ঢাবি শিক্ষার্থী সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
Published: 14th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও হল শাখা ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদ ও খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদল।
বুধবার (১৪ মে) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ও একাডেমিক ভবন প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ করে সংগঠনটি।
মিছিলে ‘আমার ভাই কবরে, খুনী কেন বাইরে’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, ঘরে থাকার সময় নাই’, ‘আমাদের সংগ্রাম, চলছেই চলবে’, ‘ছাত্রদলের সংগ্রাম, চলছেই চলবে’ ইত্যাদি শ্লোগান দেন নেতাকর্মীরা।
আরো পড়ুন:
সাম্য হত্যা: গ্রেপ্তার ৩ জন কারাগারে
সুনামগঞ্জে গৃহকর্মীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যা
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, আবু দাউদ, আহসান হাবীব, আনারুল ইসলাম, রোকন উদ্দিন, মনিরুল ইসলাম, সদস্য সাব্বির হোসেন, রাফিজ উদ্দিন, নুর উদ্দিন,সাক্ষর , উল্লাস হোসেন, রুকনুজ্জামান, আসাদ তৌফিক, আলামিন, রিফাত, তৌহিদুল, উৎস, আলী, রিয়াজ, মামুন, রায়হান, লিখন, তাপস প্রমুখ ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, জুলাই আগস্টের আন্দোলনে হাজার হাজার ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা আন্দোলন করেছেন। অনেক নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। ৫ আগস্টের পর সব জায়গায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা খুনের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু অন্য কোনো দলের নেতাকর্মীরা তো খুন হচ্ছে না। ছাত্রদলের রক্ত খুনীদের কাছে এত মজা কেন।
তারা বলেন, এত হত্যার পরও বর্তমান সরকার দৃষ্টান্তমূলক কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। প্রশাসন কেনো এসব জায়গায় চুপ থাকে। আমাদের ভাই সাম্য হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। অতিদ্রুত এই হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। সরকার যদি এর বিচার করতে না পারে, তাহলে তাদের পদত্যাগ করা উচিত। নিরাপত্তার ব্যর্থতার দায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরকেও পদত্যাগ করা উচিত।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহেদ আহম্মেদ বলেন, “আন্দোলনের মুখে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পরও আমাদের ছাত্রদলের ভাইয়েরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন। আজ ঢাবি ছাত্রদল নেতাকে হত্যা করা হয়েছে, এর আগে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আন্দোলনের এত মাস পরও সরকার আইনশৃঙ্খলা ঠিক করতে পারছে না। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পরও বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। কিন্তু আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম।”
তিনি বলেন, “আমরা ছাত্রদল নেতার হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। এখনো বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় স্বৈরাচারের দোসররা পদে বসে আছে। এদের বিষয়ে ইউনুস সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আমরা সব জায়গা থেকে এসব দোসরদের অপসারণ চাই। আমরা দেশে আর কোনো হত্যাকাণ্ড দেখতে চাই না।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ছ ত রদল র ন ত কর ম র স ম য হত য ছ ত রদল র হত য র সরক র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁ অডিটোরিয়াম সংস্কারের নামে অর্থ লোপাটের অভিযোগ
সোনারগাঁ উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে সরকারি অর্থ তছরূপের অভিযোগ উঠেছে। নামে বেনামে প্রকল্প তৈরি করে অতিরিক্ত বিল ভাউচার এমনকি কখনো কখনো কাজ না করেই চলছে হরিলুট।
সম্প্রতি উপজেলা অডিটরিয়ামের সংস্কার কাজে বাজারমূল্য থেকে কয়েকগুণ বেশি দামে কাজের বিল পাস করানোর তথ্য পাওয়া গেছে। এমনকি কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারকে ছাড়াই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা ইসলামের নির্দেশে উপজেলা প্রকৌশলী নিজ তত্বাবধানে কাজ সম্পন্ন করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ২০২৪–২৫ অর্থবছরের (স্কিম কোড ৩৬.৭০৪.২৫.১০২.১২) প্রকল্পের আওতায় মঞ্চের দেয়াল ও ব্যাক ওয়ালে প্যানেলিং, মঞ্চের সিলিং জিপসাম বোর্ডে, ভিআইপি চেয়ার, ছোফা, লোহার ফ্রেমের চেয়ার, খঊউ স্ট্রিপ লাইট, সাউন্ডস সিস্টেমসহ অন্যান্য কাজের ব্যয়ের হিসাব ধরা হয়েছে বাস্তবতার চেয়ে বহুগুণ বেশি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, অডিটোরিয়ামের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা ও সংস্কার কাজে ব্যবহারের জন্য ২০০ টি ভিজিটর চেয়ারের মূল্য ধরা হয়েছে ১০ লক্ষ ৫৫ হাজার ২৪৪ টাকা। যেখানে ১টা চেয়ারের মূল্য পরছে ৫,২৭৬.২২ টাকা। ৫ টি সোফার মূল্য ধরা হয়েছে ২,৫৭,৬৭৫/- টাকা, যেখানে ১টি সোফার মূল্য পরে ৫১,৫৩৫/- টাকা। মালামালে বাজার দর থেকে কয়েক গুন বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে।
যা ২০১৯ সালের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আবাসিক এলাকা নির্মাণে বালিশ ক্রয়ে যে ব্যয় করা হয়েছিল তার চেয়ে কম নয়। এই অভিযোগ ও অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের অভিযান করা হলে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো দেশে রূপপুর বালিশ কেলেঙ্কারি নামে আরেকটা ঘটনা পরিচিতি লাভ করতে পারে।
স্থানীয় ঠিকাদার ও বাজার সংশ্লিষ্টদের দাবি, বাজারে এসব উপকরণের প্রকৃত দাম নথিতে উল্লেখিত অঙ্কের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এমনকি উচ্চমানের উপকরণ ব্যবহার করলেও নির্ধারিত খরচের সাথে বাস্তব দামের বিশাল ফারাক রয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন। উল্লেখিত দাম বর্তমান বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলেও দাবি সংস্লিষ্টদের।
তারা আরও দাবি করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমান টেন্ডারবাজি করেন। ঠিকাদারদের কাজ নিয়ে নিজেই লোক দিয়ে কাজ করান। ফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমানের সরকারি বাসভবন, সরকারি কোয়াটার, পুকুরের সাইড ও শিশুদের খেলার যায়গা সংস্কারেও অর্থ লোপাটের বিষয় আছে। সঠিক তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে। এছাড়াও অনেক প্রকল্পের কাজ না করেই অর্থ লোপাটের ঘটনায় সংবাদ মাধ্যমে খবর হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ধরনের অতিরিক্ত মূল্য ধরা হলে সরকারি অর্থ অপচয়ের ঝুঁকি থাকে এবং সঠিক তদারকি না হলে অর্থ লোপাটের সম্ভাবনাও থাকে।
এ বিষয়ে এ কাজের ঠিকাদার মারদ ট্রেডার্স এর কর্ণধার ফারুক আহমাদ বলেন, ত্রিশ লাখ টাকার এই কাজ আমি ১০% লেস এর পর ২৭ লাখ টাকায় সোনারগাঁ অডিটোরিয়াম সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ শেষ করে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার আলমগির স্যারকে বুজিয়ে দিয়েছি।
তারপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা ইসলাম আমার বিল পাস করেন। এখানে অতিরিক্ত বিল ভাউচার বা কাজ ঠিক-বেঠিক বিষয়টা আপনি সাংবাদিক দেখে কি করবেন? যারা দেখার তারা দেখেই আমার বিল পাস করছে।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার আলমগির হোসাইন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি নয়।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সোনারগাঁ অডিটোরিয়াম সংস্কারে কোন প্রকার দূর্নীতি হয়নি। এ কাজের বিল পাস দিয়েছি আমি।
কাজেই আমি এ কাজের খোঁজখবর করেই দিয়েছি। আমি আপনাদের সহযোগীতা করতে পারব না। আপনারা আপনাদের মতো অনুসন্ধান করেন।