পোশাকের চালান এখন চট্টগ্রাম থেকে মুম্বাই বন্দরে যেতে হবে
Published: 18th, May 2025 GMT
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যে স্থলপথে আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে কী ধরনের প্রভাব পড়বে—তা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন নিট পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
পোশাক রপ্তানিতে কী ধরনের ক্ষতি হবে?
স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় খরচ ও সময়—দুইই বাড়বে। স্থলবন্দর দিয়ে পোশাক রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতের চেন্নাই ও মুম্বাই বন্দরে পণ্য খালাস করে স্থলপথে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে যেতে হবে।
আগে সময় কত লাগত, এখন কত সময় লাগবে?
বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের দায়িত্ব হলো, ভারতীয় সীমান্তের স্থলবন্দর পর্যন্ত পণ্যের চালান পৌঁছে দেওয়া। এত দিন ৩–৪ দিন সময় লাগত বেনাপোল হয়ে পেট্রাপোল সীমান্তে পৌঁছে দিতে। এখন চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজে ওঠা পর্যন্ত পৌঁছে দিতে হবে। সব মিলিয়ে সময় লাগবে এক সপ্তাহের মতো। খরচও একটু বাড়বে।
এখন তাহলে পণ্য কীভাবে যাবে?
এখন তৈরি পোশাকের চালান প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ভারতের মুম্বাই বন্দর (নভ সেবা বন্দর) যাবে। তারপর সেই বন্দর থেকে আমদানিকারক পণ্য খালাস করে নিজ গন্তব্যে নিয়ে যাবেন। সড়ক বা রেলপথে তিনি পণ্য নিতে পারেন। এতে আমদানিকারকেরও সময় ও ব্যয় বেশি হবে।
তৈরি পোশাকের চালান কলকাতায় যাবে কীভাবে?
নতুন বিধিনিষেধ আরোপের ফলে কলকাতার নিকটবর্তী বেনাপোল বন্দর দিয়ে পোশাকের চালান নেওয়া যাবে না। তাই এখন তৈরি পোশাকের চালান প্রথম চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ভারতের মুম্বাই বন্দরে যাবে। সেখান থেকে কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গে আনতে হবে। কিন্তু এটি বেশ সময় ও খরচসাপেক্ষ। এর বিকল্প রুট আছে। বাংলাদেশের পানগাঁও বা মোংলা বন্দর থেকে ভারতের কলকাতার হলদিয়া বন্দর পর্যন্ত পণ্য আনা-নেওয়ার সুযোগ আছে। ছোট ছোট বার্জে করে ১০-২০ কনটেইনারে পোশাক রপ্তানি করা যাবে।
ভারতের এমন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে আপনার মত কী?
আমি মনে করি, এটি দুই দেশের পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের অংশ। এর আগে ভারত বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ করেছে। পরে বাংলাদেশ স্থলপথে সুতা আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করল। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে স্থলপথে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ভারত।
এতে পোশাক খাতের বড় কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ, বাংলাদেশের মোট পোশাক রপ্তানিতে ভারতের অংশীদারত্ব খুব কম। তবে এই ধরনের পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দুই দেশের নাগরিকেরা। দুই দেশের সরকার আলোচনার মাধ্যমে এই ধরনের সমস্যার সমাধান করতে পারে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ধ ন ষ ধ আর প স থলপথ কলক ত ধরন র আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
লাতিন আমেরিকায় নতুন সামরিক অভিযানের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
লাতিন আমেরিকায় নতুন করে সামরিক অভিযান চালাবে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার এই ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। তাঁর দাবি, লাতিন আমেরিকা থেকে তৎপরতা চালানো ‘মাদক-সন্ত্রাসীদের’ নির্মূল করতে ওয়াশিংটন নতুন অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সম্প্রতি লাতিন আমেরিকার জলসীমায় সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। কিছু সামরিক অভিযানও চালিয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র অঞ্চলটিতে স্থলপথে হামলা চালাতে পারে ও এটা হলে সংঘাতের বিস্তৃতি বাড়বে এ আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই নতুন অভিযানের ঘোষণা দিল ওয়াশিংটন।
পিট হেগসেথ এক্সে দেওয়া পোস্টে লিখেছেন, ‘আজ আমি অপারেশন সাউদার্ন স্পিয়ারের ঘোষণা দিচ্ছি। এ অভিযান আমাদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করবে, আমাদের সীমানা থেকে মাদক-সন্ত্রাসীদের নির্মূল করবে। যেসব মাদক আমাদের মানুষকে মেরে ফেলছে, সেসবের প্রবেশও রোধ করবে।’
অভিযানের ঘোষণা দিলেও কবে থেকে শুরু হবে, সে বিষয়ে কিছুই জানাননি মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এ ছাড়া এই অভিযানের পরিসর কেমন হবে এবং সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকার জলসীমায় যেসব অভিযান চালিয়েছে, সেসব থেকে এর পার্থক্য কী হবে, তা-ও জানানো হয়নি।
নতুন যে অভিযানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে জানতে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল এএফপি। অবশ্য পেন্টাগনের মুখপাত্র মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দেওয়া তথ্য ছাড়া আর কিছু জানাতে রাজি হননি। তবে একাধিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিবিএস এ নিয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় নতুন করে অভিযানের বিস্তারিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে তুলে ধরেছেন মার্কিন সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। এর মধ্যে স্থলপথে হামলা চালানোর বিষয়টি আছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
এদিকে সূত্রের বরাতে রয়টার্স গতকাল শুক্রবার জানায়, ভেনেজুয়েলায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযান কীভাবে চালানো হবে, এ নিয়ে আলোচনা করতে এই সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা তিন দফায় বৈঠক করেন। হোয়াইট হাউসে হওয়া এসব বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, লাতিন আমেরিকায় অভিযান চালাতে যুক্তরাষ্ট্র এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ, পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন মোতায়েন করেছে। পাশাপাশি গত সপ্তাহে ওই অঞ্চলে পাঠিয়েছে মার্কিন বিমানবাহী রণতরি জেরাল্ড ফোর্ড। এই রণতরিতে ৫ হাজার সেনা ও ৭৫টি যুদ্ধবিমান রয়েছে।
মাদক চোরাচালান চক্রের বিরুদ্ধে ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব দিক থেকে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। গত সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ২০টি নৌযানে মার্কিন নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর হামলায় ৭৬ জন নিহত হয়েছেন।