিয়ে রাখতে হবে এবং ব্যবহার করার আগে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
কখনোই লেন্স পরে ঘুমানো যাবে না।
সাধারণত মেকআপ করার আগে লেন্স পরে নিতে হবে।
জটিলতা
কারও কারও এলার্জির কারণ হতে পারে।
কর্নিয়ায় ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে। ফলে চোখ লাল, তীব্র ব্যথা, পানি ঝরা, তাকাতে বা চোখ মেলতে অসুবিধা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। এ অবস্থায় দ্রুত কন্ট্যাক্ট লেন্স খুলে ফেলতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
চোখে সংক্রমণ হতে পারে। সাধারণত মেয়াদোত্তীর্ণ লেন্স বা সলিউশন ব্যবহারে এই সমস্যা দেখা দেয়।
ড্রাই আই বা চোখে শুষ্কভাব দেখা দিতে পারে।
সতর্কতা
সাধারণ কন্ট্যাক্ট লেন্স কয়েক ঘণ্টা পর খুলে ফেলতে হয়।
লেন্স খুলে কনটেইনারে রাখার সময় খেয়াল করতে হবে, যেন সেটি সলিউশনে ডুবে থাকে। অন্যথায় লেন্স ফেটে যেতে পারে।
লেন্স ফেটে গেলে বা লেন্সে দানা পড়ে থাকলে সেটি কোনোভাবেই ব্যবহার করা যাবে না।
মেয়াদোত্তীর্ণ লেন্স বা সলিউশন ব্যবহার করা যাবে না।
চোখ শুষ্ক থাকলে, চোখ উঠলে বা চোখে কোনো ধরনের সমস্যা থাকলে কন্ট্যাক্ট লেন্স পরিহার করতে হবে।
অধ্যাপক ডা.
মো. ছায়েদুল হক, চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, ভাইস প্রিন্সিপাল, মার্কস মেডিকেল কলেজ, মিরপুর, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর র ব যবহ র ন ব যবহ র পর ষ ক র ল ন স পর সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
নাটোরে প্রাইভেটকারের চালককে গলা কেটে হত্যা
নাটোরের লালপুরে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে এক প্রাইভেটকারের চালককে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
নিহত সাইদুর সাইদুর রহমান কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বামনপাড়া গ্রামের মৃত আলতাব হোসেনের ছেলে।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুজ্জামান জানিয়েছেন, একটি প্রাইভেটকার কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়ার দিকে যাচ্ছিল। পথে লালপুর উপজেলার গোপালপুর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস হাই স্কুলের সামনে চালকের গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে দুর্বৃত্তরা। রাস্তার পাশে তার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ এসে চালকের মরদেহ এবং প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে একটি ছুরি উদ্ধার করে।
ওসি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রাইভেটকারের ভেতরে থাকা যাত্রীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ইফতে খায়ের আলম জানিয়েছেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। চালকের লাশ উদ্ধার করে নাটোর সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/আরিফুল/রফিক