বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় জোড়া হত্যা মামলার আসামি ও ডাকাত দলের সদস্য রফিকুল ইসলাম (৪১) পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়ে গেছেন। আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আদালতের গারদখানা থেকে জেলা কারাগারে নেওয়ার জন্য আসামিকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় এ ঘটনা ঘটে।

আদালত পুলিশের হেফাজত থেকে আসামি পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম।

রফিকুল ইসলাম আদমদীঘি উপজেলার বশিকোড়া গ্রামের বাসিন্দা। গত ১৪ জুলাই জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর কাছ থেকে লুট করা স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছিল। রফিকুলের বিরুদ্ধে ডাকাতি, লুট, চুরি, দস্যুতাসহ চারটি মামলা রয়েছে।

ওসি ইকবাল বাহার জানান, গত ৮ জুলাই রাতে দুপচাঁচিয়ার লক্ষ্মীমণ্ডপ গ্রামে নিজ বাড়িতে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আফতাব উদ্দিন (৭০) ও তাঁর সৌদিপ্রবাসী ছেলে শাহজাহানের স্ত্রী রিভা আক্তারকে (৩৫) হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে তাঁদের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আফতাব উদ্দিনের মেয়ে তহমিনা বিবি দুপচাঁচিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় জেলা ডিবি। এরপর তদন্তে নেমে রাজধানীর কমলাপুর থেকে ডাকাত দলের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্যে রফিকুল ইসলামকে কুড়িগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।

পরে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩–এ রফিকুল ইসলাম ও ডাকাত দলের নেতা আবদুল হাকিম (৩৪) ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আবদুল হাকিম দুপচাঁচিয়ার বেরুঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা।

তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম বলেন, এ হত্যাকাণ্ড ও ডাকাতিতে আন্তজেলা ডাকাত দলের ১১ জন সদস্য জড়িত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা সম্ভব হবে। আদালত চত্বর থেকে পালানো রফিকুলকে ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চলছে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় তাঁর অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

আদালত সূত্র জানায়, রফিকুল ও হাকিম জবানবন্দিতে আদালতকে বলেন, আফতাব উদ্দিনের সাবেক নলকূপ পাহারাদার আবদুল মান্নান ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। মাদক সেবন ও অর্থ আত্মসাতের কারণে চাকরি হারানোর পর ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি ডাকাত দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মান্নান ডাকাতদের জানান, আফতাব উদ্দিনের কাছে সেচ বাবদ আদায় করা টাকা ও জমি ইজারার কয়েক লাখ টাকা রয়েছে। এ ছাড়া বাড়িতে স্বর্ণালংকার আছে।

আসামি রফিকুল আদালতে বলেন, ৮ জুলাই রাত দুইটার দিকে ১১ জন বাড়ির প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকেন। প্রথমে আফতাব উদ্দিনকে হাত-পা বেঁধে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়। পরে একইভাবে তাঁর পুত্রবধূ রিভা আক্তারকে হত্যা করা হয়। এরপর ঘর থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করা হয়।

আদালত চত্বর থেকে আসামি পালানোর বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বগুড়া আদালতের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ড ক ত দল র র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

লোকসানে বগুড়ার ‘মধুবন সিনেপ্লেক্স’ বন্ধ 

বগুড়ার ‘মধুবন সিনেপ্লেক্স’ লোকসানের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) থেকে সিনেপ্লেক্সটি বন্ধ রাখা হয়েছে।  

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিনেপ্লেক্সটির স্বত্বাধিকারী রোকনুজ্জামান ইউনূস রুবেল সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ এবং বন্ধের কারণ জানান। 

আরো পড়ুন:

কাজাখস্তানে আফরান নিশোর ‘দম’

আশির দশকের বাংলা সিনেমা ও সিনেমাকেন্দ্রিক সমাজ

রোকনুজ্জামান ইউনূস বলেন, ‘‘সিনেপ্লেক্স চালাতে গিয়ে সব মিলিয়ে মাসে প্রায় তিন লাখ টাকার মতো খরচ হচ্ছে। কিন্তু সেটা তুলতে পারছি না দর্শকদের টানতে পারবে এমন সিনেমার অভাবে। 'তাণ্ডব’ সিনেমার পর আর কোনো ব্যবসা সফল সিনেমা আসেনি। অনেক ছবি মুক্তি পেলেও দর্শকের সাড়া মেলেনি। আমাদের দেশের সিনেমা ঈদ ছাড়া দর্শক টানতে পারছে না।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘বিদেশি সিনেমা চালাতে পারলে দর্শক আসত। প্রতিযোগিতায় আমাদের সিনেমাও ভালো চলত। কিন্তু বাইরের সিনেমা আমদানি একেবারে বন্ধ। তাই টানা লোকসান আর সম্ভব নয়। মূল কথা হচ্ছে, আমাদের ব্যবসা আমাদের মতো করে চালাতে দিতে হবে।’’ 

রোকনুজ্জামান ইউনূস বলেন, ‘‘সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ, আমরা আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে চাই। আমাদের কথা আপনারা শোনেন। আমাদের কথা যদি পছন্দ হয়, ভালো লাগে; তাহলে সেটা গ্রহণ করেন। আমাদের কথা যদি অগ্রহণযোগ্য হয়, আমাদের বলে দেন; এটা হবে না। তাহলে আমরা আমাদের হল একেবারে বন্ধ করে দেব। আর যদি আমাদের সহযোগিতা করেন, তাহলে এটি আমরা আরো সুন্দরভাবে করব এবং আমরা কথা দেব, মধুবনের মতো আরো ২০০  সিনেপ্লেক্স আমরা বাংলাদেশে তৈরি করব।’’

‘মধুবন সিনেপ্লেক্সের’ স্বত্বাধিকারী বলেন, ‘‘২০১৫ সালে শাকিব খানের ‘লাভ ম্যারেজ’ মুক্তির সময় ভাঙা চেয়ার, ছারপোকার কামড়, গরমের মধ্যেও হলভর্তি দর্শক হয়। এরপর ২০১৬ সালে ‘আয়নাবাজি’ প্রদর্শনের সময় শিক্ষিত শ্রেণির দর্শকের ঢল নামে। এমন পরিবেশেও দর্শকদের আগ্রহ দেখে সিনেপ্লেক্স তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সময় দর্শকদের সঙ্গে কথা বলে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করা হয়। এরপর ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২০২১ সালে বগুড়ার প্রথম সিনেপ্লেক্স হিসেবে যাত্রা শুরু করে মধুবন।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘মধুবন সিনেপ্লেক্সের জন্য বেলজিয়াম থেকে ‘প্রজেকশন মেশিন’ আনা হয়। আমেরিকা থেকে ‘সাউন্ড সিস্টেম’ এবং মুম্বাই থেকে ‘গ্যালালাইট মেটাল কোডেড পর্দা’ আনা হয়। সেই সিনেপ্লেক্স আজ বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।’’ 

ঢাকা/এনাম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিন্নি চালের পিঠার রেসিপি
  • ফেনীতে দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ড ভ্যানের পেছনে ট্রাকের ধাক্কা, চালকের সহকারী নিহত
  • ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ এখন রড-সিমেন্টের কারবারি
  • পাঁচ বছর পর সিপিএলে পঞ্চম শিরোপা জিতল নাইট রাইডার্স
  • পাবনায় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বেড়াবাসীর বিক্ষোভ
  • ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিল যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া
  • রাজশাহীতে মাদ্রাসায় দফায় দফায় শিক্ষার্থীকে নির্যাতন
  • এখন ফাইনালের স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশ
  • লোকসানে বগুড়ার ‘মধুবন সিনেপ্লেক্স’ বন্ধ