স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের কিছু পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত
Published: 17th, May 2025 GMT
নিজেদের স্থলবন্দর দিয়ে বাংদেশের তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং ফলমূলসহ বেশ কয়েক ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত। অর্থাৎ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্য ভারতে ঢুকতে পারবে না।
শনিবার ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশটির বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর (ডিজিএফটি) এক প্রজ্ঞাপনে এ ঘোষণা দিয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘোষণা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে ভারত। বাংলাদেশ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধ করার প্রায় এক মাস পর এমন পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। তবে ভারত হয়ে নেপাল ও ভুটানে যেসব পণ্য রপ্তানি করা হবে সেগুলোর ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।
ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তরের ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে শুধু নভা শেভা এবং কলকাতা সমুদ্র বন্দর দিয়ে পোশাক জাতীয় পণ্য রপ্তানির করা যাবে। তবে কোনো স্থলবন্দর দিয়ে করা যাবে না। এছাড়া ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি স্থলবন্দর দিয়ে ফল, ফলের ফ্লেভারের পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য (চিপস, স্ন্যাকস, কনফেকশনারি, বেকারি পণ্য), তুলা, তুলা ও সুতার বর্জ্য, প্লাস্টিক, পিভিসি পাইপ, ফানির্চার আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব স্থলবন্দর হলো ভারতের মেঘালয়, আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরামের যেকোনো স্থলবন্দর এবং পশ্চিমবঙ্গের চেংড়াবান্দা।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, মাছ, ভোজ্যতেল, এলপিজি ও ভাঙা পাথর ওই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রপ্তানির অন্যতম শীর্ষ কোম্পানি প্রাণ গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল সমকালকে বলেন, ভারতের এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রপ্তানিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। প্রাণ গ্রুপ মূলত স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পণ্য রপ্তানি করে। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় আমাদের রপ্তানির ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কেননা সমুদ্র বা আকাশ পথে পণ্য রপ্তানি অনেক ব্যয়বহুল।
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল সমকালকে বলেন, এমন হটকারী সিদ্ধান্ত স্বভাবতই দুই দেশের মাঝে বাণিজ্যিক সম্পর্ক কিছুটা হলেও আরও অবনতি করবে। বিশ্ব বাণিজ্য যখন বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ঠিক তখন এ ধরণের পাল্টাপাল্টি বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত উভয়েরই ক্ষতির মাত্রা বাড়াবে। বাংলাদেশি পোশাক এখন থেকে ভারতে যেতে আগের চেয়ে আরও বেশি সময় লাগবে, খরচও বাড়বে। এর ফলে ভারতে কিছুটা হলেও রপ্তানি কমবে। ভারতে বাংলাদেশ গড়ে বছরে ভারতে ৫০ কোটি ডলার পোশাক রপ্তানি করে।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু ভারত বাংলাদেশের অন্যতম ক্রেতা এবং সেদেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়তির দিকে ছিল, সেহেতু এই সিদ্ধান্ত কিছুটা হলেও আমাদের চিন্তার কারণ হলো। যদিও ভুটান বা নেপালে ভারতের স্থরবন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি, তবুও সামগ্রিকভাবে ব্যবসায়িক সম্পর্কে ক্ষতির প্রভাব পড়বে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে পরামর্শ সভা
সাতক্ষীরায় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের নিয়ে স্থানীয়দের চাহিদা নিরুপনে নির্বাচনী ইশতেহার-২০২৫ শীর্ষক উপজেলা পর্যায়ে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিডো এর আয়োজনে এবং একশনএইড বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
পূজার ছুটির পর গকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অভিষেক
নিবন্ধন পাচ্ছে এনসিপিসহ ২ দল
সিডো সাতক্ষীরার প্রধান নির্বাহী শ্যামল কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে কর্মসূচির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন, প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. তহিদুজ্জামান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভার কাউন্সিলর শফিক-উ-দ্দৌলা সাগর, টিআইবি সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি হেনরী সরদার, একশনএইড প্রতিনিধি সুইট খান, ইয়ূথ সভাপতি সাকিব হাসান, প্রোগ্রাম অফিসার চন্দ্র শেখর হালদার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাতক্ষীরা জেলার রাস্তা-ঘাটের অবস্থা অনেক শোচনীয়। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে রাস্তা-ঘাটের সংস্কার খুব জরুরি। সুন্দরবন কেন্দ্রিক টেকসই ইকোটুরিজম প্রতিষ্ঠা, সুন্দরবনের পরিবেশ ও সম্পদ সংরক্ষণ ও পর্যটন বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই ইকোটুরিজম ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সাতক্ষীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা জেলার শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষা সুবিধা দেবে।
তারা বলেন, রেল সংযোজন সাতক্ষীরা জেলা দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে বৈষম্যের শিকার। সাতক্ষীরাকে দেশের রেল নেটওয়ার্কে অন্তভুক্ত করতে হবে, যা জেলা ও দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় উপকূলীয় এলাকায় দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়া সাতক্ষীরায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম ও ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ, সীমান্তে মাদক প্রতিরোধে প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারী ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি, স্থলবন্দরকে পূর্নাঙ্গ বন্দরে রুপান্তর, সাতক্ষীরার ভোমরাকে একটি আধুনিক আন্তর্জাতিক মানের স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি, নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে কার্যকর পৌরসভার ব্যবস্থাপনা, সুন্দরবন বাঁচাতে জীবশ্ম জ্বালানীকে পরিবর্তে নবায়ন যোগ্য জ্বালানী সংযোজন, জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল কৃষি ব্যবস্থাপনা, সবুজ উদ্যোক্তা তৈরির জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণাগার তৈরি, প্রাণ সায়ের খালের দুই ধার সৌন্দর্যবর্ধন, যুবদের মুক্ত চিন্তা, উন্নয়ন ভাবনা ও নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য শিক্ষালয় কেন্দ্রিক যুববান্ধব স্পেস তৈরি ও কার্যকর করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলেন বক্তারা।
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী