কাকরাইলে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, আশপাশে তীব্র যানজটে ভোগান্তি
Published: 15th, May 2025 GMT
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবারে স্বাভাবিক সময়ই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট তুলনামূলক বেশি থাকে। এর মধ্যে কাকরাইল মোড়ে সড়ক অবরোধ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। এতে আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন। আন্দোলনে কাকরাইল গির্জার সামনের মোড় থেকে কাকরাইল মসজিদ মোড় হয়ে মৎস্য ভবন মোড় পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়েছে। এর ফলে কোনো যানবাহন কাকরাইল মোড় থেকে সরাসরি হেয়ার রোড দিয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হয়ে বাংলামোটরের দিকে কিংবা মৎস্য ভবন মোড় দিয়ে শাহবাগ বা গুলিস্তানের দিকে যাতায়াত করতে পারছে না।
এর ফলে যানবাহনের চাপ বেড়েছে বীর উত্তম শামসুল আলম সড়ক, মগবাজার রোড, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, বীর উত্তম জিয়াউর রহমান সড়ক ও ভিআইপি রোডে। প্রতিটি সড়কে দীর্ঘক্ষণ যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে গাড়িগুলোকে।
ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা জানিয়েছেন, কাকরাইলে সড়ক অবরোধের কারণে আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অফিসগামী লোকজনকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। দুপুরের পর থেকে যানজট আরও তীব্র হচ্ছে।
মালিবাগের উদ্দেশে মিরপুর ১১ নম্বর থেকে মেট্রোরেলে করে প্রেসক্লাবের সামনে নামেন আসাদুল ইসলাম। সেখান থেকে তিনি রিকশা নিয়েছিলেন গন্তব্যে যেতে। কিন্তু ভেতরের রাস্তায় রিকশায় তাঁকে আধা ঘণ্টার বেশি সময় যানজটে বসে থাকতে হয়। পরে রিকশা থেকে নেমে হাঁটা শুরু করেন তিনি।
রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের চিত্র.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আত্মগোপনে থাকা আ.লীগ নেতা বেন্টু ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আত্মগোপনে থাকা আজিজুল আলম বেন্টু (৫৩), তার স্ত্রী গৃহবধূ নাসিমা আলম (৪৮) ও ছেলে রুহিত আমিনের (২৯) বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই আজিজুল আলম বেন্টু আত্মগোপনে রয়েছেন।
রোববার সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন।
মামলার বাদী আমির হোসাইন জানান, আজিজুল আলম বেন্টু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একচেটিয়া বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। অল্প টাকায় বালুমহাল ইজারা নেওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। বালুমহাল থেকেই তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও বিপুল সম্পদের মালিক তার স্ত্রী গৃহবধূ নাসিমা আলম (৪৮) ও ছেলে রুহিত আমিন (২৯)।
দুদক জানায়, তার পরিবারের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু হয় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। আজিজুল আলম বেন্টু, তার স্ত্রী নাসিমা আলম ও ছেলে রুহিত আমিনের নামে দুদক ৩৬টি দলিলে ৯ দশমিক ৪০০৮১৮৯ একর জমির সন্ধান পেয়েছে। অনুসন্ধানে তাদের ১৮ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।
সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করে দুদককে ৭ কোটি ৬৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৫ টাকার সম্পদের বিবরণ দেওয়া হয়। ফলে আয়বর্হিভূত ১০ কোটি ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেখা যায়।
অনুসন্ধানকালে দুদক দেখেছে, বেন্টুর স্ত্রী নাসিমা আলম একজন গৃহিনী হলেও তার নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ২০২৩-২৪ করবর্ষে নাসিমা আলমের দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৭ টাকার। অনুসন্ধানকালে নাসিমা আলমের আয়ের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। স্বামী বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার নিজের আয়কর ফাইলে দেখিয়ে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ছেলে রুহিত আমিনের পেশা ছাত্র হলেও তার নামেও আয়কর নথি খোলা হয়েছে।
২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, তার নামে মোট সম্পদ ৭৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ টাকার। তারও আয়ের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। বাবা বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তার আয়কর ফাইলে দেখিয়ে নিজ নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। আয়কর নথিতে দেখা যায়, বেন্টু তার স্ত্রী এবং ছেলেকে গাড়ি কেনার জন্য ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকাও দিয়েছেন।
দুদক বলছে, নাসিমা আলম তার স্বামী আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। একইভাবে ছেলে রুহিত আমিনও তার বাবা আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত অবৈধ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। এসব অবৈধ সম্পদ নিজেদের নামে রেখে ও ভোগদখল করে তারাও অপরাধ করেছেন। তাই মামলায় বেন্টুর স্ত্রী-ছেলেকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, ‘মামলটি দায়ের করার পর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে নথি পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।’