আলবার বিদায়ী রাতে মেসির জোড়া গোল মায়ামির জয়
Published: 12th, October 2025 GMT
যেন সময় থেমে গিয়েছিল মায়ামির চেজ স্টেডিয়ামে। বল পায়ের ছোঁয়ায় ফুটবলের মায়া ছড়াচ্ছেন লিওনেল মেসি। আর গ্যালারিতে উপস্থিত হাজারো দর্শক তার প্রতিটি ছোঁয়ায় উল্লাসে ফেটে পড়ছে। এমনই এক জাদুময় রাতে ইন্টার মায়ামি ৪-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিল আটলান্টা ইউনাইটেডকে। আর মূল পার্থক্যটা গড়ে দিলেন সেই চিরচেনা জাদুকর লিওনেল মেসি।
মেসি গোল করলেন দুটি, অ্যাসিস্ট করলেন একটি। আর তারই হাত ধরে মায়ামি ছুঁয়ে ফেলল পরিপূর্ণ জয়। এই জোড়া গোলের সঙ্গে মৌসুমে তার গোলসংখ্যা দাঁড়াল ২৬।
আরো পড়ুন:
মেসির তিন অ্যাসিস্টে আর আলবার জোড়া গোলে মায়ামির দাপুটে জয়
মেসির জোড়া গোলে মায়ামির জয়
তবে রাতটা ছিল বিশেষভাবে জর্ডি আলবার জন্যও। মেসির দীর্ঘদিনের বার্সেলোনা সতীর্থ নিজের ক্লাব ক্যারিয়ারের শেষ ঘরের মাঠের ম্যাচ খেললেন। আর স্টেডিয়ামজুড়ে দর্শকেরা তাকে দাঁড়িয়ে বিদায় জানালেন।
ম্যাচের ২১ মিনিটে মেসির কাছাকাছি দূরত্ব থেকে নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক জেডেন হিবার্ট। কিন্তু ৪০তম মিনিটে আর থামানো যায়নি তাকে। বালতাসার রদ্রিগেজ প্রতিপক্ষের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নেওয়ার পর মেসি দারুণ এক কার্লিং শটে বল পাঠান জালের ওপরের কোণা দিয়ে। অতুলনীয় এক গোল!
প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে তার নিখুঁত পাস থেকে লুইস সুয়ারেজের ভলি ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই মেসি আবারও আলো ছড়ান। ৫২ মিনিটে তার লম্বা ক্রসফিল্ড পাস পেয়ে আলবা এগিয়ে গিয়ে হিবার্টকে লব করে দারুণ এক গোল করেন। শেষ দুই ম্যাচে এটি ছিল আলবার তৃতীয় গোল!
৬১ মিনিটে স্কোরলাইন ৩-০ করেন সুয়ারেজ। ফাফা পিকল্টের ক্রস প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা ঠিকভাবে দূরে সরাতে পারেননি। সেই বলেই অসাধারণ এক ভলিতে গোল করেন উরুগুইয়ান কিংবদন্তি। এই গোলেই সুয়ারেজের পেশাদার ক্যারিয়ারের গোলসংখ্যা ছুঁয়ে ফেলল ৬০০। যা তার দুর্দান্ত ক্যারিয়ারের আরেক মাইলফলক।
ম্যাচের শেষদিকে, ৮৭তম মিনিটে মেসি এবার আলবার কাছ থেকেই পেলেন এক চমৎকার লফটেড বল। বুকে নিয়ন্ত্রণে এনে এক ঝলকে শট এবং গোল! স্কোরলাইন ৪-০। আর স্টেডিয়ামজুড়ে কেবল একটাই নাম মেসি!
এই জয়ে মেসি গড়লেন নতুন এক রেকর্ড। এমএলএস ইতিহাসে এক মৌসুমে নয়টি ম্যাচে অন্তত দুটি করে গোল করা প্রথম খেলোয়াড় হলেন তিনি।
ম্যাচ শেষে ইন্টার মায়ামির কোচ ও সতীর্থরা প্রশংসায় ভাসালেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তিকে। মেসি এখন জাতীয় দলের শিবিরে যোগ দেবেন পুয়ের্তো রিকোর বিপক্ষে মঙ্গলবারের ম্যাচের আগে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল গ ল কর আলব র
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা
জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।
দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপটহাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’
এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)
আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।
দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকতএই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।
আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।
দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫