গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মেয়েকে মারধরের অভিযোগে শ্বশুরের দায়ের করা মামলায় জামাতা বিপ্র বিশ্বাসকে (২৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রবিবার (১২ অক্টোবর) বিষয়টি জানাজানি হয়। এর আগে, গত ৬ অক্টোবর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে কারাগারে আছেন বিপ্র বিশ্বাস।

এদিকে, মামলা তুলে নিতে আসামি পক্ষ থেকে বাদীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের পিড়ারবাড়ি গ্রামের ব্যবসায়ী বিপুল বিশ্বাসের ছেলে বিপ্র বিশ্বাস ভালোবেসে একই গ্রামের নিখিল মল্লিকের মেয়ে অন্তু মল্লিককে বিয়ে করেন। তবে, বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে কলহ চলে আসছিল।

গত রবিবার বিপ্র বিশ্বাস তার স্ত্রী অন্তু মল্লিককে মেরে গুরুতর আহত করেন অভিযোগ। এ ঘটনার পরদিন নিখিল মল্লিক বাদী হয়ে কোটালীপাড়া থানায় একটি মামলা করেন। মামলা দায়েরের পরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিপ্র বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়।

মামলার বাদী নিখিল মল্লিক বলেন, ‘‘বিয়ের পর থেকেই বিপ্র ও তার পরিবারের লোকজন আমার মেয়েকে নানাভাবে নির্যাতন করত। আমার জামাতা একজন মাদকসেবী। প্রায়ই আমার মেয়ের কাছে মাদকের জন্য টাকা চাইত। টাকা না দিলে মারধর করত।’’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোটালীপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিখিল মল্লিক তার জামাতা বিপ্র বিশ্বাসকে একমাত্র আসামি করে মামলা করেছেন। সেই মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’’

আসামি পক্ষের মামলা তুলে নেওয়ার হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এখনো এমন অভিযোগ পাইনি। পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

ঢাকা/বাদল/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা

জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।

দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপট

হাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’

এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)

আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।

দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকত

এই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯

আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।

আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।

দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ