ছয় মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকায় শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আরও দুই কোম্পানিকে দুর্বল মানের কোম্পানি হিসেবে জেড শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) আজ সোমবার থেকে এই দুটি কোম্পানিকে জেড শ্রেণিভুক্ত করা হয়।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, নতুন এই দুটি কোম্পানি জেড শ্রেণিভুক্ত হওয়ায় শেয়ারবাজারে এখন দুর্বল মানের জেড শ্রেণিভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০টিতে। তাতে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রায় ২৮ শতাংশ কোম্পানি দুর্বল মানের কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। ঢাকার শেয়ারবাজারে বর্তমানে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন শ্রেণির মোট কোম্পানির সংখ্যা ৩৬০। তার মধ্যে ১০০টি এখন জেড শ্রেণিভুক্ত।

এদিকে আজ নতুন করে যে দুটি কোম্পানি জেড শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে, সেগুলো হলো বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি বারাকা পাওয়ার ও বস্ত্র খাতের কোম্পানি জাহিন স্পিনিং। এই কোম্পানি দুটির উৎপাদন ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির উৎপাদন টানা ছয় মাসের বেশি বন্ধ থাকলে সেই কোম্পানি জেড শ্রেণিভুক্ত হবে।

কোম্পানি দুটি জেড শ্রেণিভুক্ত হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী এগুলোর শেয়ার কেনাবেচায় ঋণ–সুবিধাও বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ, জেড শ্রেণির শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে কোনো ঋণ–সুবিধা পান না বিনিয়োগকারীরা। এ ছাড়া জেড শ্রেণির শেয়ার লেনদেন নিষ্পত্তিতে তিন কার্যদিবস সময় লাগে। এ ও বি শ্রেণির শেয়ারের লেনদেন নিষ্পত্তি হয় দুই কার্যদিবসে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বারাকা পাওয়ারের ৩০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি ৭০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা ব্যক্তিশ্রেণি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর হাতে। সর্বশেষ কোম্পানিটি ২০২৪ সালের জুনে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য সাড়ে ৩ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। আর গত জানুয়ারি–মার্চ প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস ছিল ২৬ পয়সা। জেড শ্রেণিভুক্ত হওয়ার খবরে আজ ঢাকার বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ দরপতন হয়েছে। এদিন কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১ টাকা ১০ পয়সা বা ১০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯ টাকা ৯০ পয়সায়।

বস্ত্র খাতের জেড শ্রেণিভুক্ত কোম্পানি জাহিন স্পিনিং শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০১৫ সালে। কোম্পানিটির শেয়ারের ৩১ শতাংশ রয়েছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি ৬৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের জুনে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। গত জানুয়ারি–মার্চ প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ১১ পয়সা লোকসান করেছে। আজ জেড শ্রেণিভুক্ত হওয়ার খবরে কোম্পানিটির শেয়ারের দরপতন হয়। এদিন কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ৬০ পয়সা বা প্রায় ৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ২০ পয়সায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ড শ র ণ ভ ক ত হওয় শ য় রব জ র

এছাড়াও পড়ুন:

পদ্মা অয়েলের মুনাফা বেড়েছে ৩৮ শতাংশ

সরকারি তেল কোম্পানি পদ্মা অয়েলের মুনাফা এক বছরের ব্যবধানে ৩৮ শতাংশ বেড়েছে। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬৩ কোটি টাকায়। তার আগে অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কোম্পানিটির মুনাফা ছিল ৪০৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে পদ্মা অয়েলের মুনাফা ১৫৪ কোটি টাকা বা ৩৮ শতাংশ বেড়েছে।

গত বুধবার সরকারি এই কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার আর্থিক প্রতিবেদনের কিছু তথ্য স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে কোম্পানিটি। একই সভায় গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারধারীদের ১৬০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদানেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাতে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের জন্য একজন বিনিয়োগকারীকে ১৬ টাকা লভ্যাংশ দেওয়া হবে। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

কোম্পানিটির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের জন্য কোম্পানিটি ১৫৭ কোটি টাকা লভ্যাংশবাবদ বিতরণ করবে। ২৭ নভেম্বর রেকর্ড তারিখে যাঁদের হাতে কোম্পানিটির শেয়ার থাকবে, তাঁরা ঘোষিত এই লভ্যাংশ পাবেন।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালের পর চলতি বছরই কোম্পানিটি শেয়ারধারীদের সর্বোচ্চ লভ্যাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০০৯ সালে কোম্পানিটি সর্বোচ্চ ২০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। এরপর প্রায় ১৬ বছর পর এবার ১৬০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের ঘোষণা দিলেও গতকাল ঢাকার বাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। এদিন পদ্মা অয়েলের প্রতিটি শেয়ারের দাম ১ টাকা কমে দাঁড়ায় ১৯৪ টাকা ৩০ পয়সায়।

পদ্মা অয়েলের বুধবারের সভায় গত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার পাশাপাশি চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকেরও আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের একই প্রান্তিকের চেয়ে চলতি বছরের একই প্রান্তিকে কোম্পানিটির মুনাফা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে কোম্পানিটি ১৫৮ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১২৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা ৩৪ কোটি টাকা বা প্রায় সাড়ে ২৭ শতাংশ বেড়েছে।

সরকারি কোম্পানি পদ্মা অয়েল ১৯৭৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এটির শেয়ারের মালিকানার ৫০ শতাংশ রয়েছে সরকারের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৩১ শতাংশ, ১৭ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে আর বাকি শেয়ার বিদেশি ও উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হঠাৎ বেড়েছে পেঁয়াজের দাম, কারণ কী
  • নভেম্বরের প্রথম পাঁচ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ৫৮ কোটি ডলার
  • পদ্মা অয়েলের মুনাফা বেড়েছে ৩৮ শতাংশ
  • ব্যবসা তিন গুণ, মুনাফায়ও বাটাকে ছাড়িয়ে অ্যাপেক্স