সংগীতশিল্পী তাহসান খান সম্প্রতি সংগীতাঙ্গন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এতে তাঁর ভক্ত ও সহকর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কেউ এই বিদায় মেনে নিতে পারছেন না। কেউ জানাচ্ছেন প্রিয় তারকাকে শুভেচ্ছা। তাহসানের সংগীতজীবন থেকে বিদায়ে ফেসবুক প্রতিক্রিয়ায় অভিমানী হয়ে ধরা দিলেন অভিনেত্রী প্রসূন আজাদ।

প্রিয় তারকার কথা স্মরণ করে শৈশবে ফিরেছেন প্রসূন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি বহু আগে থেকে আপনার ভক্ত। এই জমানার ফ‍্যান নই। যে সময়ে টিফিনের টাকা জমিয়ে রাখতাম আপনার অফবিট ক্যাসেট, সিডিটা কিনব বলে, আমি সেই সময়ের ফ্যান। যার স্কুল ব‍্যাগের সাদা মার্কারে লেখা থাকত “তাহসান‍ প্লাস প্রসূন”। আমি আপনার তেমন একজন ভক্ত।’

পল্টন পুলিশ কোয়াটারের দেয়ালজুড়ে লেখা ছিল তাহসান। শত হাজার বিচার সালিস সহ্য করে লেখাগুলো মুছতে দিইনি আমি। আমি আপনার সেই ফ‍্যান।তাহসান খান। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

৫ বছরে খেলনা রপ্তানি ৮ গুণ বাড়তে পারে

খেলনা রপ্তানি আগামী পাঁচ বছরে আট গুণের বেশি বাড়তে পারে। ২০২২–২৩ অর্থবছরে বিশ্বের ৮৮টি দেশে খেলনা রপ্তানি হয়েছে সাড়ে সাত কোটি ডলারের বেশি। ২০৩০ সালে এই রপ্তানির আকার বেড়ে দাঁড়াতে পারে প্রায় ৪৭ কোটি ডলার। ফলে বৈশ্বিক খেলনা রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান হবে ২৮তম।

আজ মঙ্গলবার ‘খেলনা উৎপাদন শিল্পে উদ্ভাবন ও রপ্তানির সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধে খেলনা রপ্তানির এমন সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) সভাপতি শামীম আহমেদ। রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) মিলনায়তনে এই আলোচনা সভা হয়। আলোচনা সভার আয়োজন করে ডিসিসিআই। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিসিসিআইয়ের সভাপতি তাসকীন আহমেদ।

মূল প্রবন্ধে যা আছে

মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ২৭ কোটি ডলারের বেশি প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি হয়েছে। অন্যদিকে এই খাতে প্রচ্ছন্ন রপ্তানি হয়েছে ১২০ কোটি ডলার। প্লাস্টিক শিল্পের দেশীয় বাজারের আকার এখন ৪০ হাজার কোটি টাকা। খাতটি সরকারকে বছরে ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব দিয়েছে। দেশে প্লাস্টিক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার, যার অধিকাংশই ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই)। এর মধ্যে খেলনা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ২৫০।

মূল প্রবন্ধে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের খেলনাশিল্পে সম্ভাবনা থাকলেও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। মান নিয়ন্ত্রণের সমস্যা, দুর্বল অবকাঠামো ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগের ঘাটতি আছে। এর সঙ্গে খেলনাশিল্পে ছাঁচ ও নকশা উন্নয়নের অভাব আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশকে কঠিন করছে।

এর আগে রপ্তানিশিল্পে বৈচিত্র্য আনতে হবে মন্তব্য করে স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআইয়ের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, ২০৩২ সালের মধ্যে বিশ্বের খেলনা বাজারের আকার দাঁড়াবে ১৫০ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে বিশ্বের খেলনা বাজারের ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে চীন। তবে মজুরি বেড়ে যাওয়ায় তারা ধীরে ধীরে নিম্নমানের খেলনা উৎপাদন থেকে সরে আসছে। ফলে বাংলাদেশের জন্য তৈরি হচ্ছে নতুন সুযোগ। বর্তমানে দেশে এই খাতে বিনিয়োগ ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০৩০ সালের মধ্যে এই বিনিয়োগ দ্বিগুণ হতে পারে।

খেলনা রপ্তানিতে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

অনুষ্ঠানে খেলনা তৈরি করে, এমন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।

রেডমিন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘খেলনা রপ্তানির জন্য আমাদের আলাদা বাজার চিহ্নিত করতে হবে। দেশে তৈরি কিছু পণ্য কম মানের হলেও বিক্রি করা যায়। তবে বিশ্ববাজারে পণ্যের মান সর্বোচ্চ রাখতে হবে।’

গোল্ডেন সন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেলাল আহমেদ বলেন, ‘২০০৫ সালে এনবিআরের কাছে প্লাস্টিক খেলনার জন্য বন্ড লাইসেন্স চেয়েছিলাম। প্লাস্টিকের তৈরি খেলনার কোনো নীতি নেই বলে আমাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এখনো খেলনাশিল্প নিয়ে কোনো আলাদা নীতিমালা নেই। আমাকে প্রচ্ছন্ন রপ্তানির লাইসেন্স নিতে বলা হয়। আমি আজও প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারক।’

খেলনা রপ্তানিতে ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন প্রিমিয়াফ্লেক্স প্লাস্টিক লিমিটেডের উপনির্বাহী পরিচালক আনিসুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা ছাঁচ ও নকশার প্রতি বেশি মনোযোগ দিতে চাই। স্থানীয় ছাঁচ যেভাবে তৈরি হচ্ছে, তা মানসম্পন্ন করছে না।’

পেটেন্ট, শিল্প–নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের পেটেন্ট ও শিল্প–নকশা বিভাগের পরিচালক অশোক কুমার রায় বলেন, স্বত্ব ও মেধাস্বত্বের বিষয়ে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর আগ্রহ বেশি দেখা যায়। স্বত্ব ও ট্রেডমার্ক ব্যবস্থা স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য নিরাপত্তার বলয় তৈরি করবে। এর ফলে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক নতুন বাজারে দেশের প্রতিষ্ঠান সুযোগ পাবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মুহাম্মদ মুবিনুল কবীর বলেন, ‘সরকার কিছু নীতিগত সহায়তা দেবে, তবে মান, প্রযুক্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন শিল্পোদ্যোক্তাদের নিজেদের করতে হবে। চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হলে আমাদের আরও শক্তিশালী হতে হবে।’

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের যুগ্ম প্রধান মামুন–উর–রশীদ আসকারী জানান, সরকার জাপান, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা করছে। রপ্তানিমুখী খেলনাশিল্পকে এসব বাজারে রপ্তানির সুযোগ তৈরি করতে হবে। এই শিল্পে রপ্তানি শুল্ক ও সম্পূরক শুল্ক কমানোর প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ