বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যে স্থলপথে আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে কী ধরনের প্রভাব পড়বে—তা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

পোশাক রপ্তানিতে কী ধরনের ক্ষতি হবে?

স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় খরচ ও সময়—দুইই বাড়বে। স্থলবন্দর দিয়ে পোশাক রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতের চেন্নাই ও মুম্বাই বন্দরে পণ্য খালাস করে স্থলপথে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে যেতে হবে।

আগে সময় কত লাগত, এখন কত সময় লাগবে?

বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের দায়িত্ব হলো, ভারতীয় সীমান্তের স্থলবন্দর পর্যন্ত পণ্যের চালান পৌঁছে দেওয়া। এত দিন ৩–৪ দিন সময় লাগত বেনাপোল হয়ে পেট্রাপোল সীমান্তে পৌঁছে দিতে। এখন চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজে ওঠা পর্যন্ত পৌঁছে দিতে হবে। সব মিলিয়ে সময় লাগবে এক সপ্তাহের মতো। খরচও একটু বাড়বে।

এখন তাহলে পণ্য কীভাবে যাবে?

এখন তৈরি পোশাকের চালান প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ভারতের মুম্বাই বন্দর (নভ সেবা বন্দর) যাবে। তারপর সেই বন্দর থেকে আমদানিকারক পণ্য খালাস করে নিজ গন্তব্যে নিয়ে যাবেন। সড়ক বা রেলপথে তিনি পণ্য নিতে পারেন। এতে আমদানিকারকেরও সময় ও ব্যয় বেশি হবে।

তৈরি পোশাকের চালান কলকাতায় যাবে কীভাবে?

নতুন বিধিনিষেধ আরোপের ফলে কলকাতার নিকটবর্তী বেনাপোল বন্দর দিয়ে পোশাকের চালান নেওয়া যাবে না। তাই এখন তৈরি পোশাকের চালান প্রথম চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ভারতের মুম্বাই বন্দরে যাবে। সেখান থেকে কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গে আনতে হবে। কিন্তু এটি বেশ সময় ও খরচসাপেক্ষ। এর বিকল্প রুট আছে। বাংলাদেশের পানগাঁও বা মোংলা বন্দর থেকে ভারতের কলকাতার হলদিয়া বন্দর পর্যন্ত পণ্য আনা-নেওয়ার সুযোগ আছে। ছোট ছোট বার্জে করে ১০-২০ কনটেইনারে পোশাক রপ্তানি করা যাবে।

ভারতের এমন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে আপনার মত কী?

আমি মনে করি, এটি দুই দেশের পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের অংশ। এর আগে ভারত বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ করেছে। পরে বাংলাদেশ স্থলপথে সুতা আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করল। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে স্থলপথে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত।

এতে পোশাক খাতের বড় কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ, বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানিতে ভারতের অংশীদারত্ব খুব কম। তবে এই ধরনের পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দুই দেশের নাগরিকেরা। দুই দেশের সরকার আলোচনার মাধ্যমে এই ধরনের সমস্যার সমাধান করতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ধ ন ষ ধ আর প স থলপথ কলক ত ধরন র আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

হিলি বন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো ভারতে জুস রপ্তানি 

প্রথমবারের মতো দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে জুস রপ্তানি হয়েছে। আকিজ গ্রুপ ও হাসেম ফুড নামে দুটি কোম্পানি এসব জুস রপ্তানি করে।

বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১০ মেট্রিকটন জুস বোঝাই একটি কাভার্ডভ্যান ভারতে প্রবেশ করে। ভারতের দিপালী এন্টারপ্রাইজ ও সুকন ডিংকস নামের দুটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসব জুস আমদানি করেছে।

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি রাশেদ ফেরদৌস বলেন, “গত মঙ্গলবার এই বন্দর দিয়ে প্রথম ১০টন জুস রপ্তানি হয়েছে। আজও দুটি প্রতিষ্ঠান জুস রপ্তানি করেছে। আমাদের সাথে আরো কোম্পানি যোগাযোগ করছে বিভিন্ন পণ্য আমরা রপ্তানি করব। গত দুইদিনে দুই ট্রাকে প্রায় ২০ টন অর্থাৎ ২ হাজার কার্টন জুস রপ্তানি করা হয়েছে। যার রপ্তানি মূল্য প্রায় ১৮ হাজার ডলার। এসব যাচ্ছে ভারতের কলকাতায়।”

হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, “চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অর্থ বছরের শেষ পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে কোনো পণ্য রপ্তানি হয়নি। তবে নতুন অর্থ বছরের প্রথমদিন থেকেই ভারতে বেশ কয়টি কোম্পানিতে জুস রপ্তানি করা হচ্ছে। এটা আমাদের দেশের জন্য নিঃসন্দেহে ভালো।”

সম্প্রতি চলতি বছরের গত ১৭ মে বেশকিছু স্থলবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দেয় ভারত সরকার। 

তবে হিলি স্থলবন্দর সেই বিধিনিষেধ এর আওতামুক্ত থাকায় বাংলাদেশের কোম্পানিগুলো এই বন্দর দিয়ে এসব পণ্য ভারতে রপ্তানি করছে।

ঢাকা/মোসলেম/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হিলি বন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো ভারতে জুস রপ্তানি