বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগর ভবন অবরোধ করে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন তার সমর্থকরা। 

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল থেকে নগর ভবনের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন গেইট অবরুদ্ধ করে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নগর ভবনে ঢুকতে পারছেন না। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা নিতে আসা লোকজন। গতকালও ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে নগর ভবন প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন কয়েকশ মানুষ। 

বিক্ষোভকারীরা জানান, আদালতের রায় এবং নির্বাচন কমিশনের গেজেট প্রকাশের পরও ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না।  

বিক্ষোভের কারণে গুলিস্তান মাজারের দিক থেকে বঙ্গবাজারে চলাচলরত যান বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ ও অফিসগামী যাত্রীরা।

এক বিক্ষোভকারী বলেন, “আমরা এখানে দলমত নির্বিশেষে এসেছি। হাজার হাজার মানুষ আজ রাস্তায় নেমেছে। আমাদের একটাই দাবি, মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হোক।” 

আরেকজন বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি। কিন্তু আমাদের দাবি উপেক্ষা করা হলে প্রয়োজনে আরো কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।”

সজিব হোসেন নামে এক বিক্ষোভকারীর দাবি,  “এই জটিলতা শুধু প্রশাসনিক নয়, এর পেছনে রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশও রয়েছে। শপথ গ্রহণ বিলম্বের ফলে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।” 

বিক্ষোভকারী বংশালের সোলায়মান মাসুদ জানান, যতদিন ইশরাক হোসেনকে শপথ করানো না হবে, ততদিন তাদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে। প্রয়োজনে তারা ঢাকাজুড়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ডিএসসিসির এক কর্মকর্তারা বলেন, “আইন অনুযায়ী সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব নয়। তবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
গত ২৭ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নতুন মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের নাম ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ পাওয়ার পর এই গেজেটে প্রকাশ করেছে ইসি। এর আগে ২৭ মার্চ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২০২০ সালের নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণার ফল বাতিল করে বিএনপি নেতা ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো.

নুরুল ইসলাম।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হয়। তাতে উত্তরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম এবং দক্ষিণে ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ২০২০ সালের ৩ মার্চ মামলা করেছিলেন ইশরাক।

ঢাকা/আসাদ/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইশর ক হ স ন নগর ভবন

এছাড়াও পড়ুন:

এস আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগসংক্রান্ত আদেশ স্থগিত

এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মো. সাইফুল আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এ–সংক্রান্ত মেমো স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী ও বিচারপতি রাজিউদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন।

এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ২০২০ সালের ১৯ জুলাই এক মেমোতে জানায়, সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব গ্রহণের কারণে সাইফুল আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের আবেদন সরকার মঞ্জুর করেছে। এর বৈধতা নিয়ে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পক্ষে চলতি মাসে রিটটি করা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবদুল্লাহ আলম মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।

পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম প্রথম আলোকে বলেন, প্রতারণামূলক উদ্দেশ্য থেকে সাইফুল আলম (এস আলম) ২০২০ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন; যাতে দেশ থেকে নিয়ে যাওয়া টাকা দিতে না হয় এবং ভবিষ্যতে সিঙ্গাপুরের নাগরিক দাবি করে সুরক্ষা পেতে পারেন। নিজেকে সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে দাবি করে তিনি আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে গিয়েছেন। অসৎ উদ্দেশ্যে তাঁর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। সাইফুল আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগের বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে মেমো দিয়ে মঞ্জুর করেছিল, তা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। ফলে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বহাল থাকছেন।

জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী আরও বলেন, ২০২০ সালে নাগরিকত্ব ত্যাগ করলেও বিভিন্ন ঋণসংক্রান্ত নথি–তথ্যাদিতে এস আলম নিজেকে বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে দাবি করছেন দেখা যাচ্ছে। আবার সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে আন্তজাতিক সালিসি আদালতে গিয়ে বাংলাদেশে তাঁর বিনিয়োগের সুরক্ষা চাচ্ছেন। তাঁর কাছে ইসলামী ব্যাংকের পাওনা এক হাজার কোটির বেশি টাকা।

সিঙ্গাপুর থেকে সাইফুল আলমকে কূটনৈতিক মাধ্যমে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি এবং গ্রাহকদের টাকা পরিশোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয় ও পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—এ বিষয়ে রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আবদুল কাইয়ূম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জ্ঞান থেকে মানবকল্যাণ 
  • এস আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগসংক্রান্ত আদেশ স্থগিত