আজ সোমবার সকালে অল্প সময়ের বৃষ্টিতেই ঢাকা শহর আবারও যেন ডুবে গেল। নীলক্ষেত এলাকা থেকে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার আজিমপুর অংশ, এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা ও কুয়েত মৈত্রী হলের সামনেও হাঁটুসমান পানি জমে যায়। এই জলাবদ্ধতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের হল বাস চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। অসংখ্য শিক্ষার্থী ক্লাসে যেতে পারেননি, কেউ কেউ ভিজে হেঁটে ক্লাসে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন।

শুধু শিক্ষার্থীরাই নন, অফিসগামী মানুষেরাও চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। একদিকে পানিতে আটকে পড়া গাড়ির দীর্ঘ যানজট, অন্যদিকে বিকল্প পথ না থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট—সব মিলিয়ে নাগরিক জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ ভেঙে যায়।

ঢাকার মানুষের কাছে এ চিত্র নতুন কিছু নয়। এক দশক ধরে প্রতিটি বর্ষা মৌসুমেই আমরা একই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। নালা-নর্দমা খনন না হওয়া, পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার অকার্যকারিতা, অবৈধ দখল ও পরিকল্পনাহীন নগরায়ণের কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই শহরের প্রধান সড়কগুলো ডুবে যায়।

সরকার ও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রতিবারই নানা আশ্বাস শোনা যায়—ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যান করা হবে, খাল উদ্ধার হবে, আধুনিক পাম্প বসানো হবে। কিন্তু বাস্তবে দৃশ্যপট অপরিবর্তিত। নাগরিকেরা পানির নিচে ডুবে থেকে কেবল আশা আর হতাশার দোলাচলে দিন পার করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে যদি এ অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাহলে বোঝাই যায় সাধারণ আবাসিক এলাকা বা গলিপথে কী ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করে। ছাত্রীরা ক্লাসে যেতে না পারা কেবল একটি দিনের সমস্যা নয়, বরং এটি শিক্ষাজীবনে দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলে। তেমনি অফিসগামী মানুষদের কর্মক্ষেত্রে দেরিতে পৌঁছানো বা অনুপস্থিত থাকার ফলে উৎপাদনশীলতা নষ্ট হয়। অর্থনীতি ও শিক্ষার ওপর এভাবে প্রতিদিন যে চাপ সৃষ্টি হচ্ছে, তার হিসাব কোনোভাবেই ছোট করে দেখা উচিত নয়।

ঢাকার নগরবাসী কর দেন, বিভিন্ন পরিষেবার জন্য বিল প্রদান করেন। বিনিময়ে তাঁরা ন্যূনতম নাগরিক সেবা, যেমন বৃষ্টির পর স্বাভাবিকভাবে চলাচলের রাস্তা পাবেন, সেটি প্রত্যাশা করাই স্বাভাবিক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই মৌলিক অধিকারটুকুও আমরা পাচ্ছি না।

অথচ জলাবদ্ধতা নিরসনে টেকসই সমাধান খুঁজে বের করা খুব কঠিন নয়। পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, খাল ও জলাশয় দখলমুক্ত করা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য পৃথক অবকাঠামো গড়ে তোলা—এসব পদক্ষেপই হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান।

আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করুন। শুধু আশ্বাস নয়, দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিন। কারণ, ঢাকার এই জলাবদ্ধতা এখন কেবল এক দিনের ভোগান্তি নয়, এটি নগর জীবনের স্থায়ী সংকটে রূপ নিচ্ছে।

নুসরাত রুষা, একজন ক্ষুব্ধ নাগরিক

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিন্নি চালের পিঠার রেসিপি

উপকরণ

বিরুই চাল (বিন্নি): ১ কেজি

নারকেলকুচি: ২ কাপ

চিনি: আধা কাপ

পানি: ৪ টেবিল চামচ

লবণ: স্বাদমতো

আরও পড়ুনবিলিম্বির টক আচারের রেসিপি১ ঘণ্টা আগেপ্রণালি

প্রথমে ১ কেজি চাল নিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে ভিজিয়ে রাখব ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা।

এরপর উঠিয়ে ঝাঁজরিতে পানি ঝরিয়ে কাগজের ওপর চালগুলো ছড়িয়ে ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে নিন।

এবার গ্রাইন্ডারে গুঁড়া করে নিন।

চালের গুঁড়ার সঙ্গে পানি ও লবণ মিশিয়ে মেখে নিন।

মুঠো করা যাবে, এমন অবস্থায় মিশ্রণটি আনতে হবে। যদি মুঠ হয়, তাহলে বুঝতে হবে পিঠার জন্য গুঁড়া তৈরি।

এবার চুলায় তাওয়া বসিয়ে গরম করে নিন।

প্রথমে হাতের সাহায্যে গুঁড়া গোল করে তাওয়ার ওপর ছড়িয়ে দিন।

চিনি, নারকেলকুচি দিয়ে ২ থেকে ৩ মিনিট ঢাকনা দিয়ে ঢেকে অপেক্ষা করতে হবে।

এরপর ঢাকনা খুলে ২ ভাঁজ অথবা ৩ ভাঁজ করলে হয়ে যাবে বিন্নি চালের পিঠা।

গুঁড়ার সঙ্গে রং মিশিয়ে চেলে নিয়ে রঙিন বিন্নি পিঠা বানাতে পারেন।

আরও পড়ুনকরমচার টক–ঝাল–মিষ্টি আচারের রেসিপি১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ