পাঞ্জাবের সব স্কুল আগামী ২ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা
Published: 8th, May 2025 GMT
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সব স্কুল দুই দিনের বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। চলমান উত্তেজনার মধ্যে আগামী ৯ ও ১০ মে পাঞ্জাবের সব স্কুল বন্ধ থাকবে। আজ বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর বিবিসির
গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থাপনায় এই হামলা চালায় ভারত। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষণে নিহত হন ৩১ জন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৫৭ জন। অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতেই নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে (এলওসি) পাকিস্তানি সেনারা গোলাবর্ষণ করেছে। এতে ১৫ ভারতীয় নাগরিক নিহত হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কর্তৃক অনুষ্ঠিত ও-লেভেল ও এ-লেভেলের মতো পরীক্ষাগুলো নির্ধারিত সময়সূচি অনুসারে চলবে।
এর আগে ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের কাশ্মীর, পাঞ্জাব ও গুজরাটসহ ১৫টির বেশি শহরে সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। তবে এতে হতাহত কিংবা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানায়নি নয়াদিল্লি।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, কাশ্মীরের অবন্তিপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, পাঠানকোট, অমৃতসর, কাপুরথালা, জলান্ধর, লুধিয়ানা, আদমপুর, ভাতিন্ডা, চণ্ডীগড়, নাল, ফালোদি, উত্তরলাই, ভুজসহ ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক বাহিনীর অনেকগুলো স্থাপনা লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল পাকিস্তান। তবে এই হামলা প্রতিহত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে বেশ কিছু সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে পাকিস্তান থেকে ‘ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র’ নিক্ষেপ করা হয়েছে। পাকিস্তানের ছোড়া এসব ‘ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র’ নিষ্ক্রিয় করেছে তারা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ৭ ও ৮ মে রাতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের অনেকগুলো সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করতে চায়। এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের সব কটিই ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা) নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে।
এদিকে ভারতের হামলার পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানান, এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ার তৈরি সু-৩০ ও অন্যটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান। সু-৩০ ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান সোভিয়েত আমলে তৈরি।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী এখন পর্যন্ত ২৫টি ড্রোন ধ্বংস করেছে এবং বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করা হচ্ছে। আইএসপিআর মুখপাত্র বলেন, ভারতীয় ড্রোনগুলো পাকিস্তানের লাহোর, গুজরানওয়ালা, চকওয়াল, অ্যাটক, রাওয়ালপিন্ডি, বাহাওয়ালপুর, মিয়ানওয়ালি, ছোড় এবং করাচির দিকে পাঠানো হয়েছিল।
গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানির পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। এখন তা পাল্টাপাল্টি হামলায় রূপ নিয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: লক ষ য
এছাড়াও পড়ুন:
করাচি বন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ
পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে, ভারত এবার পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ করাচি বন্দরে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস টুডে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুসারে, বন্দরের কাছে দক্ষিণ পাকিস্তানের করাচি শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
এর আগে, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের ভারতীয় নৌবাহিনী পাকিস্তানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর এবং নৌ সদর দপ্তর করাচিতে দুটি হামলা চালিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ করেছিল। ফের আবার করাচিতে একইভাবে আঘাত হানল ভারত।
আরো পড়ুন:
নিহত জঙ্গিদের রাষ্ট্রীয় সম্মান দিয়েছে পাকিস্তান: বিক্রম মিশ্রি
পাকিস্তান যখন হামলা চালাবে, তখন বিশ্ব জানতে পারবে: খাজা আসিফ
বৃহস্পতিবার রাতে ভারতীয় নৌবাহিনী করাচি নৌঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে, যার ফলে পাকিস্তানের উপকূলরেখায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রতিরক্ষা সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, আরব সাগরে থাকা ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিক্রান্ত থেকে পাকিস্তানের করাচি এবং ওরমারা বন্দরে বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। ফলে এই দুই জায়গাতেই আগুন ধরে গেছে। ঘন ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে বন্দর শহরগুলো। আতঙ্কিত বাসিন্দারা উপকূলীয় অঞ্চল ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাকিস্তান বেসামরিক ও সামরিক এলাকা লক্ষ্য করে ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং তীব্র কামানের গোলাবর্ষণ করে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি আরো বাড়িয়ে দিয়েছে অভিযোগ করে ভারত। তবে ভারতে হামলা চালানোর তথ্য নাচক করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে তিনি বলেছেন, “পাকিস্তান যখন হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেবে, তখন সারা বিশ্ব জানতে পারবে। পাকিস্তান কোনো পদক্ষেপ নিলে তা অস্বীকার করবে না।”
এদিকে হামলার আবহে ভারতের ২৪টি বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়েছে। তালিকায় রয়েছে- অমৃতসর, চণ্ডীগড়, শ্রীনগর, লুধিয়ানা, ভুন্টার, কিষেণগড়, পটীয়লা, সিমলা, কাংড়া-গগ্গল, ভাতিণ্ডা, জয়সলমেঢ়, জোধপুর, বিকানেল, হলওয়ারা, পঠানকোট, জম্মু, লেহ্, মুন্দ্রা, জামনগর, হিরাসর, পোরবন্দর, কেশোড়, কান্দলা এবং ভূজ।
ঢাকা/ফিরোজ