কেরানীগঞ্জে শিশু ধর্ষণের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন, এক লাখ টাকা জরিমানা
Published: 18th, May 2025 GMT
পাঁচ বছর আগে ঢাকার কেরানীগঞ্জে ছয় বছরের মেয়েশিশুকে ধর্ষণের দায়ে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক মুন্সি মো. মশিয়ার রহমান আজ রোববার এ রায় দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এই আদালতের সাঁটলিপিকার (স্টেনোগ্রাফার) শামসুন্নাহার।
রায়ে আদালত আসামির স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিক্রি করে জরিমানার টাকা আদায় করে তা ভুক্তভোগীর পরিবারকে দিতে ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দিয়েছেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম সজীব বেপারী। রায় ঘোষণার পর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলা ও রায়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৫ মে কেরানীগঞ্জের বাসায় ছয় বছরের মেয়েশিশুসহ দুই সন্তানকে বাসায় রেখে কাজে যান বাবা-মা। পূর্বপরিচিত সজীব মেয়েশিশুটিকে নিজের বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মেয়েশিশুটির বাবা বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামি সজীবকে গ্রেপ্তার করে।
শিশুটিকে ধর্ষণের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সজীব।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৯ আগস্ট আদালতে সজীবের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই মামলায় সাতজন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি নেতা খুন: অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী ফেসবুকে লিখলেন ‘আউট’
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে আবুল কালাম (৫০) নামে এক বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খুনের ঘটনায় স্থানীয় ছাত্রদলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে নিহতের পরিবার।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের ৩০ মিনিট পর অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী ক্রিকেট খেলার একটি ভিডিও পোস্ট করেন তার ফেসবুক আইডিতে। ভিডিওটি পোস্ট দিয়ে ফেসবুকে তিনি লিখেন, ‘আউট’। ফেসবুকে তার দেওয়া এই পোস্ট হত্যাকাণ্ডকে ইঙ্গিত করেই দেওয়া বলে অভিযোগ করেছে নিহত কালামের পরিবার।
আরো পড়ুন:
আ.লীগের ‘ঢাকা লকডাউন’: গোপালগঞ্জে আরেক মামলা, আসামি ২৫২
কানের দুল ছিনিয়ে নিতে শিশুকে হত্যা, আটক ২
আবুল কালাম উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অভিযুক্ত কাউছার মানিক বাদল স্থানীয় ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয়। তিনি চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য।
গত বছরের ৭ আগস্ট বিভিন্ন অভিযোগে কাউছারকে বহিষ্কার করে লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রদল। পরে ৩ নভেম্বর তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাউছারের সঙ্গে আবুল কালামের বিরোধ চলে আসছিল।
কাউছার ভিডিওটি পোস্ট করেন তার কে এম বাদল নামের ফেসবুক আইডি থেকে। ভিডিওতে দেখা যায়, গ্রামের কয়েকজন ক্রিকেট খেলছেন। এর মধ্যে একজন রানআউট হয়েছেন। তবে, ভিডিওতে কাউছারকে দেখা যায়নি।
খুনের ঘটনার পরপরই কাউছার এ ঘটনায় জড়িত বলে দাবি করেন নিহত কালামের স্ত্রী ফেরদৌসি আক্তার। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বামীকে খুন হওয়ার পর কাউছারের পোস্ট করা ভিডিওটি কাকতালীয় নয়। এটি হত্যার ঘটনাকে ইঙ্গিত করেই করা হয়েছে।’’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কাউসার মানিক বাদল বলেন, ‘‘ঘটনার সময় আমি লতিফপুর বাজারে ছিলাম। যা ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে। কালাম ভাই বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমার সঙ্গেই বাজারে ছিলেন। এ ঘটনায় আমি কোনোভাবে জড়িত নই।’’
নিজ দলের একজন নেতার মৃত্যুর পর ফেসবুকে ‘আউট’ লিখে ভিডিও দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কাউছার বলেন, ‘‘বাড়ির সামনে ক্রিকেট খেলেছিলাম, সেই ভিডিও দিয়ে আউট লিখেছি।’’
চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসি মো. ফয়েজুল আজীম বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে কাউছার ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার ‘আউট’ লেখা ভিডিওটি পুলিশের নজরে এসেছে। তবে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি।’’
ঢাকা/লিটন/রাজীব