জিপিও ভবন ‘সচিবালয়ে যুক্ত করার প্রস্তাবের’ প্রতিবাদ
Published: 13th, May 2025 GMT
রাজধানীর গুলিস্তানে অবস্থিত জেনারেল পোস্ট অফিস (জিপিও) ভবন ও ডাক বিভাগের সাবেক প্রধান কার্যালয়কে পরিত্যক্ত ও অব্যবহৃত উল্লেখ করে তা সচিবালয়ের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তার প্রতিবাদ করেছেন বিভাগের কর্মীরা। পাশাপাশি এই প্রস্তাব বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
সম্প্রতি বিসিএস পোস্টাল অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে। সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক ও ডাক বিভাগের (ডাক জীবন বীমা, পূর্বাঞ্চল, ঢাকা) ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আতিয়া সুলতানা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে ‘জিপিও ভবন পরিত্যক্ত ও অব্যবহৃত’ দাবি করে তা সচিবালয়ের এক্সটেনশন হিসেবে সচিবালয়ের মাস্টারপ্ল্যানে অন্তর্ভুক্তি ও হস্তান্তরের প্রস্তাব দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এ প্রস্তাবে উল্লিখিত তথ্যকে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে সংস্থাটি জানিয়েছে, জিপিও কম্পাউন্ড সরকারঘোষিত একটি কেপিআইভুক্ত স্থাপনা। এখানে ডাক বিভাগের ১৪টি অপারেশনাল অফিস সক্রিয়ভাবে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এখান থেকে ডাকসেবা গ্রহণ করছে। ডাক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা দেওয়ার এই কেন্দ্র কখনোই পরিত্যক্ত ছিল না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কার্যালয় শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত ডাক ভবনে স্থানান্তরিত হলেও অন্যান্য অপারেশনাল অফিস আগের মতো জিপিও কম্পাউন্ডেই চলমান।
ডাক বিভাগের মতামত ছাড়াই এ ধরনের চিঠি দেওয়া এবং তা প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করায় নিন্দা জানিয়ে বিসিএস পোস্টাল অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, জিপিও ভবন শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি ডাক বিভাগের প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রাণের জায়গা, তাদের গর্ব ও ঐতিহ্যের প্রতীক। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই ভবন কেড়ে নেওয়ার যেকোনো উদ্যোগকে তারা সরাসরি দেশের ডাকসেবার ওপর আঘাত হিসেবেই বিবেচনা করে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ত ব
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্নীতির মামলায় পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁদের পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩–এর বিচারক আবু তাহের আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন। রায়ের পর পাপিয়া ও তাঁর স্বামী মফিজুরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৪ আগস্ট মামলা করে দুদক।
এর আগে গত ২৫ মে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় শামীমা নূর পাপিয়াকে চার বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর অস্ত্র আইনের মামলায় পাপিয়া ও তাঁর স্বামীকে সর্বোচ্চ ২০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার পাঁচ তারকা একটি হোটেলে বিলাসবহুল কক্ষ ভাড়া নিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগ রয়েছে পাপিয়ার বিরুদ্ধে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের বিষয়ে আঁচ পেয়ে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া ও তাঁর স্বামী মফিজুরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর পাপিয়াকে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে পাপিয়ার বুকিং দেওয়া বিলাসবহুল স্যুট ও ইন্দিরা রোডের ফ্ল্যাট থেকে বিদেশি একটি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, পিস্তলের ২০টি গুলি, ৫ বোতল দামি বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার নগদ টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, কিছু বিদেশি মুদ্রা ও এটিএম কার্ড জব্দ করেছিল র্যাব।
র্যাব জানায়, পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর মালিকানায় রাজধানীর ইন্দিরা রোডে ২টি ফ্ল্যাট, নরসিংদীতে ২টি ফ্ল্যাট, ২ কোটি টাকা দামের ২টি প্লট, তেজগাঁওয়ে এফডিসি ফটকের কাছে গাড়ির শোরুমে ১ কোটি টাকার বিনিয়োগ, নরসিংদী জেলায় কেএমসি কার ওয়াশ অ্যান্ড অটো সলিউশন নামের প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ টাকার বিনিয়োগ আছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা করে র্যাব। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অবৈধ পাঁচ কোটি টাকার খোঁজ পেয়ে পাপিয়া ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে আরেকটি মামলা করে।