বগুড়া আদালত চত্বর থেকে পালালেন জোড়া হত্যা মামলার আসামি
Published: 22nd, September 2025 GMT
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় জোড়া হত্যা মামলার আসামি ও ডাকাত দলের সদস্য রফিকুল ইসলাম (৪১) পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়ে গেছেন। আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আদালতের গারদখানা থেকে জেলা কারাগারে নেওয়ার জন্য আসামিকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় এ ঘটনা ঘটে।
আদালত পুলিশের হেফাজত থেকে আসামি পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম।
রফিকুল ইসলাম আদমদীঘি উপজেলার বশিকোড়া গ্রামের বাসিন্দা। গত ১৪ জুলাই জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর কাছ থেকে লুট করা স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছিল। রফিকুলের বিরুদ্ধে ডাকাতি, লুট, চুরি, দস্যুতাসহ চারটি মামলা রয়েছে।
ওসি ইকবাল বাহার জানান, গত ৮ জুলাই রাতে দুপচাঁচিয়ার লক্ষ্মীমণ্ডপ গ্রামে নিজ বাড়িতে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আফতাব উদ্দিন (৭০) ও তাঁর সৌদিপ্রবাসী ছেলে শাহজাহানের স্ত্রী রিভা আক্তারকে (৩৫) হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে তাঁদের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আফতাব উদ্দিনের মেয়ে তহমিনা বিবি দুপচাঁচিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় জেলা ডিবি। এরপর তদন্তে নেমে রাজধানীর কমলাপুর থেকে ডাকাত দলের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্যে রফিকুল ইসলামকে কুড়িগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
পরে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩–এ রফিকুল ইসলাম ও ডাকাত দলের নেতা আবদুল হাকিম (৩৪) ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আবদুল হাকিম দুপচাঁচিয়ার বেরুঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা।
তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম বলেন, এ হত্যাকাণ্ড ও ডাকাতিতে আন্তজেলা ডাকাত দলের ১১ জন সদস্য জড়িত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা সম্ভব হবে। আদালত চত্বর থেকে পালানো রফিকুলকে ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চলছে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় তাঁর অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
আদালত সূত্র জানায়, রফিকুল ও হাকিম জবানবন্দিতে আদালতকে বলেন, আফতাব উদ্দিনের সাবেক নলকূপ পাহারাদার আবদুল মান্নান ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। মাদক সেবন ও অর্থ আত্মসাতের কারণে চাকরি হারানোর পর ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি ডাকাত দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মান্নান ডাকাতদের জানান, আফতাব উদ্দিনের কাছে সেচ বাবদ আদায় করা টাকা ও জমি ইজারার কয়েক লাখ টাকা রয়েছে। এ ছাড়া বাড়িতে স্বর্ণালংকার আছে।
আসামি রফিকুল আদালতে বলেন, ৮ জুলাই রাত দুইটার দিকে ১১ জন বাড়ির প্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকেন। প্রথমে আফতাব উদ্দিনকে হাত-পা বেঁধে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়। পরে একইভাবে তাঁর পুত্রবধূ রিভা আক্তারকে হত্যা করা হয়। এরপর ঘর থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করা হয়।
আদালত চত্বর থেকে আসামি পালানোর বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বগুড়া আদালতের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ড ক ত দল র র তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপিসহ তিন রাজনৈতিক দল যেসব প্রতীক পাচ্ছে
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পাচ্ছে তিনটি নতুন রাজনৈতিক দল। দলগুলো হলো-জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপি, আমজনগণ পার্টি এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)। ইতিমধ্যে দলগুলোকে প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যয় জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ‘শাপলা কলি’, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলকে (মার্ক্সবাদী) ‘কাঁচি’ ও আমজনগণ পার্টিকে ‘হ্যান্ডশেক’ প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্বাচন কমিশন। এরপর দাবি-আপত্তি এলে তা নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত নিবন্ধন দেওয়া হবে।’
আরো পড়ুন:
বিএনপির প্রার্থীকে অভিনন্দন জানালেন জামায়াতের প্রার্থী
টাঙ্গাইলে বিএনপির আনন্দ মিছিলে আ.লীগ নেতার স্লোগান
রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়ে কারো কোনো আপত্তি থাকলে প্রয়োজনীয় দলিলসহ এর কারণ উল্লেখপূর্বক ১২ নভেম্বরের মধ্যে সচিবের নিকট লিখিতভাবে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো।
ইসির নিবন্ধন পেতে ১৪৩টি দল আবেদন করে। প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ২২ দলের মাঠ পর্যায়ে তদন্ত পাঠায় নির্বাচন কমিশন। এরপর মাঠ পর্যায়ের তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এনসিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
তবে এনসিপি প্রতীক জটিলতা ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগের কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে জাতীয় লীগসহ ১০ দলের অধিকতর যাচাইয়ের জন্য আবার তদন্ত করে সংস্থাটি। এরপর অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই শেষে কয়েক দফা বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।
পুনরায় মাঠ পর্যায়ের তদন্তে যে ১০টি দলকে পাঠানো হবে সেগুলো হল-আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতা পার্টি বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগ।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ