ফুড অ্যান্ড বেভারেজ মার্কেটিং ফেস্ট ৫.০ অনুষ্ঠিত
Published: 12th, October 2025 GMT
দেশের মার্কেটিং পেশাজীবীদের বহুল প্রতীক্ষিত আয়োজন ‘ম্যাগি প্রেজেন্টস ফুড অ্যান্ড বেভারেজ মার্কেটিং ফেস্ট ৫.০’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্র্যান্ড প্র্যাক্টিশনার্স বাংলাদেশের (বিপিবি) উদ্যোগে গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়।
পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত এ উৎসবের মূল থিম ছিল ‘উদ্ভাবন প্রবৃদ্ধিকে সমৃদ্ধ করে’। এতে অংশ নেন তিন শতাধিক পেশাজীবী ও দেশের শীর্ষ ব্র্যান্ড নেতারা। সারা দিনে আটটি ইনসাইট ও প্যানেল সেশনে ২৫ জন বক্তা আলোচনা করেন ‘ইনোভেশন, কনজ্যুমার ট্রেন্ড, কমপ্লায়েন্স, লিডারশিপ এবং কোলাবরেশনের’ মতো বিষয় নিয়ে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বিপিবির প্রতিষ্ঠতা ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মির্জা মুহাম্মাদ ইলিয়াস। তিনি বলেন, ‘ইনোভেশন, মার্কেট ইনসাইট আর কোলাবরেশন এখন বাংলাদেশের ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নিচ্ছে। এই উৎসব কেবল একটি আয়োজন নয়, এটি একটি শেখার আন্দোলন।’
দিনের প্রথম সেশনের শিরোনাম ছিল ‘দ্য মার্কেট উই সার্ভ: কারেন্ট রিয়েলিটিজ অ্যান্ড ফিউচার প্রসপেক্টস অব ফুড অ্যান্ড বেভারেজ’। এটি পরিচালনা করেন সেভয় আইসক্রিম ফ্যাক্টরি লিমিটেডের সিনিয়র গ্রুপ প্রোডাক্ট ম্যানেজার (মার্কেটিং) ওয়াকিদ হায়দার।
প্যানেলে ছিলেন মাহবুব হোসেন সজীব (আকিজ ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেড), মোহাম্মদ আনিসুল ইসলাম (প্যান্ডামার্ট, ফুডপ্যান্ডা), মোরতুজা আহমেদ (মিনা বাজার), মো.
দ্বিতীয় সেশনে ‘সেফ ফুড, স্ট্রং ব্র্যান্ডস: বিন্ডিং কনজ্যুমার কনফিডেন্স থ্রো স্ট্যান্ডার্ডস’ শিরোনামে আলোচনা হয় খাদ্যের মান, নিরাপত্তা ও ব্র্যান্ড আস্থার সম্পর্ক নিয়ে। অংশ নেন রিয়াশাদ জামান (নেসলে বাংলাদেশ পিএলসি), এস এম আবু সাঈদ (বিএসটিআই) এবং এমডি ইমরুল হাসান (ফুড সেফটি ইন বাংলাদেশ)।
এর পরের ইনসাইট সেশনে গ্রামীণ দানোন ফুডস লিমিটেডের ডিরেক্টর (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) সুরাইয়া সিদ্দিকা বলেন, ‘একটি ব্র্যান্ডের আসল শক্তি তখনই প্রকাশ পায়, যখন সেটি শুধু পণ্য নয়, একটি উদ্দেশ্য নিয়েও কাজ করে।’
এ সেশনে অংশ নেন রাফিউদ্দিন আহমেদ (নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি), মোহাম্মদ মফাসসেল হক (টি কে গ্রুপ), রুহিনা হালিম (কোয়ান্টাম কনজ্যুমার সলিউশনস) এবং এ কে এম জাবেদ (ডেকো ফুডস লিমিটেড)। আলোচনায় উঠে আসে, কীভাবে পরিবর্তনকে সুযোগে রূপান্তরিত করা যায় এবং নেতৃত্বের ভূমিকা কীভাবে ব্র্যান্ডের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে।
নেসলে বাংলাদেশ পিএলসির সেলস ডিরেক্টর সৈয়দ ইকবাল মাহমুদ হোসেন তাঁর ‘ড্রাইভিং গ্রোথ থ্রো ইনোভেশন অ্যাজ ওয়ান জিডি টিম’ শীর্ষক সেশনে বলেন, ‘গ্রোথ (প্রবৃদ্ধি) কখনো একা আসে না, আসে দলগত ইনোভেশনের (উদ্ভাবন) মাধ্যমে।’
এমডি প্যানেল ‘এম্পাওয়ারিং ইভল্যুশন, ইনশুরিং গ্রোথ’ শীর্ষক সেশনে অংশ নেন এমডি নাহারুল ইসলাম মোল্লা (ইউনিলিভার কনজ্যুমার কেয়ার লিমিটেড), দীপেশ নাগ (গ্রামীণ ডানোন ফুডস লিমিটেড)। মডারেটর হিসেবে ছিলেন কাজী মোহিউদ্দিন (এমজিআই)। তাঁরা বলেন, এখনকার নেতৃত্ব মানে শুধু ব্যবসা পরিচালনা নয়, বরং মানুষের আস্থা অর্জন করা এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকা।
‘ন্যাভিগেটিং টুডে’স ফুড অ্যান্ড বেভারেজ মার্কেট ডায়নাকিমস উইথ স্মার্টার স্ট্র্যাটেজিস’(সিএমও প্যানেল) শীর্ষক সেশনে অংশ নেন সুমাইয়া মুতিয়াতুর রাসুল (ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি), এমডি মাইদুল ইসলাম (আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড), মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল (টি কে গ্রুপ), পর্ণি মজুমদার (বস ম্যান ফিল্ম-ফুড-ডিজিটাল), এমডি আকতারুজ্জামান (নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ) এবং আবু ওবায়দা ইমন (ডমিনোস পিৎজা বাংলাদেশ)। তাঁরা বলেন, নতুন যুগের মার্কেটিং মানে হলো ডেটা, গল্প আর কনজ্যুমারের আবেগের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য তৈরি করা।
পুরো আয়োজনে মূল ফোকাস ছিল সহযোগিতা, উদ্ভাবন ও শেখার সংস্কৃতি। আলোচনায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের ফুড মার্কেটিং ইন্ডাস্ট্রির পরিবর্তন, ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও ব্র্যান্ড ইনোভেশনের বাস্তব অভিজ্ঞতা।
এ আয়োজনে প্রকাশিত হয় ‘সিএমও বাংলাদেশ ম্যাগাজিন’-এর তৃতীয় সংখ্যা। এর মূল থিম ছিল ‘উদ্ভাবন প্রবৃদ্ধিকে সমৃদ্ধ করে’। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের শীর্ষ এমডি, সিএক্সও, সিএমও এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ড লিডাররা।
আয়োজনের টাইটেল পার্টনার ছিল ম্যাগি, পাওয়ারড বাই বেইকম্যান’স। সহযোগিতায় ছিল মোজো। প্লাটিনাম পার্টনার ইস্পাহানি মির্জাপুর টি। কমিউনিটি পার্টনার সিএমও বাংলাদেশ। ইনফ্লুয়েন্সার পার্টনার ছিল ব্র্যান্ডফ্লুয়েন্সার। এ আয়োজনের মিডিয়া পার্টনার ছিল অ্যানেক্স কমিউনিকেশনস লিমিটেড।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইন ড স ট র কনজ য ম র প র টন র অন ষ ঠ স এমও
এছাড়াও পড়ুন:
‘অনেকের আপত্তিতে’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শরৎ উৎসব স্থগিত, বাতিল নয়: চারুকলার ডিন
‘অনেকের আপত্তি’ ও ‘গন্ডগোলের আশঙ্কা’ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর ‘শরৎ উৎসব’ আয়োজন স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। তবে বাতিল করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে এই অনুষ্ঠান হতে পারে বলে আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন আজহারুল ইসলাম।
অন্যদিকে আয়োজকদের একজন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী বলন, তাঁকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে অথচ আওয়ামী লীগের নাম–গন্ধে কোথাও কোনোদিন তিনি ছিলেন না।
১৯ বছর ধরে চারুকলায় এই ‘শরৎ উৎসব’ উদ্যাপিত হয়ে আসছে। প্রতিবছরের মতো এবারও সেখানে উৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছিল সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। তাঁরা সব প্রস্তুতি শেষ করার পর হঠাৎ স্হগিত করা হয় বলে প্রথম আলোকে জানান মানজার চৌধুরী (সুইট)। এতে তিনি আতঙ্কিত হয়েছেন এবং এর মাধ্যমে সারা বিশ্বব্যাপী একটি ‘বাজে ইঙ্গিত’ গেল বলে মনে করেন তিনি। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা প্রকৃতির বন্দনা করি। এখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত—এগুলোর সঙ্গে তো কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই অনুষ্ঠান করে আসছি। আর আমরা তো কোনো ভুঁইফোড় সংগঠনও না।’
তবে ছোট পরিসরে গেন্ডারিয়ার কচিকাঁচার মেলার মাঠে শরৎ উৎসব করা হচ্ছে বলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন। তিনি জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে বসতে চেয়েছে আগামীকাল।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন আজহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনুষ্ঠানটি স্হগিত করা হয়েছে, বাতিল করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে উদ্যাপন করা হবে। আগামীকাল একটি মিটিং করে আমরা পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’
আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের দোসর উল্লেখ করে অনেকের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে এবং গন্ডগোলের ইঙ্গিত পেয়ে আমরা এটি সাময়িকভাবে স্থগিত করি। অনেক জায়গা থেকে ফোনে আপত্তি জানানো হয়েছে৷ অনেকে ফোনে বলেছেন, আমরা ফ্যাসিবাদের দোসরদের অনুষ্ঠান করার সুযোগ দিচ্ছি, আমরা যদি এমনটা করি, তাহলে গন্ডগোল হবে। সেই জায়গা থেকে আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলাম।’