বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যে নতুন করে অস্বস্তি
Published: 19th, May 2025 GMT
স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ কিছু পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞায় দুই দেশের বাণিজ্যে নতুন করে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা ভারতের সিদ্ধান্তকে অশুল্ক বাধা হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, ভারতের এ সিদ্ধান্তে সে দেশের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি কমবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানিও প্রভাবিত হবে। ভারতে বাংলাদেশ রপ্তানি করে যে পরিমাণ আয় করে, তার বিপরীতে ভারতের রপ্তানি পাঁচ গুণ।
গত শনিবার ভারত সব স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করার আদেশ জারি করে। এর বাইরে আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের সব শুল্ক স্টেশন ব্যবহার করে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, পানীয়, ফার্নিচার, প্লাস্টিক পণ্যসহ কয়েকটি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এসব পণ্য পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়িয়া স্টেশন থেকেও রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়। ভারতের সিদ্ধান্তের পর ইতোমধ্যে কোনো কোনো স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশনে আটকে গেছে রপ্তানিমুখী পণ্যবাহী ট্রাক।
জানা গেছে, ভারত আমদানি নিষিদ্ধ করার পর বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রাণ গ্রুপের রপ্তানির ১৭ ট্রাক পণ্য পাঠানোর প্রক্রিয়া আটকে গেছে। এক কোটি টাকা মূল্যের এসব ফুড ড্রিংকস ও কনফেকশনারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার ও মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
জানতে চাইলে প্রাণ গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল সমকালকে বলেন, দুপুরে পণ্যগুলো বুড়িমারী বন্দর দিয়ে ভারতে যাওয়ার কথা ছিল। তবে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত এসব পণ্য আমদানির যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, তা জেনেছেন আগের রাতে। এখন পণ্যবাহী ট্রাকগুলো ফেরত আনা ছাড়া উপায় নেই। অন্য কোনো পথ দিয়ে পণ্য পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন কিনা– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনও চিন্তা করা হয়নি। ভারতের আদেশে ভারতের সঙ্গে সাতটি স্থলবন্দরের মধ্যে ভোমরা ও সোনামসজিদের বিষয়ে কিছু বলা নেই। তবে সেভেন সিস্টার্সে এ দুই বন্দর দিয়ে পণ্য পাঠিয়ে লাভ নেই। এখন ১৭ ট্রাক পণ্য নিয়ে চিন্তা নয়। চিন্তা হচ্ছে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে। কারণ, ওই সাত রাজ্যে তাদের পাঁচ থেকে ছয় কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। সরকারকে তারা উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। কারণ এটি শুধু প্রাণ গ্রুপের সঙ্গে সমস্যা নয়, দেশের সমস্যা।
গত এপ্রিলে ভারত তৃতীয় দেশে উড়োজাহাজে রপ্তানি পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করে নেয়। একই মাসে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ভারত স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের পণ্য নেওয়া বন্ধ করল। এ ধরনের পরিস্থিতি দুই দেশের বাণিজ্যে, এমনকি আঞ্চলিক বাণিজ্যে অশনিসংকেত হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
এ বিষয়ে গবেষণা সংস্থা সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান সমকালকে বলেন, দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে পারস্পরিক নির্ভরতা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে উভয় দেশের ভৌগোলিক অবস্থান, অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা এবং আন্তঃসীমান্ত সংযুক্তি এই অংশীদারিত্বকে কৌশলগতভাবে
গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে উভয় পক্ষের কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং তার পাল্টা প্রতিক্রিয়া গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বিশেষত অশুল্ক বাধা আরোপের ফলে যে নতুন সংকট তৈরি হচ্ছে, তা শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য নয়; আস্থার পরিবেশ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকেও হুমকির মুখে ফেলছে।
দুই দেশের বাণিজ্য
বাংলাদেশ ব্যাংক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, ভারত থেকে বাংলাদেশ যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করে, তার তুলনায় রপ্তানি খুবই কম। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত থেকে বাংলাদেশ ৯০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। এর বিপরীতে ভারতে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য। বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ৭৪৩ কোটি ডলারের।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় তৈরি পোশাক। গত অর্থবছরে ভারতে ৫৪ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে। ১৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলারের প্লাস্টিক পণ্য, ৩ কোটি ১৩ লাখ ডলারের তুলা ও তুলা-সুতার ঝুট ও ৬৫ লাখ ডলারের আসবাব রপ্তানি হয়। এসব পণ্যের রপ্তানির বেশির ভাগ সম্পন্ন হতো ভারতের স্থলবন্দর ব্যবহার করে। এখন স্থলবন্দরে বিধিনিষেধ আরোপ করায় রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে খাতসংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন।
বেনাপোলে ৩৬ ট্রাক তৈরি পোশাক আটকে
আমদানি ও রপ্তানি-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রায় ৮০ শতাংশ আমদানি-রপ্তানি হয় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে। এই বন্দর দিয়ে ভারতে দৈনিক ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাকে থাকে তৈরি পোশাক।
গতকাল ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় ৩৬টি গার্মেন্ট পণ্যবোঝাই বাংলাদেশি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে দাঁড়িয়ে ছিল। ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, যেসব পণ্যের এলসি বা টিটি হয়েছে, সেগুলো যাতে আমদানি করা যায়, তার জন্য কাস্টমসে আলোচনা চলছে।
এদিকে, ভারতে ঢুকতে না পেরে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা থেকে পিভিসি ডোরের একটি গাড়ি ফেরত গেছে। তবে বন্দরের অন্য পণ্যের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সুমন ইসলাম বলেন, ভারতে এক গাড়ি পিভিসি ডোর রপ্তানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে ভারতের ব্যবসায়ীরা নিচ্ছেন না। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরেও প্রভাব পড়েছে। কাস্টমস সূত্র জানায়, এ বন্দর দিয়ে মাত্র পাঁচ ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। বেশি রপ্তানি হয় পাটজাত পণ্য। পোশাক রপ্তানি হয় কম। তবে গতকাল কোনো পোশাক রপ্তানি হয়নি। নিষিদ্ধ করা পণ্যের মধ্যে বেশির ভাগ পণ্য আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যায়। রপ্তানি বন্ধে সবকিছু থমকে গেছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। তারা সমস্যার দ্রুত সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।
পরিস্থিতি বুঝে করণীয় ঠিক করা হবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা
এদিকে ভারতের এমন সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ভারতে পোশাক বেশি বড় রপ্তানি হয়। উভয় দেশের ভোক্তা ও ব্যবসায়ীর স্বার্থে রপ্তানি চলমান থাকবে বলে প্রত্যাশা তাঁর।
তিনি বলেন, তার ধারাবাহিকতায় হয়নি। এর ফলে ভারতের ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ভৌগোলিক কারণে দুই দেশ পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। পরিস্থিতি বুঝতে দু-এক দিন লাগবে; এরপর করণীয় ঠিক করা হবে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বাংলাদেশ বাণিজ্য উদারীকরণে বিশ্বাসী। ব্যবসায় অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে কাজ করতে হবে। ভোক্তা ও ব্যবসায়ীর স্বার্থ রক্ষা করাই মূল কাজ। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে ব্যবসা, তাতে ভারতের পাল্লাই ভারী। একদিনে এই বাণিজ্য ঘাটতি কমবে না। এটি দূর করতে বেশ সময় লাগবে।
তিনি বলেন, ভারতের মূল ভূখণ্ডসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের জন্য একটি লাভজনক বাজার। সেখানে তৈরি পোশাক, খাদ্যপণ্য, প্লাস্টিক সামগ্রীর চাহিদা রয়েছে। এ চাহিদা মেটাতে দীর্ঘদিন ধরে স্থলপথে পণ্য প্রবেশ করছে। হঠাৎ করে প্রবেশাধিকার সীমিত হলে তা শুধু ব্যবসায়িক ব্যয় বাড়ায় না; বরং ক্ষতিগ্রস্ত হয় সীমান্তবর্তী ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তা, যারা সরাসরি এই বাজারের সঙ্গে যুক্ত। তৈরি পোশাকের মতো পণ্য দূরবর্তী সমুদ্রবন্দর দিয়ে পাঠাতে পরিবহন খরচ বাড়বে। সময় ও প্রতিযোগিতার দিক থেকে পিছিয়ে পড়বে। এদিকে বাংলাদেশও ভারতের কাছ থেকে আমদানি করা সুতার ওপর নির্ভরশীল, যা দেশের বস্ত্র ও পোশাক খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল। এ আমদানিতে বাধা সৃষ্টিও অভ্যন্তরীণ শিল্প খাতের ব্যয় বাড়ায় ও উৎপাদন ব্যাহত করে। কাজেই এ ধরনের একতরফা এবং হঠাৎ সিদ্ধান্ত পরস্পর নির্ভরশীল দুই দেশের শিল্প খাতের মধ্যে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে এবং দীর্ঘদিনের পারস্পরিক আস্থাকে ক্ষুণ্ন করে। হঠাৎ করে আরোপিত নীতিগত প্রতিবন্ধকতা শুধু ব্যবসায়ীদের জন্যই অনিশ্চয়তা তৈরি করে না, বরং আঞ্চলিক বাণিজ্য ব্যবস্থার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এতে যে সরবরাহ শৃঙ্খলা দীর্ঘ সময় ধরে গড়ে উঠেছিল, তা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককেও অবিশ্বাস ও সংশয়ের পথে ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি থাকে।
তাঁর মতে, পারস্পরিক প্রতিযোগিতা বা ‘শাস্তিমূলক প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে না দেখে, বরং সহযোগিতার ভিত্তিতে সমাধানের পথ খুঁজে বের করাই হবে সময়োপযোগী পদক্ষেপ। দুই দেশই আঞ্চলিক সংহতি, আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির পক্ষে। তাই অশুল্ক বাধার মতো পদক্ষেপগুলোর প্রভাব নিরীক্ষা করে তা দ্রুত পুনর্বিবেচনার উদ্যোগ নিতে হবে।
ব্যবসায়ীরা যা বলছেন
বাংলাদেশ থেকে ভারতে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় তৈরি পোশাক। এ খাতের রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান সমকালকে বলেন, গত কয়েক বছরের চেষ্টায় ভারতে রপ্তানি এক বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হয়েছে, যদিও পরে তা কিছু কমেছে। এখন এই নিষেধাজ্ঞায় বেশ ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। কারণ বড় বড় ব্র্যান্ড ভারতে শোরুম খুলেছে। বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিয়ে তারা ভারতে বিক্রির পাশাপাশি তাদের অন্য দেশের শোরুমেও নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে রপ্তানি করতে গেলে খরচ অনেক বাড়বে। সময় বেশি লাগবে। এতে প্রতিযোগিতার চাপে পড়বেন বাংলাদেশ রপ্তানিকারকরা। বাংলাদেশ কয়েক দিন আগে ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করার পাল্টা হিসেবে ভারত এ পদক্ষেপ নিয়ে থাকতে পারে। তাই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নত করতে এর সমাধান করা দরকার।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি এবং ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি তাসকিন আহমেদ মনে করেন, ভারতের এ সিদ্ধান্ত যতটুকু বাণিজ্যিক, তার থেকে অনেক বেশি রাজনৈতিক ইস্যু। দুই দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে এর সমাধান হতে হবে। তিনি বলেন, ভারতের এ সিদ্ধান্তের ফলে সে দেশে বাণিজ্যে বড় ধরনের সমস্যা হবে। স্থলবন্দর দিয়ে বছরে প্রায় ৭৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়, যার বেশির ভাগই তৈরি পোশাক। এখন স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি না করে মোংলা বন্দর দিয়ে কলকাতায় পাঠানো অনেক সমস্যার।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর ব যবস য় র পর স থ ত আমদ ন ত হ র কর র জন য ধরন র সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
হিলি বন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো ভারতে জুস রপ্তানি
প্রথমবারের মতো দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে জুস রপ্তানি হয়েছে। আকিজ গ্রুপ ও হাসেম ফুড নামে দুটি কোম্পানি এসব জুস রপ্তানি করে।
বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ১০ মেট্রিকটন জুস বোঝাই একটি কাভার্ডভ্যান ভারতে প্রবেশ করে। ভারতের দিপালী এন্টারপ্রাইজ ও সুকন ডিংকস নামের দুটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এসব জুস আমদানি করেছে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি রাশেদ ফেরদৌস বলেন, “গত মঙ্গলবার এই বন্দর দিয়ে প্রথম ১০টন জুস রপ্তানি হয়েছে। আজও দুটি প্রতিষ্ঠান জুস রপ্তানি করেছে। আমাদের সাথে আরো কোম্পানি যোগাযোগ করছে বিভিন্ন পণ্য আমরা রপ্তানি করব। গত দুইদিনে দুই ট্রাকে প্রায় ২০ টন অর্থাৎ ২ হাজার কার্টন জুস রপ্তানি করা হয়েছে। যার রপ্তানি মূল্য প্রায় ১৮ হাজার ডলার। এসব যাচ্ছে ভারতের কলকাতায়।”
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, “চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অর্থ বছরের শেষ পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে কোনো পণ্য রপ্তানি হয়নি। তবে নতুন অর্থ বছরের প্রথমদিন থেকেই ভারতে বেশ কয়টি কোম্পানিতে জুস রপ্তানি করা হচ্ছে। এটা আমাদের দেশের জন্য নিঃসন্দেহে ভালো।”
সম্প্রতি চলতি বছরের গত ১৭ মে বেশকিছু স্থলবন্দর দিয়ে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য আমদানিতে বিধিনিষেধ দেয় ভারত সরকার।
তবে হিলি স্থলবন্দর সেই বিধিনিষেধ এর আওতামুক্ত থাকায় বাংলাদেশের কোম্পানিগুলো এই বন্দর দিয়ে এসব পণ্য ভারতে রপ্তানি করছে।
ঢাকা/মোসলেম/এস