ভারত সরকার বাংলাদেশ থেকে প্লাস্টিকসহ কিছু পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় বাংলাবান্ধা থেকে প্লাস্টিক পণ্যের ট্রাক ফেরত গেছে। ট্রাকটিতে কয়েক লাখ টাকার পিভিসি দরজা ছিল। রোববার বিকেলে ট্রাকটি ফেরত পাঠানো হয়। তবে এই বন্দর দিয়ে নয় ট্রাক প্লাস্টিক দানা ও দশ ট্রাক কটন র‌্যাগস ভারতে রপ্তানি হয়েছে। নেপালে রপ্তানি হয়েছে তিন ট্রাক আলু। 

বন্দর সূত্র জানায়, ভারত ও ভুটান থেকে বোল্ডার পাথর আমদানিনির্ভর বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পণ্য রপ্তানি হয় সীমিত পরিসরে। তবে এই বন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কটন র‌্যাগস, প্লাস্টিক পণ্য ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য সামগ্রী রপ্তানি হয়। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে এসব পণ্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। তবে আমদানিনির্ভর স্থলবন্দরটিতে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ ট্রাক পাথর আমদানি হচ্ছে। এছাড়া নেপালে রপ্তানি হচ্ছে আলুসহ অন্যান্য পণ্য। সর্বশেষ রোববার নয় ট্রাক প্লাস্টিক দানা ও দশ ট্রাক কটন র‌্যাগস রপ্তানি হয়েছে। 

স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সুমন ইসলাম বলেন, আজ ভারতে এক গাড়ি পিভিসি দরজা রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতের ব্যবসায়ীরা সেটা নিচ্ছেন না। তাই বন্দর থেকে এই পণ্য ফেরত পাঠানো হয়েছে।

বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ভারত যেসব পণ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে- সেসব পণ্য এই স্থলবন্দর দিয়ে খুব একটা যায় না। দুই একটি পণ্য গেলেও খুব সীমিত। এজন্য ভারত সরকারের নতুন নিষেধাজ্ঞা এখানে তেমন প্রভাব পড়েনি। আমাদের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম এখনও স্বাভাবিক রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

আগরতলায় কেক–বিস্কুট–চিপস রপ্তানি করতে প্রথমে কলকাতায় পাঠাতে হবে

ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম, আসামসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে বাংলাদেশের বিস্কুট, কেক, চিপস, ফলের ড্রিংকস—এসব পণ্য বেশ জনপ্রিয়। ওই অঞ্চলে বাংলাদেশি ব্র্যান্ড প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের এসব পণ্য বেশ চলে। দিন দিন রপ্তানিও বাড়ছে।

কিন্তু গতকাল শনিবার ভারত সরকার বাংলাদেশের ফলের ড্রিংকস, কার্বোনেটেড ড্রিংকস, বিস্কুট, কেক, চিপস, স্ন্যাক্সের আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম সীমান্তের সব শুল্কস্টেশন এবং পশ্চিমবঙ্গের চেংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ী দিয়ে এসব পণ্য আমদানি বন্ধ করা হয়।

এতে বিপাকে পড়বেন সেভেন স্টার নামে খ্যাত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে রপ্তানিকারকেরা। কারণ, ওই সব রাজ্যে এসব পণ্য পাঠাতে প্রথমে কলকাতা পাঠাতে হবে। পরে পুরো বাংলাদেশের সীমান্ত ঘুরে আসাম, মেঘালয়, করিমগঞ্জ ও আগরতলায় যাবে পণ্যের চালান।

প্রথমে কলকাতা, পরে আগরতলা

প্রাণের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এত দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, মৌলভীবাজারের চাতলাপুর, সিলেটের শেওলা ও তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা, আসাম, মিজোরাম, মেঘালয়ে ফলের ড্রিংকস, কার্বোনেটেড ড্রিংকস, বিস্কুট, কেক, চিপস, স্ন্যাকস রপ্তানি করেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চল যেমন শিলিগুড়ি ও কুচবিহারের মতো এলাকায় লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছে। প্রাণের কারখানা থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ওই পাড়ে আমদানিকারকের গুদামে পৌঁছাতে এক দিনের মতো সময় লাগে। তবে কোনো পণ্যের চালান যদি পরীক্ষা করতে হয়, তাহলে পাঁচ থেকে ছয় দিন লাগে।

নতুন ব্যবস্থায় সেভেন সিস্টারে ওই সব পণ্য স্থলপথে পাঠাতে হলে সাতক্ষীরার ভোমরা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরই ভরসা। এর মানে, ফলের ড্রিংকস, কার্বোনেটেড ড্রিংকস, বিস্কুট, কেক, চিপস, স্ন্যাকস এসব পণ্য আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়ে পাঠাতে হলে প্রথমে পণ্যের চালান পশ্চিমবঙ্গে তথা কলকাতা যাবে। পরে কলকাতা থেকে সড়ক বা রেলপথে প্রায় ১ হাজার ২০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ওই পণ্য যেতে হবে ত্রিপুরার আগরতলায়। অবশ্য আসামের গুয়াহাটি, করিমগঞ্জ কিংবা মেঘালয়ের শিলংয়ে পণ্যের চালান পাঠাতে আরও কম পথ পাড়ি দিতে হবে।

এ ছাড়া সমুদ্রপথে পণ্য পাঠাতে হলে চট্টগ্রাম বন্দর বা মোংলা বন্দর থেকে কলকাতার হলদিয়া বন্দরে পাঠাতে হবে। তারপর সেখান থেকে সেভেন সিস্টার রাজ্যে নিয়ে যেতে হবে।

এ বিষয়ে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল প্রথম আলোকে বলেন, কলকাতা হয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে পণ্য পাঠাতে কমপক্ষে ১০ দিন সময় লাগবে। এতে আগরতলার আমদানিকারকেরা এত ঘোরা পথে পণ্য নেবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ, সীমান্তের ওপারে পণ্য পৌঁছানোর পর সব খরচ আমদানিকারকের। ফলে ওই আমদানিকারকেরা এত পরিবহন খরচ দিয়ে কতটা প্রতিযোগীসক্ষম থাকতে পারবেন, তা নিয়ে শঙ্কা আছে।

জানা যায়, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ প্রতিবছর ভারতে পাঁচ কোটি ডলারের ফলের ড্রিংকস, কার্বোনেটেড ড্রিংকস, বিস্কুট, কেক, চিপস, স্ন্যাকস রপ্তানি করে থাকে। এর মধ্য প্রায় দুই–তৃতীয়াংশ রপ্তানি হয় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যে। এখন পুরো বাজারটি ঝুঁকির মধ্যে পড়ল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের বিধিনিষেধে বন্দরে বন্দরে আটকা বাংলাদেশি পণ্যের ট্রাক
  • ভারতে রপ্তানি কত, বিধিনিষেধের কী প্রভাব পড়বে, বাংলাদেশ ভারতের কত বড় বাজার
  • তৈরি পোশাকবোঝাই ৩৬টি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে আটকে আছে
  • বেনাপোল বন্দরে আটকা গার্মেন্টস পণ্য বোঝাই ৩৬ ট্রাক
  • আগরতলায় কেক–বিস্কুট–চিপস রপ্তানি করতে প্রথমে কলকাতায় পাঠাতে হবে
  • পোশাকের চালান এখন চট্টগ্রাম থেকে মুম্বাই বন্দরে যেতে হবে
  • স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করল ভারত
  • স্থলপথে বাংলাদেশি কিছু পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ করল ভারত
  • স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের কিছু পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত