বেনাপোল বন্দরে কলমবিরতি, ভারত থেকে ঢোকার অপেক্ষায় ৪৫০ ট্রাক
Published: 15th, May 2025 GMT
যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের কলমবিরতিতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ আছে। এতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি পণ্য নিয়ে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে ৪৫০টি ট্রাক।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ জারির প্রতিবাদে কলমবিরতির দ্বিতীয় দিনে আজ বৃহস্পতিবারও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে কোনো ধরনের কার্যক্রম চলছে না। সকাল ৯টা থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকাংশই নিজেদের কার্যালয়ে বসেননি। ফলে আমদানি-রপ্তানি ও পণ্য ওঠানো-নামানোসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ আছে। আজ বেলা ৩টার পর বিরতি শেষে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
এর আগে গতকাল বুধবার প্রথম দিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কলমবিরতি চললেও আজ আরও দুই ঘণ্টা বাড়িয়ে বেলা ৩টা পর্যন্ত করা হয়েছে। ফলে দুই দিন ধরে বন্দরটির কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। আজ সকাল ৯টার দিকে বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো কাজ করতে দেখা যায়নি। তাঁরা আমদানি-রপ্তানির কোনো ফাইলে সই করেননি। সেই সঙ্গে পণ্যের চালান মূল্যায়ন (অ্যাসেসমেন্ট), পরীক্ষণ ও কার পাস বন্ধ আছে। এসব কারণে বন্দরের ভেতরে পণ্য ওঠানো-নামানোরও কার্যক্রমও বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে ওপারে ভারতে পণ্যবাহী যানবাহনের জট বাঁধতে শুরু করেছে।
বেনাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে ৪০০-৪৫০টি ট্রাকে পণ্য আমদানি হয়। কর্মদিবসের ছয় ঘণ্টা কার্যক্রম বন্ধ থাকলে তো পণ্যের জট বাঁধবেই। বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের পণ্যবোঝাই ৪৫০টির বেশি ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। বেলা ৩টার পর কাজ শুরু হলে আজ হয়তো একটু বেশি রাত পর্যন্ত কার পাস চালু রাখার বিষয়ে কাস্টমস কর্মকর্তাদের অনুরোধ করব। তাতে আমরা হয়তো পণ্যের জট কমিয়ে আনতে পারব।’
একই কথা জানান বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার মো.
ঢাকার এনবিআর ভবনসহ সারা দেশে কাস্টমস, ভ্যাট ও শুল্ক কার্যালয়ে তিন দিন কলমবিরতি কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। দেশের সব কর অঞ্চল, ভ্যাট ও শুল্ক কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ কর্মসূচি পালন করছেন। তিন দিনের এ কলমবিরতি শুরু হয়েছে গতকাল থেকে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
তিন দিন কলমবিরতি পালনের ঘোষণা দিলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
ঢাকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভবনসহ সারা দেশে কাস্টমস, ভ্যাট ও শুল্ক কার্যালয়ে তিন দিন কলমবিরতি কর্মসূচি পালন করবেন সব কর অঞ্চল, ভ্যাট ও শুল্ক কার্যালয়ের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। তাঁরা আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত কলমবিরতি পালন করবেন।
এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ এবং ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে নতুন দুটি বিভাগ গঠনের পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআরের আওতাধীন কর অঞ্চল, ভ্যাট ও শুল্ক কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কলমবিরতি কর্মসূচি ঘোষণা করেন। আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার আগারগাঁওয়ে এনবিআর কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ’–এর ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচিটি অনুষ্ঠিত হয়।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে জানানো হয়, সারা দেশের কাস্টমস, ভ্যাট ও শুল্ক কার্যালয়গুলোতে তিন দিন কলমবিরতির সময় আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, বাজেট ও রপ্তানি এই তিনটি কার্যক্রম চালু থাকবে। তবে এই সময়ে বাকি সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানান কর্মকর্তারা।
এনবিআর কার্যালয়ের সামনে আজ মঙ্গলবার বিকেল সোয়া চারটায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ আগে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান কার্যালয় ত্যাগ করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন এনবিআরের কর শাখার যুগ্ম কমিশনার মোনালিসা শারমিন ও উপকমিশনার শাহ মোহাম্মদ এলাহী এবং কাস্টমস শাখার অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু।
কর্মসূচিতে যুগ্ম কমিশনার মোনালিসা শারমিন বলেন, অধ্যাদেশ জারির প্রক্রিয়ায় কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মতামত প্রতিফলিত হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা আলোচনার সুযোগ চাইলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে একতরফাভাবে। দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর ভিত্তি মজবুত করতে হলে জনবান্ধব ও অংশগ্রহণমূলক সিদ্ধান্ত জরুরি।
ঐক্য পরিষদের তরফ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করেন এনবিআরের শুল্ক ও আবগারি শাখার অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার। তিনি বলেন, ‘আমরা এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এখানে একত্র হয়েছি। অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা না করে হঠাৎ জারি করা অধ্যাদেশ গ্রহণযোগ্য হবে না।’
অবিলম্বে অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবি জানিয়ে সাধন কুমার বলেন, ‘এনবিআর সংস্কার পরামর্শ কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে সেটি প্রকাশ্যে আনা হোক। সেই প্রতিবেদনের আলোকে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। তাতে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না।’