আংশিক স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে হবে ভোট: চাকসু নির্বাচন কমিশন
Published: 22nd, September 2025 GMT
ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা ও আংশিক স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে চাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানায় কমিশন। আজ সোমবার বেলা দুইটায় সভা শুরু হয়। সেখানে ধাপে ধাপে প্রার্থীরা নিজেদের পরিচয় দিয়ে প্রশ্ন করেন এবং নির্বাচন কমিশনাররা সেসবের উত্তর দেন।
মতবিনিময় সভায় প্রচারণা ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা। সভায় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচনে ফেস্টুন ও ব্যানার প্রচারণার জন্য ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ক্লাসরুমের ভেতরেও প্রচারণার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে ক্যাম্পাসের বাইরে ভোট চাওয়া আচরণবিধির লঙ্ঘন হবে না।
ক্যাম্পাসের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে এই সভার আয়োজন করা হয়। শুরুতে ক্যাম্পাসে যাঁরা আচরণবিধি সম্পর্কে নজর রাখবেন, তাঁদের পরিচয় তুলে ধরেন নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী। পরে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশ্ন ও মতামত চাওয়া হয়। একের পর এক প্রার্থী প্রশ্ন করা শুরু করেন।
মতবিনিময় সভায় কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রশিবির–সমর্থিত সম্প্রীতির ছাত্র ঐক্য প্যানেল, ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেল, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন, সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ, সার্বভৌম শিক্ষার্থীর ঐক্য, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী জোট প্যানেলসহ কেন্দ্রীয় সংসদের ১২টি প্যানেল ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আমির মুহাম্মদ নসরুল্লা, মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধুরী, বেগম ইসমত আরা হক প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী।
শিক্ষার্থীরা যা বললেন
সভায় সার্বভৌম শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সহসভাপতি পদপ্রার্থী তাওসিফ আল মুত্তাকী চৌধুরী প্রশ্ন করেন, পরীক্ষা যদি চাকসু নির্বাচনের আগে হয়, তাহলে ভোটার সংখ্যা কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে কি না। ভোটারদের যাতায়াতের সমস্যা বা শহরে বুথ দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করেন পদার্থবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মুহিদ খান।
দ্রোহ পর্ষদ প্যানেলের সহসভাপতি পদপ্রার্থী ঋজু লক্ষ্মী অবরোধ প্রশ্ন করেন, নির্বাচনের দিন দুই দিন পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব কি না। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পদ উল্লেখ করা হলে তা আচরণবিধির লঙ্ঘন হবে কি না।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভোটের জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বিষয়ে জানতে চান সমাজসেবা ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আচরণব ধ
এছাড়াও পড়ুন:
হল সংসদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতছেন ২১ নারী
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংসদ নির্বাচনে ২২ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলছেন। তাঁদের মধ্যে ২১ জনই নারী। প্রার্থী কম থাকায় ছাত্রী হলে নির্বাচন কম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে বলে অভিমত শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি হল রয়েছে। প্রতিটি হল সংসদে ১৪টি করে মোট পদের সংখ্যা ৭০। এসব পদে ১২৫ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এর মধ্যে ২১টি পদে কেবল একজন করে শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ভোটাভুটি ছাড়াই তাঁরা নির্বাচিত হতে চলছেন।
ছাত্রদের হল রয়েছে ৯টি। এসব হল সংসদেও ১৪টি করে মোট ১২৬টি পদ রয়েছে। এসব পদে ৩৫৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে শাহজালাল হলের রিডিং রুম, ডাইনিং ও হল লাইব্রেরি সম্পাদক পদে কেবল একজন প্রার্থী হয়েছেন। মোহাম্মদ তানভীর হাসান নামের ওই প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলছেন।
একাডেমিক চাপ ও পারিবারিক কারণও অনেক শিক্ষার্থী প্রার্থী না হওয়ার অন্যতম কারণ। এসব চাপে আমি নিজেও তেমন আগ্রহী ছিলাম না। পরে আমার পরিবার থেকে সমর্থন পাওয়ার কারণে আমি দাঁড়িয়েছি।—পারমিতা চাকমা, ভিপি প্রার্থী, নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলবিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলা নারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে। এই হলে সহসভাপতি (ভিপি) পদসহ ১১টি পদেই প্রার্থী রয়েছেন একজন করে। কেবল ৩টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শামসুন নাহার হলেও সাতটি পদে একজন করে শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করায় তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলছেন। তাঁরা দপ্তর সম্পাদক, রিডিং রুম সম্পাদক, সমাজসেবা সম্পাদক, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক এবং নির্বাহী সদস্যের তিনটি পদে প্রার্থী হয়েছেন। প্রীতিলতা হলে খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক এবং বিজ্ঞান-তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক পদে একক প্রার্থী হওয়ায় দুজন নারী জয়ী হতে চলছেন। এ ছাড়া খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে বিজয় ২৪ হলেও কেবল একজন নারী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
নওয়াব ফয়জুন্নেছা হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চলছেন পারমিতা চাকমা। ‘হৃদ্যতার বন্ধন’ নামে একটি প্যানেলের হয়ে প্রার্থী হয়েছেন তিনি। জানতে চাইলে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘শুরুতে মনে হয়েছিল আরও কেউ দাঁড়াবে। তবে শিক্ষার্থীরা আমার ওপর ভরসা রেখে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বী হয়নি।’ হলে অন্যান্য পদেও একই অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘একাডেমিক চাপ ও পারিবারিক কারণও অনেক শিক্ষার্থী প্রার্থী না হওয়ার অন্যতম কারণ। এসব চাপে আমি নিজেও তেমন আগ্রহী ছিলাম না। পরে আমার পরিবার থেকে সমর্থন পাওয়ার কারণে আমি দাঁড়িয়েছি।’
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলা নারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে। এই হলে সহসভাপতি (ভিপি) পদসহ ১১টি পদেই প্রার্থী রয়েছেন একজন করে। কেবল ৩টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শামসুন নাহার হলেও সাতটি পদে একজন করে শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করায় তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলছেন।নির্বাচন কমিশনার এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী বলেন, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা এখনো প্রস্তুত হয়নি। এখনো প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় আছে। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর যেসব পদে একক প্রার্থী রয়েছেন, তাঁরা বিজয়ী বলে গণ্য হবেন।
হল সংসদে প্রার্থী কম হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের শীর্ষ তিনটি পদে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা লক্ষ করা গেছে। প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী, সহসভাপতি (ভিপি) পদে ২৩ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ২১ জন এবং সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২২ জন প্রার্থী রয়েছেন। তিন পদে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৪৬। কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছিলেন ৪২৯ জন, যার মধ্যে ১৯ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। চাকসুর ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১২ অক্টোবর।