পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের বিস্তারিত কূটনীতিকদের জানাল ভারত, ছিল না চীন–তুরস্ক
Published: 14th, May 2025 GMT
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে ‘অপারেশন সিঁদুর’–এর সাফল্য বর্ণনা করলেন ভারতের সেনা সর্বাধিনায়ক (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনীর তিন প্রধান যথাক্রমে জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, অ্যাডমিরাল দীনেশ ত্রিপাঠি ও এয়ার চিফ মার্শাল অমর প্রীত সিং।
আজ বুধবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়, সেনাবাহিনী রাষ্ট্রপতিকে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযানের সাফল্য বিস্তারিত বর্ণনা করেন।
রাষ্ট্রপতিকে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক অনিল চৌহান বলেন, যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও তিন বাহিনী সতর্ক। সীমান্তপারের যেকোনো ‘সন্ত্রাসী’ হামলার যোগ্য প্রত্যুত্তরের জন্য সেনাবাহিনী সদা প্রস্তুত।
আজ বুধবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এই অভিযান সম্পর্কে বিশ্বের ৭০টি দেশের কূটনৈতিকদের সবকিছু জানানো হয়।
পিটিআই জানাচ্ছে, দিল্লি ক্যান্টনমেন্টের মানেকশ সেন্টারে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে ভারতীয় সেনা অভিযানের প্রয়োজনীয়তা ও কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করেন ভারতের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালক লে.
চীনা দূতাবাসের ডিফেন্স অ্যাটাশেকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তুরস্ককে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা জানায়, ডিফেন্স অ্যাটাশের বদলে কোনো তরুণ কর্তা অনুষ্ঠানে যেতে পারেন। ভারত তাতে সম্মত হয়নি। চীন ও তুরস্ক দুই দেশই পাকিস্তানের বড় রপ্তানিকারক।
ভারত–পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘অপারেশন সিঁদুর’ যে এখন থেকে নতুন স্বাভাবিকতা বা ‘নিউ নর্মাল’ হয়ে উঠেছে, জেনারেল রানা বিদেশি অতিথিদের তা জানান। তিনি দাবি করেন, ভারত যে ৯টি ঘাঁটিতে ৭ মের ভোরে আক্রমণ চালিয়েছে, সেগুলোর প্রতিটিই ছিল ‘সন্ত্রাসীদের’ ঘাঁটি। চিহ্নিত লক্ষ্যবস্তুর বাইরে ভারত কোথাও আক্রমণ চালায়নি।
এই সভায় ভারতের নিজের তৈরি ‘আকাশ’ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ও ‘ব্রক্ষ্ম’ সুপারসোনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র কতটা কার্যকর, সেনাকর্তারা বিদেশি অতিথিদের তা ব্যাখ্যা করেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁ অডিটোরিয়াম সংস্কারের নামে অর্থ লোপাটের অভিযোগ
সোনারগাঁ উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে সরকারি অর্থ তছরূপের অভিযোগ উঠেছে। নামে বেনামে প্রকল্প তৈরি করে অতিরিক্ত বিল ভাউচার এমনকি কখনো কখনো কাজ না করেই চলছে হরিলুট।
সম্প্রতি উপজেলা অডিটরিয়ামের সংস্কার কাজে বাজারমূল্য থেকে কয়েকগুণ বেশি দামে কাজের বিল পাস করানোর তথ্য পাওয়া গেছে। এমনকি কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারকে ছাড়াই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা ইসলামের নির্দেশে উপজেলা প্রকৌশলী নিজ তত্বাবধানে কাজ সম্পন্ন করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ২০২৪–২৫ অর্থবছরের (স্কিম কোড ৩৬.৭০৪.২৫.১০২.১২) প্রকল্পের আওতায় মঞ্চের দেয়াল ও ব্যাক ওয়ালে প্যানেলিং, মঞ্চের সিলিং জিপসাম বোর্ডে, ভিআইপি চেয়ার, ছোফা, লোহার ফ্রেমের চেয়ার, খঊউ স্ট্রিপ লাইট, সাউন্ডস সিস্টেমসহ অন্যান্য কাজের ব্যয়ের হিসাব ধরা হয়েছে বাস্তবতার চেয়ে বহুগুণ বেশি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, অডিটোরিয়ামের অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জা ও সংস্কার কাজে ব্যবহারের জন্য ২০০ টি ভিজিটর চেয়ারের মূল্য ধরা হয়েছে ১০ লক্ষ ৫৫ হাজার ২৪৪ টাকা। যেখানে ১টা চেয়ারের মূল্য পরছে ৫,২৭৬.২২ টাকা। ৫ টি সোফার মূল্য ধরা হয়েছে ২,৫৭,৬৭৫/- টাকা, যেখানে ১টি সোফার মূল্য পরে ৫১,৫৩৫/- টাকা। মালামালে বাজার দর থেকে কয়েক গুন বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে।
যা ২০১৯ সালের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আবাসিক এলাকা নির্মাণে বালিশ ক্রয়ে যে ব্যয় করা হয়েছিল তার চেয়ে কম নয়। এই অভিযোগ ও অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের অভিযান করা হলে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো দেশে রূপপুর বালিশ কেলেঙ্কারি নামে আরেকটা ঘটনা পরিচিতি লাভ করতে পারে।
স্থানীয় ঠিকাদার ও বাজার সংশ্লিষ্টদের দাবি, বাজারে এসব উপকরণের প্রকৃত দাম নথিতে উল্লেখিত অঙ্কের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এমনকি উচ্চমানের উপকরণ ব্যবহার করলেও নির্ধারিত খরচের সাথে বাস্তব দামের বিশাল ফারাক রয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেছেন। উল্লেখিত দাম বর্তমান বাজারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলেও দাবি সংস্লিষ্টদের।
তারা আরও দাবি করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমান টেন্ডারবাজি করেন। ঠিকাদারদের কাজ নিয়ে নিজেই লোক দিয়ে কাজ করান। ফলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা রহমানের সরকারি বাসভবন, সরকারি কোয়াটার, পুকুরের সাইড ও শিশুদের খেলার যায়গা সংস্কারেও অর্থ লোপাটের বিষয় আছে। সঠিক তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে। এছাড়াও অনেক প্রকল্পের কাজ না করেই অর্থ লোপাটের ঘটনায় সংবাদ মাধ্যমে খবর হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ধরনের অতিরিক্ত মূল্য ধরা হলে সরকারি অর্থ অপচয়ের ঝুঁকি থাকে এবং সঠিক তদারকি না হলে অর্থ লোপাটের সম্ভাবনাও থাকে।
এ বিষয়ে এ কাজের ঠিকাদার মারদ ট্রেডার্স এর কর্ণধার ফারুক আহমাদ বলেন, ত্রিশ লাখ টাকার এই কাজ আমি ১০% লেস এর পর ২৭ লাখ টাকায় সোনারগাঁ অডিটোরিয়াম সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ শেষ করে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার আলমগির স্যারকে বুজিয়ে দিয়েছি।
তারপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা ইসলাম আমার বিল পাস করেন। এখানে অতিরিক্ত বিল ভাউচার বা কাজ ঠিক-বেঠিক বিষয়টা আপনি সাংবাদিক দেখে কি করবেন? যারা দেখার তারা দেখেই আমার বিল পাস করছে।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার আলমগির হোসাইন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি নয়।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সোনারগাঁ অডিটোরিয়াম সংস্কারে কোন প্রকার দূর্নীতি হয়নি। এ কাজের বিল পাস দিয়েছি আমি।
কাজেই আমি এ কাজের খোঁজখবর করেই দিয়েছি। আমি আপনাদের সহযোগীতা করতে পারব না। আপনারা আপনাদের মতো অনুসন্ধান করেন।