ইন্টারনেট ব্যবহারে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সুহৃদ সমাবেশের আয়োজনে ‘সাইবার নিরাপত্তায় সচেতনতা’ বিষয়ক কর্মশালা ও আলাচনা অনুষ্ঠিত হয়। ১৫ মে পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে ‘নিরাপদ ইন্টারনেট, দক্ষ প্রজন্ম’প্রতিপাদ্যে জেলা শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েকশ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে কর্মসূচি পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো.
এতে সুহৃদ আবু বক্কর সিদ্দিক, রিদুয়ান রাহী আরমান, মোহাম্মদ স্বাক্ষরসহ সুহৃদরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা পর্বে বক্তারা ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহারের গুরুত্ব, মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতনতার পাশাপাশি প্রযুক্তির ইতিবাচক ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন দিলু বলেন, এআই মানবসভ্যতায় গোপনীয়তার জন্য বড় ঝুঁকি। এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে মানব শরীরের সব তথ্য এমনকি হাতের আঙুলের ছাপ পর্যন্ত নকল করা যায়। ফলে যে কোনো মানুষের জিনতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য এবং ফরেনসিক পরিবর্তন করে তার হুবহু নকল বা প্রতিরূপ তৈরি করা যায়। এর ফলে সহজ হয়ে যাবে সাইবার প্রতারণা ও জালিয়াতি কর্মকাণ্ড। নানাভাবে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে এটি। তাই বাঁচতে হলে জানতে হবে। বুঝতে হবে সাইবার অপরাধ কী? কীভাবে এখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
অনেক সময় টাকার লোভ দেখিয়ে দেওয়া হয় কিছু ফিশিং লিংক। এসব লিংকের মাধ্যমে বাগিয়ে নিতে পারে ব্যক্তিগত তথ্য এবং গোপন পাসওয়ার্ড, বিপুল পরিমাণ অর্থ। তাই বাঁচতে হলে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মো. মহসীন আলী বলেন, ইন্টারনেটের মতো সমসাময়িক বিষয়ে কর্মশালা এবং আলোচনা অত্যন্ত জরুরি। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সময়োপযোগী কর্মশালা আয়োজনের জন্য সুহৃদ সমাবেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
আফজাল হোসেন বলেন, স্মার্টফোনের লগারিদম এতটাই সংবেদনশীল আপনি যে ধরনের ছবি বা ভিডিও দেখতে থাকবেন ঠিক সেই ধরনের ছবি বা ভিডিও বারবার আপনার কাছে আসতে থাকবে। এগুলো আপনার তথ্যভান্ডারে জমা হতে থাকবে। কাজেই আপনার মোবাইল ফোন চেক করলেই আপনার যাবতীয় তথ্য বেরিয়ে আসবে।
সফিকুল আলম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘মোবাইল আপনার আমার অগোচরেই সব রকম কর্মকাণ্ডের তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে এবং এসব তথ্য থেকে মানুষের গতিবিধি নিরূপণ করা যায়। কাজেই মোবাইল এবং ইন্টারনেটের ইতিবাচক ব্যবহার প্রত্যাশিত।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে জিওটেক্সটাইলের ব্যাপক প্রয়োগ হচ্ছে
বাংলাদেশে জিওটেক্সটাইলের ব্যাপক প্রয়োগ হচ্ছে। যেমন মাটির ক্ষয় নিয়ন্ত্রণ, উপকূলীয় ক্ষয় রোধ, রাস্তা নির্মাণ, নদী ও খাল খনন, পাহাড় ধসে পড়া রোধ, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন, মিঠামইনের হাওরে রাস্তা তৈরি, সেন্টমার্টিনের মতো কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি বাড়ানো ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা। তবে কুয়াকাটা ও কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভে এটি ব্যর্থও হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অ্যাপ্লিকেশন অব জিওটেক্সটাইল ইন বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনারের মূল প্রবন্ধে এ কথা বলা হয়। রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি) ভবনে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এ সেমিনারের আয়োজন করে। আইইবির কাউন্সিল হলে সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন আইইবির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদ। টেক্সটাইল বিভাগের সেক্রেটারি প্রকৌশলী মো. মোস্তাফা-ই জামান সেলিমের পরিচালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুল হক।
সেমিনারে বলা হয়, বিভিন্ন ভূ-প্রযুক্তিগত প্রকৌশল প্রয়োগে জিওটেক্সটাইল ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের সিভিল নির্মাণ প্রকল্পে মাটি ফিল্টার, স্থিতিশীল, শক্তিশালীকরণ, পৃথকীকরণ, নিষ্কাশন এবং বিচ্ছিন্নকরণের জন্য। তাছাড়া জিওটেক্সটাইল প্রাকৃতিক সমষ্টিগত নির্মাণ উপকরণ প্রতিস্থাপন বা হ্রাস করতে পারে, যা অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত উভয় সুবিধা প্রদান করে। সেজন্য আমাদের জিওটেক্সটাইল নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম শুরু করতে হবে যার মধ্যে রয়েছে- বিভিন্ন ধরনের জিওটেক্সটাইল উৎপাদন। পাটভিত্তিক জিওটেক্সটাইল নিয়ে পড়ালেখা ও গবেষণা করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ পাটের অন্যতম বৃহৎ উৎপাদনকারী দেশ। যা শতভাগ জৈব অবচনযোগ্য। অনেক ক্ষেত্রে জিওটেক্সটাইল অল্প সময়ের জন্য প্রয়োজন। রপ্তানির বিশাল সুযোগ রয়েছে। আমরা নারিকেলের ছোবড়াও প্রধান উৎপাদক দেশ। গবেষণায় দেখা গেছে যে সমস্ত প্রাকৃতিক তন্তুর মধ্যে নারিকেলের ছোবরা দীর্ঘ সময় ধরে টিকে থাকে। দৃঢ়ভাবে মনে করি যে, জিও-ব্যাগের পিছলে যাওয়া রোধ করতে ছোবড়া ব্যবহার করা যেতে পারে।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুল হক কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলেন, কৃত্রিম ভূমি এবং দ্বীপ তৈরির জন্য জিওটেক্সটাইল নিয়ে কাজ শুরু করার জন্য আমরা সরকারি সহায়তা চাই। আমরা টেকনাফের মাঝামাঝি বা সেন্ট মার্টিনের কাছাকাছি কিছু জমি তৈরি করার চেষ্টা করব। প্রবালের জীবনকে ব্যাহত না করে সেন্টমার্টিনের এলাকা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। যদি কোনও কৌশলগত সমস্যা থাকে তবে আমরা টেকনাফ এলাকায় কাজ করব। ভূমি উন্নয়ন প্রকল্পে আরও অনেক জায়গা ফোকাস করার আছে। কিছু সিন্থেটিক ফাইবার ক্ষয় নিয়ন্ত্রণে জিওটেক্সটাইল হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, স্থানীয়ভাবে সেই ফাইবারগুলো তৈরির চেষ্টা করা যেতে পারে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের (পিডব্লিউডি) প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশলী শেখ আল আমিন, ভাইস প্রেসিডেন্ট, (এইচআরডি) আইইবি, অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মো. সাব্বির মোস্তফা খান, সম্মানী সাধারণ সম্পাদক, আইইবি। আরও বক্তব্য দেন পিডব্লিউডির প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার, আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ আল আমিন, আইইবির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী সাব্বির মোস্তফা খান, ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. সায়েদুর রহমান, প্রমুখ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, প্রকৌশলী নিয়াজ উদ্দিন ভূইয়া, প্রকৌশলী এটিএম.তানভির-উল হাসান (তমাল), প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাহবুব আলম, প্রকৌশলী মো. নূর আমিন, প্রকৌশলী সাব্বির আহমেদ ওসমানী, প্রকৌশলী মুহাম্মদ আহসানুল রাসেল, প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন তালুকদার, প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রকৌশলী কেএম আসাদুজ্জামান, প্রকৌশলী মুহাম্মদ কামরুল হাসান খান সাইফুল, প্রকৌশলী মুহাম্মদ আবু হোসেন হিটলু, প্রকৌশলী মো. ফারুকুল ইসলাম জনি, অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মো. জুলহাস উদ্দিন, প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন মিয়া, অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী এসএম মোমিনুল আলম (ডালিম), প্রকৌশলী এসএম ফারহানা ইকবাল, প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, প্রকৌশলী কাজী মো. ইলিয়াস, প্রকৌশলী সুমায়েল মো. মল্লিক, প্রকৌশলী মঈদুল ইসলাম, প্রকৌশলী মানিক দাস প্রমুখ।