নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক সেজে সাবস্টেশনে ডাকাতি: ৯ জন গ্রেপ্তার, অর্ধকোটি টাকার মালামাল উদ্ধার
Published: 23rd, September 2025 GMT
শ্রমিকের পোশাক পরে তিন ব্যক্তি ঢুকে পড়েন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পিলকুনি এলাকায় ডিপিডিসির নির্মাণাধীন বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে। এরপর অস্ত্রের মুখে নিরাপত্তাপ্রহরীদের হাত-পা বেঁধে ফেলেন। এ সময় আরও ১৫-২০ জন ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর তাঁরা সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে লুটপাট চালান। একটি ট্রাকে তুলে নিয়ে যান প্রায় ৬৫ লাখ টাকার মালামাল।
গত রোববার রাতের এই ঘটনার পর সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর ডেমরা, সারুলিয়া ও ফতুল্লায় পৃথক অভিযান চালায় র্যাব-১১। এতে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় সাবস্টেশনের অর্ধকোটি টাকার বৈদ্যুতিক মালামাল ও দেশীয় অস্ত্র।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে র্যাব-১১ ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১১-এর অধিনায়ক লে.
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. লিটন (৩৭), আক্তার হোসেন (৪৪), মো. রোমান (৩২), মো. রফিকুল (২৮), মো. সাইদুল (৩১), মো. সাগর মুন্সী (৩৮), মো. আরিফ (২৬), মো. রিয়াজ (৩৮) ও মো. শহীদুল (৪০)। তাঁদের বাড়ি রাজধানীর ডেমরা, যাত্রাবাড়ী এবং নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার সামাদনগর এলাকায়।
লে. কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন বলেন, প্রথমে শ্রমিকের পোশাক পরা তিনজন ডাকাত ভেতরে ঢুকে নিরাপত্তাকর্মী আবদুল কুদ্দুসকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলেন। এরপর আরও ১৫-২০ জন ডাকাত ভেতরে ঢুকে অন্য নিরাপত্তাকর্মীদেরও মারধর করে হাত-পা বেঁধে রাখেন। রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত তাঁরা লুটপাট চালান এবং শেষে মালামাল ট্রাকে তুলে নিয়ে যান।
সাজ্জাদ হোসেন আরও বলেন, ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সাবস্টেশনে কর্মরত মো. সেলিম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন। পরে র্যাব অভিযানে ডাকাতি করা মালামাল উদ্ধারসহ ৯ জনকে আটক করে। তাঁদের কাছ থেকে ১টি ট্রাক, ২টি খেলনা পিস্তল, ২টি ছুরি, ১টি চাপাতি এবং ১২টি মুঠোফোনও জব্দ করা হয়েছে। ডাকাতি ঘটনায় জড়িত অন্য ব্যক্তিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নাসা গ্রুপের নজরুলকে যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ
জুলাই গণ-অভুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আবু বকর রিফাত হত্যার ঘটনায় করা মামলায় নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুল ইসলাম মজুমদারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান আজ বুধবার শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন বলেন, যাত্রাবাড়ী থানার মামলাটিতে নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখাতে গত ২৬ অক্টোবর আবেদন করা হয়। যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জুয়েল রানা আবেদনটি করেন। নজরুলের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। শুনানির জন্য আজ নজরুলকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি নিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন আদালত।
দেখা যায়, নজরুলকে আজ সকাল ১০টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় এনে রাখা হয়। পরে তাঁকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরানো হয়। দুই হাত সামনে নিয়ে পরানো হয় হাতকড়া। এরপর তাঁকে আদালতের কক্ষে নেওয়া হয়। কাঠগড়ায় তোলার সময় তাঁর মাথা থেকে হেলমেট ও শরীর থেকে জ্যাকেট খোলা হয়। কাঠগড়ার মাঝামাঝি অংশে দাঁড়িয়ে তিনি তাঁর কোমরে বাঁ হাত দেন।
তখন নজরুলের আইনজীবী জানতে চান, তাঁর টুল লাগবে কি না। তিনি সম্মতি দিলে তাঁর আইনজীবী পুলিশের কাছে টুল চান।
দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য বলেন, আদালতের কাছে চাইতে হবে। কিছুক্ষণ পর এজলাসে আসেন বিচারক। আসামিপক্ষের আইনজীবী টুল চেয়ে বিচারকের কাছে আবেদন জানান। বিচারক শুনানি শুরু করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন তুলে ধরেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এই ঘটনার সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা নেই। তাঁর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে কোনো তথ্যপ্রমাণ জমা দিতে পারেননি তদন্ত কর্মকর্তা। তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হলে তিনি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবেন।
শুনানি নিয়ে নজরুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। এ সময় নজরুলকে বিষণ্ন দেখা যায়। পরে তাঁকে আবার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়।
মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেন আবু বকর রিফাত। সেদিন দুপুরের দিকে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এই ঘটনায় চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা হয়। মামলাটি করেন নিহত ব্যক্তির বাবা আওলাদ হোসেন।
গত বছরের ২ অক্টোবর নজরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বিভিন্ন মামলায় তাঁর রিমান্ড হয়েছে। তিনি কাশিমপুর কারাগারে আছেন।