নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেত্রী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছেন সহযোদ্ধা রাফিউর রাব্বি। শুক্রবার (৯ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করা এক স্ট্যাটাসে তিনি এই নিন্দা জানান।

স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে আজ সকালে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আমরা এই গ্রেপ্তারের নিন্দা জানাই। নারায়ণগঞ্জকে নরক বানিয়ে রাখা শামীম ওসমানকে সরকারের বাহিনী সসস্মানে দেশ থেকে পালাতে সহায়তা করল, তার পরিবারকে বিএনপির নেতারা পালাতে সহায়তা করল আর আইভীকে করা হলো গ্রেপ্তার। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে।

তিনি শামীম ওসমানকে সাথে নিয়ে হত্যা করেছেন। যে শামীম ওসমানের সাথে তার সাপ-নেউলের সম্পর্ক তাকে সাথে নিয়ে আইভী হত্যা করেছেন? একদিকে সরকার বলছে মামলা হলেই কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। তদন্ত করে প্রমাণ পেলে গ্রেপ্তার। আবার এমনি রাতভর বাড়ি ঘিরে রেখে সকালে গ্রেপ্তার। 

৫ আগস্টের পরে আইভীতো কোথাও পালিয়ে যান নি। নিজের বাড়িতেই ছিলেন, তাহলে রাতভার এ সবের কী প্রয়োজন ছিল। বর্তমানে সরকারের কারো কারো অতি উৎসাহের কারণে, অনেক কাজে বিতর্ক তৈরি হচ্ছে, ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমরা দেখছি সরকার অনেক কিছুই সামাল দিতে পারছে না। 
আইভী যতদিন চেয়ারম্যান-মেয়র ছিলেন তিনি আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেন নি। দলমতের উর্ধ্বে থেকে বিএনপি জামায়াত সহ সকল দলের লোকদের সমান সহযোগিতা করেছেন। তিনি দলবাজি করে নি। দেশের বিভিন্ন পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন যে ভাবে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় হয়ে উঠেছিল নারায়ণগঞ্জে আইভী তা করেন নি। আর সে জন্যই শেখ হাসিনার সুনজরে তিনি যেতে পারেন নি।

২০১১ সালে সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে শেখ হাসিনা দলের সমর্থন শামীম ওসমানকে দিয়েছেন, আইভীকে নয়। আইভী সবসময় দলের লোকদের অন্যায়-অপরাধের প্রতিবাদ করেছেন। এই জন্য শেখ হাসিনা ছিলেন তার প্রতি ক্ষব্ধ। দলের প্রায় অনেকেই যখন হত্যা, চাঁদাবাজি, দখল, সন্ত্রাস করে চলেছে তিনি তখন তার প্রতিবাদ করেছেন। শামীম ওসমান তার বিরুদ্ধে তিনবার দুদকে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত করে কিছু পায় নি।

৫ আগস্টের পরে দুদক আবার আইভীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এখনো কিছু পায় নি। তদন্তে আইভীর সাতটি ব্যাংক হিসাব আছে বলে রিপোর্ট দিয়েছে। এই সাতটির সবগুলোই ভুল, কোনটিই তার নয়। অথচ তার নিজের নামে যে হিসাব তারই উল্লেখ করে নি দুদক। দুদক এখনো কতটা প্রভাবমুক্ত হতে পেরেছে জানিনা। আইভী যদি দুর্নীতি করে থাকে, হত্যার সাথে জড়িত থাকে তার বিচার হবে।

কিন্তু কখনো হত্যা, চাঁদাবাজি- এ সবের অভিযোগ তার শত্রুরাও তার বিরুদ্ধে কখনো করে নি। তবে হাঁ তিনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দলের সাথে যুক্ত ছিলেন। এই অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে। হাসিনার দলের সাথে যুক্ত থেকে যারা লাশের পর লাশ ফেলেছেন, মানুষের জায়গা-জমি দখল করেছেন, চাঁদাবাজি করেছেন, হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন।

তাদের কেশাগ্রও এই সরকার স্পর্শ করেনি বা করতে চায় নি। তাদের নিরাপত্ত দিয়ে সসম্মানে দেশ থেকে বের হয়ে যেতে দিয়েছে। যারা বিদেশে গিয়ে এখন রাজার হালে জীবনযাপন করছেন। খুনী, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী যারা পালিয়ে যায় নি তাদের অনেকে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ে ঢুকে এখন নতুন সাম্রাজ্য তৈরি করছে। 

আমরা বিচারহীনতার বিরুদ্ধে গত ষোল বছর বলেছি কিন্তু কাজ হয় নি। শেখ হাসিনার গোয়ার্তুমী ও মাফিলা লালন থেকে দেশ বের হয় নি। আমরা এখন আর বিচারহীনতা দেখতে চাই না। অপরাধী হলে বিচারের আওতায় আসবে কিন্তু অপরাধ না করে শাস্তি পাওয়ার সংস্কৃতি আমরা মানবো না। আইভী অবশ্যই ন্যায় বিচার পাবে সরকার ও রাষ্ট্রকে তা নিশ্চিত করতে হবে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ শ ম ম ওসম ন কর ছ ন তদন ত আইভ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িবহরে হামলা

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে বহনকারী গাড়ির ওপর হামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডের কালির বাজার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় র‌্যাব ও পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এতে পুলিশের দুই সদস্যসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সেলিনা হায়াৎকে গ্রেপ্তারের জন্য শহরের দেওভোগ এলাকায় তাঁর নতুন বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর সকাল পৌনে ছয়টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় সেখানে তাঁর বিপুলসংখ্যক সমর্থক অবস্থান করছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে সেলিনা হায়াৎকে গ্রেপ্তারের পর তাঁকে নিয়ে র‌্যাব ও পুলিশের ১৫টি গাড়ি ডিবি কার্যালয়ের দিকে রওনা হয়। এ সময় ৩০-৪০ জনের একটি দল হামলা চালায়। তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থকদের ধাওয়া দিলে তাঁরা পালিয়ে যান। হামলাকারীদের ইটপাটকেলের আঘাতে পুলিশের দুই সদস্যসহ পাঁচজন আহত হন। তাৎক্ষণিকভাবে আহত ব্যক্তিদের নাম–পরিচয় পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুনঅভিযান শুরুর ৬ ঘণ্টা পর আইভীকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৩ ঘণ্টা আগে

ওই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) মো. হাসানুজ্জামান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেলিনা হায়াৎকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসার সময় পুলিশের গাড়িবহরে হামলা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। আমরা বিস্ফোরণের শব্দও শুনেছি। এতে দুই পুলিশ সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে সেলিনা হায়াতের কোনো ক্ষতি হয়নি।’

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াতের নামে একাধিক মামলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, জুলাই–আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে হত্যা, হত্যার চেষ্টাসহ বিভিন্ন অভিযোগে সেলিনা হায়াতের নামে পাঁচটি মামলা আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে : মাসুম বিল্লাহ
  • কাশিমপুর কারাগারে আইভী
  • শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে তাদের পাশে থাকতে হবে : মাও. জব্বার
  • সেলিনা হায়াৎ আইভী কাশিমপুর মহিলা কারাগারে
  • কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আইভী
  • নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র আইভী কারাগারে
  • নারায়ণগঞ্জে গণ–অভ্যুত্থানের হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র আইভী কারাগারে
  • অভিযান শুরুর ৬ ঘণ্টা পর আইভীকে গ্রেপ্তার
  • নারায়ণগঞ্জে আইভীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের গাড়িবহরে হামলা