নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন আগামী ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে। সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) আইনজীবী সমিতি ভবনের নিচ তলায় এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রদানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভা ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন এবং ৩ সদস্যের আপিল বোর্ড গঠন করা হয়। 

জেলা আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূঁইয়া।

অন্যরা হলেন- এডভোকেট বোরহানউদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান মোল্লা, এডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক, এডভোকেট সুমন মিয়া ও এডভোকেট মতিউর রহমান মতিন।

৩ শতদের আপিল বোর্ডের প্রধান হলেন এডভোকেট নবী হোসেন। বাকি দুইজন হলেন এডভোকেট আজিজুল হক হান্টু ও অ্যাডভোকেট মনজুরুল হক খান।

বার্ষিক সাধারণ সভার শুরুতে সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান বার্ষিক রিপোর্ট পেশ করেন। এরপর সমিতির সদস্যগণ তাদের বক্তব্য পেশ করেন। সকলের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয় জেলা আইনজীবী সমিতির এবারের বার্ষিক সাধারণ সভা।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ এডভ ক ট আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

সজলকে ধরে রাখে রনি, পরে একটি গুলির শব্দ পাই

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকার অদূরে আশুলিয়া থানার সামনে সাজ্জাদ হোসেন সজলকে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) নেতা রনি ভূইয়া ধরে রাখেন বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন সাক্ষী মো. শাহরিয়ার হোসেন। তিনি বলেন, পরদিন (২০২৪ সালের ৬ আগস্ট) তিনি খবর পান, তাঁর বন্ধু সজলের লাশ আশুলিয়া থানার সামনে পাওয়া গেছে।

গণ-অভ্যুত্থানের সময় আশুলিয়ায় সজলসহ ছয়জনের লাশ পোড়ানোর ঘটনায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২২তম সাক্ষী হিসেবে শাহরিয়ার হোসেন জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ তিনি এ জবানবন্দি দেন।

সাভারে স্টার্লিং গার্মেন্টসে চাকরি করা শাহরিয়ার হোসেনের বন্ধু ছিলেন সজল। সেদিনের ঘটনার বর্ণনা করে জবানবন্দিতে শাহরিয়ার হোসেন বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট সকালে বাইপাইল মোড় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনি অংশ নেন। সেদিন বেলা আড়াইটায় শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে তাঁরা বিজয় মিছিল করছিলেন। ওই সময় তাঁরা আশুলিয়া থানার দিক থেকে গোলাগুলির আওয়াজ শুনতে পান।

তখন বিজয় মিছিল নিয়ে আশুলিয়া থানার দিকে যান উল্লেখ করে জবানবন্দিতে শাহরিয়ার হোসেন বলেন, থানার সামনে পুলিশের কয়েকজন সদস্য অবস্থান করছিলেন। সজল তাঁর আগেই থানার সামনে চলে যান। তিনি সেখানে গিয়ে দেখেন, সজলকে আওয়ামী লীগ নেতা রনি ভূইয়া ধরে আছেন। ছেড়ে দিতে বললে সজলকে ছেড়ে তাঁকে ধরেন রনি। তারপর তিনি দেখেন, পেছনে একজন বন্দুকের গুলি লোড করছিলেন। তিনি তখন বন্ধু সজলকে সেখান থেকে সরে যেতে বলেন। তারপর তাঁরা একটি গুলির শব্দ পান।

জবানবন্দিতে শাহরিয়ার হোসেন বলেন, গুলির শব্দ শুনে তিনি সেখানকার এসএ পরিবহন অফিসমুখী রাস্তার দিকে যান। অল্প কিছু দূর যাওয়ার পর তিনি পড়ে যান। তখন দেখেন, তাঁর পায়ে ছিটা গুলি লেগেছে। সামনে একটি বাসার গেট খোলা পেয়ে ভেতরে চলে যান তিনি। সেখান থেকে সেদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে বের হওয়ার সময় থানার সামনে পুলিশের একটি পিকআপ গাড়িতে কয়েকটি লাশ পোড়ানো দেখেন।

এজলাস থেকে বেরিয়ে যান এক প্রসিকিউটর

জবানবন্দি শেষে আজ সাক্ষী শাহরিয়ার হোসেনকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। তাঁকে এ মামলার আসামি আবদুল্লাহিল কাফীর আইনজীবী সৈয়দ মিজানুর রহমান প্রশ্ন করেন, গত বছরের ৫ আগস্ট বেলা আড়াইটার সময় ওভারপাসে (আশুলিয়া থানার কাছে) পুলিশের দুজন কর্মকর্তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেছেন।

এর জবাবে সাক্ষী শাহরিয়ার বলেন, তিনি দেখেননি।

আইনজীবী মিজানুরের এমন প্রশ্নের প্রতিবাদ জানান প্রসিকিউটর মো. আবদুস সোবহান তরফদার। তিনি বলেন, পুলিশের দুজন কর্মকর্তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল, এটিই প্রতিষ্ঠিত নয়। ফলে এই সাক্ষীর কাছে প্রশ্ন করার সুযোগ নেই যে পুলিশের দুজন কর্মকর্তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেছেন কি না।

তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট বেলা আড়াইটার সময় ওভারপাসে পুলিশের দুজন কর্মকর্তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেননি—এ কথা সাক্ষী বলেছেন। এর মাধ্যমে এটি প্রতিষ্ঠিত হয় না যে সেখানে কোনো লাশ ছিল।

ট্রাইব্যুনালের কথায় সন্তুষ্ট হতে পারেননি প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার। পাল্টাপাল্টি যুক্তির একপর্যায়ে প্রসিকিউটর সোবহান এজলাস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, সেটি প্রসিকিউটর সোবহানের ইচ্ছা। এরপর এজলাস থেকে বেরিয়ে যান প্রসিকিউটর সোবহান।

এ ঘটনার ১০–১৫ মিনিট পর এজলাসে প্রবেশ করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তখন আরও কিছু প্রশ্ন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী এবং সেসবের জবাবও দেন সাক্ষী।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান প্রশ্ন করেন, ৫ আগস্ট বেলা ৩টার পর আশুলিয়া থানা লুট হতে দেখেছেন কি না?

এর জবাবে সাক্ষী শাহরিয়ার বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

পরে আইনজীবী মিজানুর প্রশ্ন করেন, আশুলিয়া থানায় অগ্নিসংযোগ হতে দেখেছেন কি না?

সাক্ষী শাহরিয়ার জবাব দেন, তিনি থানায় অগ্নিসংযোগ হতে দেখেননি।

তখন চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আশুলিয়া থানায় অগ্নিসংযোগ বা লুট হয়েছে কি না, সেই বিষয় এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ফলে সাক্ষীকে প্রশ্ন করার সুযোগ নেই যে থানা লুট বা অগ্নিসংযোগ হয়েছে কি না। এসব মিসলিডিং কোয়েশ্চেন।

চিফ প্রসিকিউটরের বক্তব্য আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। আসামিপক্ষের আইনজীবীর আশুলিয়া থানা লুট বা অগ্নিসংযোগ–সংক্রান্ত প্রশ্নগুলো আমলে নেননি ট্রাইব্যুনাল।

আশুলিয়া থানা–সংলগ্ন ওভারপাসে পুলিশের দুজন কর্মকর্তার লাশ ঝুলে থাকার বিষয়ে প্রশ্নেও তখন ট্রাইব্যুনাল পরিবর্তন আনেন। সাক্ষী বলেছেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ওভারপাসে পুলিশের কোনো কর্মকর্তার লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেননি—এভাবে প্রশ্নের জবাব গ্রহণ করা হয়।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ মামলাটির বিচার চলছে। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

এক আ. লীগ নেতাকে ২৭ নভেম্বর হাজিরের নির্দেশ

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় ময়মনসিংহের গৌরীপুরে তিনজনকে হত্যায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা তানজির আহমেদকে (রাজীব) ২৭ নভেম্বর হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল এই আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল–২।

তানজির ইতিমধ্যে অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার আছেন। ২৭ নভেম্বর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা শাহাবুল আলম, মো. জোসেফ উদ্দিন জজ ও মো. আতাউর রহমানকেও প্রথমবারের মতো হাজির করা হবে। তাঁরা ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।

এ ছাড়া এই মামলায় পুলিশের সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) শফিকুল আলম ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) দেলোয়ার হোসেন গ্রেপ্তার আছেন।

শিবির নেতাকে গুলির ঘটনায় প্রতিবেদন দাখিলের সময় বাড়ল

২০১৬ সালে যশোরের চৌগাছায় ছাত্রশিবিরের দুজন নেতার পায়ে গুলি করার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল ট্রাইব্যুনাল–১ এই দিন ধার্য করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইনজীবীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, মেজবাহউদ্দীন ফরহাদকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান
  • পদে থেকেও নির্বাচন করা যায়: অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান
  • সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় লতিফ সিদ্দিকী ও মঞ্জুরুল আলমের হাইকোর্টে জামিন
  • সজলকে ধরে রাখে রনি, পরে একটি গুলির শব্দ পাই
  • ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী: কে কেন কীভাবে
  • ভালো কাজের বিনিময়ে কারামুক্তি, কেমন আছেন তাঁরা
  • সংবিধানের ৫৩ বছর: বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলের আহ্বান
  • তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা বাতিল: সংক্ষিপ্ত ও পূর্ণাঙ্গ রায়ে অসংগতি তুলে ধরে আপিল মঞ্জুরের আরজি
  • গোষ্ঠীস্বার্থে ড্যাপ সংশোধন হলে ঢাকার বাসযোগ্যতা আরও সংকটে পড়বে
  • আইনজীবীর ভূমিকায় নুসরাত ফারিয়া