দিনাজপুরে মা-মেয়েকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন
Published: 20th, May 2025 GMT
সাইকেল চুরিকে কেন্দ্র করে দিনাজপুরের হিলিতে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মা ও নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে নির্যাতন করা হয়েছে। উপজেলার নয়ানগর গ্রামে তাদের নির্যাতন করা হয়।
অভিযুক্ত ফারুক হোসেনের ভয়ে নির্যাতনের শিকার পরিবার পালিয়ে বেড়াচ্ছে। দুইপক্ষ থানায় অভিযোগ করেছেন।
আজ মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে উপজেলার নয়ানগর গ্রামে গিয়ে জানা যায়, গত শনিবার (১৭ মে) ফারুক হোসেনের বাড়ি থেকে একটি সাইকেল চুরি হয়। পরের দিন প্রতিবেশী সিদ্দিক হোসেনের বাড়িতে সেটি পাওয়া যায়। গ্রামের লোকজন সাইকেলটি উদ্ধার করে বিষয়টি মিমাংসা করে দেয়। পরে ফারুকের স্ত্রী ও সিদ্দিকের স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় সিদ্দিক এসে ফারুকের স্ত্রীকে চাকু দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ফারুক থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
আরো পড়ুন:
শিক্ষার্থী নির্যাতনের প্রতিবাদ পাবিপ্রবি শিক্ষকের
নরসিংদী কারাগারে কয়েদির মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের
সোমবার (১৯ মে) বিকেলে ফারুক, তার শ্যালক লোকজন নিয়ে সিদ্দিকের স্ত্রী ও স্কুলে পড়ুয়া মেয়েকে বাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে। মা-মেয়েকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। বর্তমান নির্যাতনের শিকার পরিবার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
সিদ্দিক হোসেনের মা জরিনা বেগম বলেন, ‘‘আমার ছেলে সাইকেল চুরি করছে, তার শাস্তি হবে। কিন্তু আমার ছেলের বউ আর নাতনি তো অপরাধ করেনি। তাহলে কেন তারা মা-মেয়েকে জোর করে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করল? আমি এর বিচার চাই।’’
প্রতিবেশী সূর্য বেগম বলেন, ‘‘যিনি সাইকেল চুরি করেছেন, তিনি অপরাধী। চুরি হওয়া সাইকেল তো তিনি ফিরে পেয়েছেন। কিন্তু তার বউ ও মেয়ে তো অপরাধ করেননি। তাদের খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি।’’
ফারুক হোসেনের স্ত্রী এলেন বেগম বলেন, ‘‘আমার ছেলের একটি সাইকেল সিদ্দিক চুরি করেন। আমরা জানতে পেরে তার বাড়ি থেকে সাইকেলটি উদ্ধার করি এবং বিষয়টি মিমাংসা করা হয়। পরে এ বিষয়ে সিদ্দিকের স্ত্রী ও তার মেয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। এক পর্যায় সিদ্দিক আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে আমাকে এ অবস্থায় দেখে আমার ভাই বাড়িতে এসে তারা যেন পালিয়ে না যেতে পারেন, সেই কারণে তাদের মা-মেয়েকে খুঁটিতে বাঁধেন এবং গ্রামের লোকজন বলাতে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।’’
স্থানীয় প্যানেল চেয়ারম্যান ছদরুল শামীম স্বপন বলেন, ‘‘আমি লোকমুখে বিষয়টি শুনেছি। তবে ঘটনা যায় ঘটুক, দেশে আইন আছে। মা-মেয়েকে খুঁটির সঙ্গে বাঁধা ঠিক হয়নি।’’
এ বিষয়ে হাকিমপুর (হিলি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হক জানান, উপজেলার নয়ানগর গ্রামে সাইকেল চুরি, মারামারি এবং মা-মেয়েকে খুঁটিতে বেঁধে রাখা নিয়ে উভয়পক্ষই থানায় অভিযোগ করেছে। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা/মোসলেম/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় ডা. শহিদুলের মনোনয়ন দাবিতে হরতাল পালন
সাতক্ষীরা-৩ (কালিগঞ্জ-আশাশুনি) আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শহিদুল আলমের দলের মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে কালৗগঞ্জ ও আশাশুনি উপজেলায় মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) অর্ধ-দিবস হরতাল পালিত হয়েছে।
হরতালের মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলার নলতা হাসপাতাল মোড়ে বেলা ১১টায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে নেতাকর্মীরা। ঘন্টাব্যাপী অবরোধে সাতক্ষীরা-মুন্সীগঞ্জ সড়কে যানজট হয়। নলতা বাজারের দোকাপাট বন্ধ ছিল। এতে জনগণ ভোগান্তি পড়ে।
আরো পড়ুন:
রংপুর-৩: জাতীয় পার্টির আসন দখলে নিতে প্রচারণা শুরু বিএনপির
এটাই হয়তো আমার শেষ নির্বাচন: মির্জা ফখরুল
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য ২৩৭ জন প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। এই তালিকায় সাতক্ষীরা-৩ আসনে রয়েছেন কাজী আলাউদ্দীন। এর প্রতিবাদে এবং ডা. শহিদুল আলমের দলের মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে কালীগঞ্জ ও আশাশুনি উপজেলায় মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অর্ধদিবস হরতালের ডাক দেয় বিএনপির নেতারা।
নলতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কিসমাতুল বারীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সদস্য শেখ নুরুজ্জামান, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, নলতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান পাড়, বিএনপি নেতা এস এম হাফিজুর রহমান বাবু প্রমুখ।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা সাতক্ষীরা-৩ আসনের জন্য ঘোষিত কাজী আলাউদ্দীনের মনোনয়ন বাতিল করে ডা. শহিদুল আলমকে দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় আজ মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশসহ আগামী দিনে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
বিক্ষোভ-সমাবেশে অনেক নারীকেও অংশ নিতে দেখা গেছে। অর্ধ দিবস হরতালে কালীগঞ্জ উপজেলার নলতা, কালীবাড়ী এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতে দেখা যায়। তবে হরতালে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। জনজীবনের তেমন প্রভাব পড়েনি।
ঢাকা/শাহীন/বকুল