পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সব স্কুল দুই দিনের বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। চলমান উত্তেজনার মধ্যে আগামী ৯ ও ১০ মে পাঞ্জাবের সব স্কুল বন্ধ থাকবে। আজ বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর বিবিসির

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থাপনায় এই হামলা চালায় ভারত। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষণে নিহত হন ৩১ জন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৫৭ জন। অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতেই নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে (এলওসি) পাকিস্তানি সেনারা গোলাবর্ষণ করেছে। এতে ১৫ ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কর্তৃক অনুষ্ঠিত ও-লেভেল ও এ-লেভেলের মতো পরীক্ষাগুলো নির্ধারিত সময়সূচি অনুসারে চলবে।

এর আগে ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও গুজরাটসহ ১৫টির বেশি শহরে সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। তবে এতে হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানায়নি নয়াদিল্লি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, কাশ্মীরের অবন্তিপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, পাঠানকোট, অমৃতসর, কাপুরথালা, জলান্ধর, লুধিয়ানা, আদমপুর, ভাতিন্ডা, চণ্ডীগড়, নাল, ফালোদি, উত্তরলাই, ভুজসহ ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক বাহিনীর অনেকগুলো স্থাপনা লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল পাকিস্তান। তবে এই হামলা প্রতিহত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে বেশ কিছু সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে পাকিস্তান থেকে ‘ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র’ নিক্ষেপ করা হয়েছে। পাকিস্তানের ছোড়া এসব ‘ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র’ নিষ্ক্রিয় করেছে তারা।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ৭ ও ৮ মে রাতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের অনেকগুলো সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করতে চায়। এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের সব কটিই ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা) নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে।

এদিকে ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানান, এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ার তৈরি সু-৩০ ও অন্যটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান। সু-৩০ ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান সোভিয়েত আমলে তৈরি।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী এখন পর্যন্ত ২৫টি ড্রোন ধ্বংস করেছে এবং বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করা হচ্ছে। আইএসপিআর মুখপাত্র বলেন, ভারতীয় ড্রোনগুলো পাকিস্তানের লাহোর, গুজরানওয়ালা, চকওয়াল, অ্যাটক, রাওয়ালপিন্ডি, বাহাওয়ালপুর, মিয়ানওয়ালি, ছোড় এবং করাচির দিকে পাঠানো হয়েছিল।

গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এখন তা পাল্টাপাল্টি হামলায় রূপ নিয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: লক ষ য

এছাড়াও পড়ুন:

মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য সাইবার নিরাপত্তা আইন সংশোধন করেছি: আইন উপদেষ্টা

আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্যই সাইবার নিরাপত্তা আইন সংশোধন করা হয়েছে। এটি ছিল দেশের সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত ও সমালোচিত আইনগুলোর একটি। আমরা অত্যন্ত পরামর্শমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এর একটি সংশোধনী প্রস্তুত করেছি। সেটি চূড়ান্তের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে কমনওয়েলথ চার্টার-বিষয়ক এক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। 

আসিফ নজরুল বলেন, ‘গত সরকারের আমলে এ আইনের মাধ্যমে মানুষ সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। আইন সংশোধনের পর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের লোকেরাও যখন স্বীকার করেন, আইনটি খুব খারাপ আইন নয়, তখন তা আমার জন্য বড় বিস্ময় ছিল। যখন আপনি এমন লোকদের কাছ থেকে শোনেন, এটি খুব খারাপ আইন নয়, তার মানে এটি একটি ভালো আইন। আপনি যদি আমাদের সম্পাদিত সাইবার সুরক্ষা আইনটির অতীত সংস্করণগুলোর সঙ্গে তুলনা করেন, তাহলে জনগণকে অপব্যবহারের শিকার হওয়া থেকে সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যাবে।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘কমনওয়েলথ সনদ শুধু একটি ঘোষণাপত্র নয়, এটি একটি নৈতিক দিকনির্দেশক; যা আমাদের সীমানা ছাড়িয়ে বেঁধে রাখে। আমি আশ্বস্ত করছি, এই মূল্যবোধগুলো আমাদের বর্তমান সংস্কার প্রচেষ্টার গভীরে প্রবাহিত। কমনওয়েলথ সনদের সঙ্গে সংগতি রেখে বর্তমান সরকার সাহসী সংস্কারের পথে অগ্রসর হয়েছে।’

গত বছরের জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানকে নৈতিক আন্দোলন হিসেবে দেখার আহ্বান জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, এ অভ্যুত্থান শুধু রাজনৈতিক আন্দোলন নয়; জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণরা শুধু আগামী দিনের নেতা নন, তারাই হবেন আগামী দিনের পরিবর্তন সৃষ্টিকারী। কমনওয়েলথ চার্টার কর্মশালাটি বাংলাদেশের তরুণদের স্বপ্ন দেখাতে শেখাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন কমনওয়েলথের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক লুইস ফ্রান্সেশি। নারী ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় তরুণদের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব উল আলম। ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের উপদেষ্টা মাইকেল স্কোবি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ