বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে সৌদি আরব এক বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে বলে উল্লেখ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, “শুধু ইসলাম ধর্মের পবিত্র ভূমি হিসেবে নয় বরং আমাদের ৩২ লাখেরও বেশি প্রবাসী কর্মীর দ্বিতীয় আবাসস্থল হিসেবেও সৌদি আরব বাংলাদেশিদের হৃদয়ের গভীরে স্থানে আসীন।”

আরো পড়ুন:

পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করল পাকিস্তান-সৌদি আরব

এক সপ্তাহে সৌদি আরবে ২০ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে সৌদি আরবের ৯৫তম জাতীয় দিবস উপলক্ষে দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “সৌদিতে প্রবাসীদের অবদান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির এক গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। এটি দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সেতুবন্ধন হিসেবেও কাজ করছে। বাংলাদেশি প্রবাসীদের কল্যাণে সৌদি আরবের অব্যাহত সহায়তা দুই দেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের স্মারক বহন করছে।”

উপদেষ্টা বলেন, “আরব বিশ্ব এবং বাংলার জনগণের মধ্যে সম্পর্ক শতাব্দী প্রাচীন। বাণিজ্য, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং সর্বোপরি আমাদের পারস্পরিক বিশ্বাসের মাধ্যমে লালিত। ভ্রাতৃত্বের এ ঐতিহাসিক বন্ধন আমাদের আধুনিক কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ভিত্তি স্থাপন করেছে।”

তিনি বলেন, “আজ বাংলাদেশ এবং সৌদি আরবের মধ্যকার আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্কের পঞ্চাশতম গৌরবময় বছর উদযাপনের মুহূর্তে আমরা এই সত্যে গর্বিত যে, দুই দেশের পারস্পরিক বন্ধন শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং ইসলামী ঐতিহ্যের ওপর নিহিত। যা যুগ যুগ ধরে টিকে আছে।”

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের দূরদর্শী নেতৃত্বে সৌদি আরব ভিশন-২০৩০ এর পথে উচ্চাকাঙ্ক্ষী যাত্রা শুরু করেছে। এ সাহসী এবং দূরদর্শী উদ্যোগ কেবল সৌদি আরবের জনগণকে অনুপ্রাণিত করছে না বরং এটি অত্র অঞ্চলের অগ্রগতি এবং উদ্ভাবনের আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করছে।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশে অর্থনীতিকে আধুনিক ও বৈচিত্র্যময়করণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সমৃদ্ধিতে সৌদি নেতৃত্বের সহযোগিতা নিঃসন্দেহে প্রশংসা ও আন্তরিকতার দাবিদার।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি এবং বিশ্ব শান্তিতে অবদান রাখার ক্ষেত্রে অসাধারণ রাষ্ট্রনায়কত্ব প্রদর্শন করেছেন। তার নেতৃত্ব মুসলিম উম্মাহর ঐক্য এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একটি সম্মানিত কণ্ঠস্বর হিসেবে সৌদি আরবের ভূমিকাকে আরো শক্তিশালী করেছে। বাংলাদেশ এ প্রচেষ্টার গভীর প্রশংসা করে এবং যুবরাজের মহৎ প্রচেষ্টার অব্যাহত সাফল্য কামনা করে।”

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ড.

আবদুল্লাহ জাফর এইচ. বিন আবিয়াহ, বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক কোরের সদস্যবৃন্দ, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিশিষ্ট শিল্পপতি, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স দ আরব প রব স আরব র

এছাড়াও পড়ুন:

স্কুলে নাচ-গানের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিরোধ পরিহারের আহ্বান ৫১ নাগরিকের

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও নাচের শিক্ষক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জুলাই অভ্যুত্থানের সফলতায় বিভক্তি তৈরির অপপ্রয়াস উল্লেখ করে এ নিয়ে বিরোধ পরিহারের আহ্বান জানিয়েছেন ৫১ জন নাগরিক।

সোমবার তাঁদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংগীতবিষয়ক শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল চেয়ে একটি পক্ষের লাগাতার বক্তব্য, বিবৃতি, কর্মসূচি গভীর উদ্বেগ তৈরি করছে। আমরা মনে করি, সংগীতের শিক্ষক নিয়োগ বিষয়ে তাদের বিরোধিতা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিপরীত।’

জুলাই আন্দোলনে সব শ্রেণি–পেশা এবং ধর্ম ও মতের মানুষ অংশ নিয়েছিল উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘তবে সফল অভ্যুত্থানের পরপরই নানা ধরনের বিভক্তি তৈরির অপপ্রয়াস চলছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও নাচের শিক্ষক বাতিলের দাবি এ বিভাজনকে আরও জটিল পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে।’

বিবৃতিতে নাগরিকেরা বলেছেন, ‘আমরা মনে করি, শিশুর নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা যেমন প্রয়োজন রয়েছে, তেমনি মেধা ও মননের বিকাশে সংগীত ও নৃত্যকলার প্রয়োজনও রয়েছে। সংস্কৃতিচর্চার মধ্য দিয়ে শিশুরা আধ্যাত্মিক সৌন্দর্যকে নিজের ভেতরে ধারণ করতে সক্ষম হবে। বিশ্ব সংস্কৃতির পরিসরে বাংলাদেশের হয়ে তারা অংশ নিতে পারবে। পৃথিবীর ইতিহাসে দেখা গেছে, ইসলামি সভ্যতায় গানের চর্চা ও সাধনার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। গান ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইসলাম তার সৌন্দর্যের প্রকাশ ঘটিয়েছে, যা মানুষকে ইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করেছে।’

বাংলাদেশ গান, নাচ ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এখানকার শিশুদের অধিকার রয়েছে তার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার। আমরা মনে করি, এ ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার পরিণতি সুখকর হবে না।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষকের যে দাবি উঠেছে, তা মেনে নিয়েও সংগীত শিক্ষক বহাল রাখা ন্যায়সংগত। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটিকে স্থাপন শিশুর বিকাশের পরিবেশ সংকীর্ণ করবে।’

বিবৃতি দেওয়া ৫১ নাগরিকের মধ্যে আছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৌভিক রেজা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জি এইচ হাবীব, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রায়হান রাইন, মানবাধিকারকর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, কথাসাহিত্যিক জিয়া হাশান, সালাহ উদ্দিন শুভ্র, গাজী তানজিয়া, এহসান মাহমুদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ