রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সহ-উপাচার্য, প্রক্টর, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। সংগঠনটি বলছে, ছাত্র নামক সন্ত্রাসীদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ (পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন) থাকবে।

সোমবার রাতে রাবির জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক মো.

আবদুল আলিম এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মাদ আমীরুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে রাবির সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) দাপ্তরিক কাজ শেষে দুপুরের খাবারের জন্য বাসায় যাওয়ার জন্য গাড়িতে ওঠেন। এ অবস্থায় কতিপয় ছাত্র তাঁকে গাড়ি থেকে জোরপূর্বক নামিয়ে গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেয় ও অশালীন উক্তি করে। এরপর তিনি হেঁটে তাঁর বাসভবনে ঢুকতে গেলে প্রধান ফটকে তারা তালা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে সহ-উপাচার্য জুবেরী ভবনের দিকে যেতে চাইলে এই ছাত্র নামক সন্ত্রাসীরা তাঁকেসহ প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর বর্বরোচিত হামলা করে। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন কর্মসূচি চলমান রয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার বেলা ১১টায় শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা ‘সন্ত্রাসীদের’ বহিষ্কার এবং ক্যাম্পাসের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা ও শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জোরালো দাবি জানান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

রাবি উপ-উপাচার্যসহ শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ অন্যান্য শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর হওয়া হামলার প্রতিবাদ ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এই কর্মসূচি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আরো পড়ুন:

বিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় জাবির ৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থী

হাবিপ্রবিতে ঘুষের অভিযোগে দুদকের অভিযান

শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের দাবি, শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) যারা শিক্ষকের গায়ে হাত দিয়েছে তাদের বহিষ্কার করতে হবে। তাদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা (পোষ্য কোটা) নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা রক্ষায় যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবেন বলেও জানান তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল আলিম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও কর্মকর্তা-শিক্ষকদের ওপর সাম্প্রতিক বর্বরোচিত হামলাকে আমরা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখি। এমন জঘন্য কর্মকাণ্ড কোনো আদর্শবান শিক্ষার্থীর কাজ হতে পারে না। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা এবং ছাত্রত্ব বাতিলসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন।”

অফিসার্স সমিতির সভাপতি মুক্তার হোসেন বলেন, “উপ-উপাচার্যহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দের উপর যে ন্যাক্কারজনক হামলা হয়েছে, তেমন নিদর্শন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে আগে দেখা যায়নি। যারা এ কার্যকলাপে জড়িত, তাদের ছাত্রত্ব অবিলম্বে বাতিল করা হোক এবং তারা প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করুক। আমরা প্রশাসনের দ্রুত ন্যায্য বিচার প্রক্রিয়া চালানোর দাবি জানাই। যদি তা না হয়, আমরা সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নেওয়ার দিকে যেতে বাধ্য হবো।”

এর আগে, রাবিতে কর্মরতদের সন্তানদের ভর্তির জন্য আগে থেকেই ৪ শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি পোষ্য কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। এরপর থেকেই শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পোষ্য কোটাকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দাবি করে একের পর এক আন্দোলন শুরু করেন।

সর্বশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বর এক চিঠিতে ১৮ তারিখের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দেন তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে জরুরি অ্যাকাডেমিক কমিটির সভা ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সভায় ১০ শর্তে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এর বিরুদ্ধে আবার টানা আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মাঈন উদ্দিনসহ প্রশাসনে থাকা তিনজন কর্মকর্তা জুবেরী ভবনে শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছিত হন। পরে জুবেরী ভবনে উপ-উপাচার্যসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে সেখানে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করতে থাকেন। রাতে জুবেরী ভবনের সামনে থেকে অবরোধ উঠিয়ে নিয়ে শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হন। পরে গভীর রাতে হল থেকে বের হয়ে এসে ছাত্রীরাও তাদের সঙ্গে যোগ দেন। তারা মাঝরাত পর্যন্ত উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

পরে উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব মধ্যরাতে বাসার প্রধান ফটকের সামনে এসে ঘোষণা দেন, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় ভর্তি আপাতত স্থগিত। এ নিয়ে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শনিবার রাতেই কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ঘোষণা অনুযায়ী রবিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এদিন তারা ঘোষণা দেন, প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধায় সন্তানদের ভর্তির সুযোগ না দিলে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) থেকে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাচ্ছেন তারা। তবে ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রাকসু নির্বাচন এ কর্মসূচির বাইরে থাকবে।

এ ঘোষণা পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত আছে।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহীসহ ১৪ জনের নামে মামলা, গ্রেপ্তার ১
  • রংপুরে সাংবাদিককে হেনস্থার প্রতিবাদে মানববন্ধন, থানায় মামলা
  • ভাঙ্গায় সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • রাবি উপ-উপাচার্যসহ শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • সহ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • রাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা
  • রূপগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে অভিভাবকদের মানববন্ধন
  • পাবনা-১ আসন পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন
  • অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মানবব