মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি আবারও অশান্ত হয়ে উঠছে। আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে চলতি মাসের শুরু থেকে নতুন করে বিমান হামলা শুরু করেছে জান্তা বাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি রাখাইনের অন্যান্য সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদেরও নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

মিয়ানমারের নির্বাসিত সাংবাদিকদের প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতীর খবর অনুযায়ী, ২ মে থেকে পরবর্তী দুই সপ্তাহে জান্তা বাহিনীর হামলায় অন্তত ৮৬ জন নিহত ও ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। বোমা হামলায় বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ধর্মীয় উপাসনালয়সহ লোকজনের বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আরেক গণমাধ্যম নিরিনজারার গতকাল সোমবারের এক খবরে বলা হয়েছে, আরাকান আর্মির অধিকৃত মংডু টাউনশিপে ঘনঘন বিমান হামলা ও স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি মংডু অঞ্চলে ঘন ঘন বিমানে বোমা হামলা পরিচালনা করে আসছে জান্তা বাহিনী। তাতে শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। মংডু টাউনশিপে ভূমিমাইন ও বিমান হামলার ঝুঁকির কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের খাবার সংগ্রহে সমস্যা হচ্ছে। ভূমিমাইন ঝুঁকির কারণে স্থানীয় লোকজন নাফ নদীতে মাছও ধরতে পারছেন না। বিমান হামলার কারণে শহর ও গ্রামের দোকানপাট খুলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ৮ মে মংডু টাউনশিপের অদূরে চার মাইল এলাকায় একটি গ্রেনেড বিস্ফোরণে দুই শিশু নিহত ও এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর মংডু টাউনশিপসহ আশপাশের ২৭১ কিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয় আরাকান আর্মি। এরপর মংডু অঞ্চল থেকে লোকজনকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কয়েক মাস ধরে বাস্তুচ্যুত লোকজনকে পুনরায় প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে আরাকান আর্মি।

মিয়ানমারের গণমাধ্যম ও সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, সংকটের নিরসন এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা চালাচ্ছে আরাকান আর্মি। ‘যুদ্ধবন্দী’ হিসেবে আটকে রাখা লোকজনকেও নানা শর্তে মুক্তি দেওয়ার খবর মিলেছে। তারা রাখাইনের বন্ধ হাসপাতাল চালু এবং ধর্ষণসহ সংঘটিত নানা অপরাধের বিচারের চেষ্টা করছে। তবে নতুন করে বিমান হামলা শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি আবারও জটিল হয়ে উঠছে।

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর মংডু, বুচিডং, রাচিডং টাউনশিপসহ রাখাইন রাজ্যে ৮০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে অঞ্চলটি পুনর্গঠনের কাজে হাত দেয় আরাকান আর্মি। তিন মাসের মাথায় অধিকৃত অঞ্চলটিকে স্বাধীন ‘আরাকান রাষ্ট্র’ ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল। তবে জান্তা বাহিনীর হামলাসহ নানা সংকটে এখনো স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা সম্ভব হয়নি।

রাখাইনের সহিংস পরিস্থিতির মুখে গত এক বছরে ১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে ঠাঁই নিয়েছেন। বর্তমানে উখিয়া-টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখের বেশি। এর মধ্যে আট লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। দীর্ঘ আট বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।

রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির সভাপতি মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধ করেনি আরাকান আর্মি। প্রায় প্রতিদিন আরাকান আর্মির হামলায় রোহিঙ্গারা ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হচ্ছেন। খুন-ধর্ষণসহ অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছেন।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও উখিয়ার পালংখালীর ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি দিন দিন উত্তপ্ত হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি সেখানকার অন্য সম্প্রদায়ের লোকজনও উখিয়াতে পালিয়ে আসছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর ক ন আর ম র র খ ইন র জ য পর স থ ত ট উনশ প

এছাড়াও পড়ুন:

মাসিক না হওয়ার কারণ

মেনোপজের আগে মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ

গর্ভধারণ ও স্তন্যদান।

জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য পিল কিংবা অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি ব্যবহার।

অতিরিক্ত কম বা বেশি ওজন, অতিরিক্ত ভারী ব্যায়াম কিংবা অতিরিক্ত মানসিক চাপ।

থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি কিংবা আধিক্য, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম কিংবা অন্য যেসব রোগের কারণে হরমোনের তারতম্য হয়।

ডিম্বাশয়ের টিউমার কিংবা ডিম্বাশয় বা জরায়ুতে কোনো অস্ত্রোপচার।

উচ্চ রক্তচাপ, অ্যালার্জি, বিষণ্নতা এবং অন্যান্য মানসিক সমস্যায় ব্যবহৃত ওষুধ।
কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি।

ডিঅ্যান্ডসির (ডায়ালেশন ও কিউরেটেজ নামের একটি অস্ত্রোপচারপদ্ধতি) মাধ্যমে গর্ভপাত।

আরও পড়ুনমাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা হয় কেন? ২৩ এপ্রিল ২০২৫কৈশোরে মাসিক শুরু না হওয়ার কারণ

নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছেও যাঁর মাসিক শুরু হয়নি, তাঁর জন্য কারণটা হতে পারে জিনগত। নারীর জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে যেসব গ্রন্থি, সেসবের অস্বাভবিকতাও থাকতে পারে কারও কারও ক্ষেত্রে। যোনিপথ বা অন্যান্য প্রজনন অঙ্গের গঠনগত ত্রুটিও থাকতে পারে।

কত দিন মাসিক না হওয়া অস্বাভাবিক

দু–এক মাস যদি মাসিক না হয়, তাতে ভয়ের কিছু নেই। কত দিন মাসিক না হওয়া অস্বাভাবিক, অর্থাৎ কখন নেবেন চিকিৎসকের পরামর্শ, জেনে নেওয়া যাক।

১৪ বছর বয়সে পৌঁছেও যদি কারও মাসিক শুরু না হয় এবং বয়ঃসন্ধির অন্য কোনো চিহ্নও না দেখা যায়।

বয়ঃসন্ধির অন্যান্য চিহ্ন থাকলে অবশ্য ১৬ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে ১৬ বছরে পৌঁছে মাসিক না হলে বিষয়টিকে অস্বাভাবিক ধরে নিতে হবে।

যাঁর নিয়মিত মাসিক হয়, তাঁর যদি অন্তত তিন মাস মাসিক বন্ধ থাকে, তাহলে সেটির কারণ খুঁজতে হবে।

যাঁর মাসিক অনিয়মিত, তাঁর ক্ষেত্রে অন্তত ছয় মাস মাসিক বন্ধ থাকলে সেটিকে অস্বাভাবিকভাবে মাসিক বন্ধ হওয়া বলে ধরে নিতে হবে।

আরও পড়ুনঅনিয়মিত মাসিক কেন হয়২৫ জুলাই ২০২৩যদি থাকে অস্বাভাবিকতা

একজন নারীর সুস্থতার জন্য নিয়মিত মাসিক হওয়া খুবই জরুরি। যদি মাসিকে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, অস্বাভাবিকভাবে মাসিক বন্ধ থাকে কিংবা অনিয়মিত মাসিক হয়, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কারণটা খুঁজে বের করবেন। সে অনুযায়ীই হবে চিকিৎসা।

কারও মাসিক বন্ধ থাকার চিকিৎসার ক্ষেত্রে জীবনধারার পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ। কারও প্রয়োজন হরমোন থেরাপি। অল্প কিছু ক্ষেত্রে সার্জারি বা শল্যচিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।

আরও পড়ুনমেয়েকে মাসিক সম্পর্কে কীভাবে জানাবেন০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ