ক্রিকেট বিশ্বের সবচেয়ে ধনাঢ্য বোর্ড ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (বিসিসিআই)। তাদের ভবিষ্যৎ সভাপতি কে হবেন তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা থাকবে তা একেবারেই স্বাভাবিক ঘটনা। 

নতুন বোর্ড সভাপতি হিসেবে একেবারেই নতুন মুখ পেতে যাচ্ছে বিসিসিআই। সব ঠিকঠাক থাকলে প্রাক্তন ক্রিকেটার মিঠুন মানহাস বিসিসিআইয়ের হট চেয়ারে বসছেন। টাইমস অফ ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে এ খবর নিশ্চিত করেছে।

আরো পড়ুন:

প্রস্তুতির ঘাটতি নিয়েই জ্যোতিদের বিশ্বকাপের মিশন

পাকিস্তানকে হারিয়ে সুপার ফোরে দুর্দান্ত শুরু ভারতের

জম্মু-কাশ্মীর থেকে বিসিসিআই-তে প্রতিনিধিত্ব করছেন মিঠুন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট না খেললেও ভারতীয় ‘এ’ দল, আইপিএল ও দিল্লির হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন। 

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতাতেই বোর্ড সভাপতি হতে চলেছেন মিঠুন। রবিবার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দেন।

সৌরভ গাঙ্গুলি ফের বিসিসিআই সভাপতি হতে পারেন এমন কথা শোনা যাচ্ছিল। কিংবদন্তি স্পিনার হরভজন সিংয়ের নামও আসছিল। তবে, শেষ পর্যন্ত এই দুই ক্রিকেটারের কেউই বিসিবিআই সভাপতি হচ্ছেন না। 

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর মুম্বাইয়ে বিসিসিআইয়ের বার্ষিক সাধারণ সভায় বিভিন্ন পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

৪৫ বছর বয়সী মিঠুন দুই বছর বাংলাদেশে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবেও কাজ করেছেন। এছাড়া, আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও গুজরাট টাইটানস দলের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি।

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব স স আই

এছাড়াও পড়ুন:

ইসলামের মৌলিক বিষয় কী কী

ইসলাম এমন এক পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, যা মানুষকে আল্লাহর আনুগত্যে জীবন যাপন করতে শেখায়। এটি কেবল একটি ধর্ম নয়; বরং নৈতিকতা, সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি ও আত্মার পূর্ণ সমন্বিত এক দিকনির্দেশনা।

মহান আল্লাহ কোরআনে বলেন, “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য ধর্মরূপে পছন্দ করলাম।” (সুরা মায়িদা, আয়াত: ৩)

ইসলামের মৌলিক বিষয়সমূহকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা হয়:

(১) বিশ্বাসের মৌলিক ভিত্তি (আকিদা)

(২) আমল বা কর্মভিত্তিক বিষয়সমূহ (ইবাদত, আচরণ ও নৈতিকতা)

এক. ইমান বা বিশ্বাস

ইমান ইসলামি জীবনের ভিত্তি। এটি ছয়টি মূল বিষয়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত, যাকে বলা হয় ইমানের ছয়টি স্তম্ভ:

১. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস

২. ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস

৩. কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস

৪. রাসুলদের প্রতি বিশ্বাস

৫. পরকাল বা আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস

৬. তাকদিরের প্রতি বিশ্বাস। অর্থাৎ,  ভালো-মন্দ উভয়টাই আল্লাহর নির্ধারণ করা।

রাসুল (স.) বলেছেন, “ইমান হল তুমি আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা, তাঁর কিতাব, তাঁর রাসুল, পরকাল এবং তাকদিরে বিশ্বাস রাখো।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮)

এই ছয়টি বিষয়ে দৃঢ় বিশ্বাস ব্যতীত একজন ব্যক্তি মুসলমান হিসেবে গণ্য হতে পারে না।

আরও পড়ুনফিলিস্তিন ও ইসলাম: অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কের ৫ দিক২০ আগস্ট ২০২৫দুই. ইসলামের পাঁচ স্তম্ভ

ইসলামের দৃশ্যমান কাঠামো পাঁচটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। মহানবী (স.) বলেছেন, “ইসলাম পাঁচটি ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত:

(১) সাক্ষ্য দাও যে আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ তাঁর রাসুল;

(২) নামাজ কায়েম করা;

(৩) জাকাত প্রদান করা;

(৪) রমজানের রোজা রাখা;

(৫) এবং সামর্থ্য থাকলে হজ করা।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৬)

এই পাঁচটি স্তম্ভ মুসলিম জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এগুলোর মাধ্যমে একজন মুমিন আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণের ঘোষণা দেয়।

তিন. নামাজ

নামাজ ইসলামের মূল ইবাদত। এটি বান্দা ও আল্লাহর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। কোরআনে বলা হয়েছে, “নামাজ কায়েম কর; নিশ্চয় নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।” (সুরা আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)

নামাজের মাধ্যমে আত্মা পরিশুদ্ধ হয়, মন প্রশান্ত হয় এবং সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়।

চার. জাকাত

জাকাত ইসলামি অর্থনীতির নৈতিক ভিত্তি। এটি সমাজে সম্পদের ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, “তাদের সম্পদ থেকে জাকাত গ্রহণ কর, এর দ্বারা তুমি তাদের পরিশুদ্ধ করবে ও পবিত্র করবে।” (সুরা তাওবা, আয়াত: ১০৩)

জাকাত সমাজে দরিদ্র-অসহায়দের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে এবং লোভ, অহংকার ও বৈষম্য দূর করে।

পাঁচ. রোজা

রমজান মাসের রোজা আত্মসংযম ও তাকওয়া অর্জনের অন্যতম উপায়। আল্লাহ বলেছেন, “হে মুমিনগণ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর; যাতে তোমরা পরহেজগার হতে পারো।” (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৩)

রোজা শুধু ক্ষুধা-তৃষ্ণা থেকে বিরত থাকা নয়, বরং আত্মনিয়ন্ত্রণ, সহানুভূতি ও নৈতিক শুদ্ধতার অনুশীলন।

আরও পড়ুনউপহার দেওয়া সম্পর্কে ইসলাম১৩ আগস্ট ২০২৫ছয়. হজ

হজ জীবনের একবারের ফরজ ইবাদত, যদি আর্থিক ও শারীরিক সামর্থ্য থাকে। এটি মুসলমানদের ঐক্য, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক।

আল্লাহ বলেছেন, “এবং আল্লাহর উদ্দেশ্যে আল্লাহর ঘরে হজ করা মানুষের ওপর কর্তব্য, যারা সেখানে পৌঁছাতে সক্ষম।” (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ৯৭)

সাত. নৈতিকতা ও আচরণ

ইসলাম কেবল উপাসনার ধর্ম নয়; এটি নৈতিক আচরণেরও শিক্ষা দেয়। নবীজি (স.) বলেছেন, “আমি সুন্দর চরিত্র পূর্ণ করতে প্রেরিত হয়েছি।” (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ৮৯৫২)

সত্যবাদিতা, বিশ্বাসযোগ্যতা, দয়া, ধৈর্য, বিনয় ও ন্যায়পরায়ণতা একজন মুসলমানের মৌলিক গুণ।

আট. সমাজ ও মানবসম্পর্ক

ইসলাম সমাজে ন্যায় ও সমতা প্রতিষ্ঠা করে। এখানে জাতি, বর্ণ, শ্রেণি বা ভাষার কোনো বৈষম্য নেই। আল্লাহ বলেছেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সর্বাধিক সম্মানিত সে-ই, যে সর্বাধিক পরহেজগার।” (সুরা হুজুরাত, আয়াত: ১৩)

ইসলাম নারী ও পুরুষ উভয়ের মর্যাদা নিশ্চিত করেছে, শ্রমিকের প্রাপ্যতা নির্ধারণ করেছে, প্রতিবেশীর অধিকার সংরক্ষণ করেছে।

নয়. জ্ঞানের প্রতি উৎসাহ

ইসলাম জ্ঞানকে ইমানের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। প্রথম অবতীর্ণ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, “পড়ো তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।” (সুরা আলাক, আয়াত: ১)

নবীজি (স.) বলেছেন, জ্ঞান অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরজ।” (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২২৪)

ইসলাম জ্ঞানচর্চাকে আল্লাহর কিতাব, প্রকৃতি ও সমাজ—এই তিন দিক থেকে জানার মাধ্যম হিসেবে দেখে।

ইসলামের মৌলিক বিষয়সমূহ শুধু ধর্মীয় রীতিনীতি নয়, বরং আত্মিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক সব বিবেচনায় মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনে। একজন প্রকৃত মুসলিম সেই, যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখে, নবীজির (স.) নির্দেশনা মেনে

আরও পড়ুনকিশোরদের ইসলাম অনুশীলনে আগ্রহী করার উপায়২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ