বিএনপির আপত্তির পর এনসিসির পরিবর্তে সাংবিধানিক নিয়োগে কমিটি গঠনের প্রস্তাব
Published: 25th, June 2025 GMT
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা খর্বে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবে পরিবর্তন এনেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বিএনপি এনসিসি গঠনে একমত না হওয়ায় ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন।
বুধবার রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে এ প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে।
সংশোধিত প্রস্তাবে নথিতে দেখা গেছে, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির সদস্য হবেন প্রধানমন্ত্রী, নিম্ন ও উচ্চকক্ষের স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা, সরকারি এবং প্রধান বিরোধী দলে বাদে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করা অন্যান্য দল থেকে একজন প্রতিনিধি, আইনের মাধ্যমে নির্ধারিত যোগ্যতা সম্পন্ন রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি, প্রধান বিচারপতির মনোনীত আপিল বিভাগের একজন কর্মকর্তা। কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করবেন নিম্নকক্ষের স্পিকার।
প্রস্তাব অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষকের মতো সাংবিধানিক পদ ছাড়াও দুদক, মানবাধিকার কমিশন, প্রস্তাবিত স্থানীয় সরকার কমিশনের মতো সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে কারা নিয়োগ পাবেন, তা বাছাই করবে কমিটি।
এদিকে বুধবার ১১টার পরে শুরু হওয়া সংলাপে সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির সংশোধিত প্রস্তাব রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে উপস্থাপন করেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। কমিশনের প্রাথমিক প্রস্তাবে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে 'সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামজিক সুবিচার ও গণতন্ত্র' প্রস্তাব করেছিল। নতুন করে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি মূলনীতিতে যুক্ত করার প্রস্তাব করে কমিশন। যা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা আলোচনা করবেন।
এর আগে সাংবিধানিক নিয়োগে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, নিম্ন ও উচ্চকক্ষের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, বিরোধী দল মনোনীত নিম্নকক্ষের ডেপুটি স্পিকার, বিরোধী দল মনোনীত উচ্চকক্ষের ডেপুটি স্পিকার এবং প্রধান বিরোধী দল ব্যতীত অন্যান্য দলসমূহের একজন প্রতিনিধিকে নিয়ে এনসিসি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছিল।
বিএনপি এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। অন্যদিকে জামায়াত রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করে। কয়েকটি দল এনসিসির বিকল্প নাম ও কাঠামো দেওয়ার প্রস্তাব করে। এরই প্রেক্ষিতে সংশোধিত নতুন নামের প্রস্তাব করে কমিশন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র প রস ত ব ক
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জের সেই গ্রামে অভিযানে বন্দুক, পাইপগান, গুলিসহ আটক ৪
সেনাবাহিনীর সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে একজন নিহত হওয়ার পর সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার হাতিয়া গ্রামে তল্লাশি চালিয়ে অস্ত্র, গুলিসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদিকে নিহত রাজমিস্ত্রি আবু সাঈদের (৩১) লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সিলেটে সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে। এতে জানানো হয়, গতকাল রোববার সন্ধ্যায় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর গোলাগুলি ও একজনের লাশ পাওয়ার পর রাতভর যৌথবাহিনী দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামে তল্লাশি অভিযান চালায়। অভিযানে চারজনকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাঁদের বসতঘর থেকে একটি বন্দুক, চারটি পাইপগান, সাতটি রামদা, নয়টি বল্লম, ছয়টি বুলেট প্রুফ জ্যাকেট, এক রাউন্ড তাজা বুলেট ও এক রাউন্ড ফায়ারকৃত ব্ল্যাংক কার্টিজ জব্দ করা হয়।
যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ব্যক্তিরা হলেন হাতিয়া গ্রামের তাজ উদ্দিন, আমির উদ্দিন, ইরন মিয়া ও জমির মিয়া। সেনাবাহিনী জানায়, আটক ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, আবু সাঈদ অজ্ঞাত কোনো সন্ত্রাসীর গুলিতে মারা গেছেন। তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আজ সকাল নয়টায় অভিযান শেষ হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা বর্তমান চেয়ারম্যান যুবলীগের নেতা একরার হোসেন ও একই গ্রামের বাসিন্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আতিকুর রহমানের মধ্যে গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। এর জেরে দুই দিন ধরে গ্রামে উত্তেজনা চলছিল। উভয় পক্ষের মধ্যে গত শুক্রবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন ও গুলির ঘটনা ঘটে। এর আগেও দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্র প্রদর্শন হয়েছে প্রকাশ্যে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, রোববার বিকেলে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের ধরতে ওই গ্রামে গেলে একরার পক্ষের লোকজন হাতিয়া থেকে নৌকায় করে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের গাদালিয়া গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেন। সেনাবাহিনী সেখানে গিয়ে ওই গ্রামে ঘেরাও দিলে সেখানে আশ্রয় নেওয়া সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় সেনাবাহিনীও গুলি করে। পরে সেখান থেকে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে সেখানে আবু সাঈদের লাশ পাওয়া যায়। আবু সাঈদ দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের তারাপাশা গ্রামের তাজ মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি।
আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর গোলাগুলি, পাওয়া গেল রাজমিস্ত্রির লাশ৮ ঘণ্টা আগে