হালাল শিল্পের উন্নয়নে সমন্বিত ইকোসিস্টেম জরুরি: ডিসিসিআই
Published: 11th, October 2025 GMT
বর্তমানে হালাল পণের বৈশ্বিক বাজার প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের হলেও বাংলাদেশের রপ্তানি ১ বিলিয়ন ডলারেরও কম। একটি কার্যকর হালাল ইকোসিস্টেমের অনুপস্থিতির পাশাপাশি দেশে হালাল পণ্যের অ্যাক্রিডিটেড সার্টিফিকেট প্রদানে স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ না থাকার কারণে এ খাতের বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)’র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশের হালাল শিল্প খাতের উন্নয়ন; সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক ফোকাস গ্রুপ আলোচনা সভায় ডিসিসিআই’র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে রাজিব এইচ চৌধুরী বলেন, “অর্থনীতির দ্রুত-বর্ধনশীল ও সম্ভাবনাময় হালাল খাতের বৈশ্বিক বাজার প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০৩৪ সালে এটি ৯.
তিনি বলেন, “হালাল পণ্যের আন্তর্জাতিক মান বজায়ে না রাখা, লজিস্টিক অবকাঠামোর স্বল্পতা, শুল্কহার ও সার্টিফিকেট প্রাপ্তির জটিলতা, আধুনিক পরীক্ষাগারের অপ্রতুলতা, দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনশক্তির অভাবসহ সার্বিকভাবে হলাল ইকোসিস্টেম না থাকার বিষয়টি এখাতের কাঙ্খিত উন্নতিতে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। এছাড়াও দেশের হালাল সার্টিফিকেটের বৈশ্বিক স্বীকৃতি প্রাপ্তির লক্ষ্যে একটি স্বতন্ত্র বোর্ড গঠন করা একান্ত অপরিহার্য। সেই সাথে আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষাগার স্থাপনের সরকারি-বেসরকারি খাতের যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন।”
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলোজি (আইইউবিএটি)’র মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মমিনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এবং বিএসটিআই দুটো প্রতিষ্ঠান হালাল পণ্যের সনদ প্রদান করে যা অনেকেক্ষেত্রে জটিলতার তৈরি করছে। পাশাপাশি আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকা, দেশের ব্র্যান্ডিং ইমেজে পিছিয়ে থাকা, এখাতে এসএমইদের অনুপস্থিতি, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের দেশের হালাল পণ্যের ইতিবাচক ইমেজের অভাব, সমন্বিত নীতিমালার অনুপস্থিতি, দক্ষ জনবলের স্বল্পতার পাশাপাশি কাঠামোগত সাপ্লাইচেইন ব্যবস্থা না থাকার বিষয়সমূহ এ খাতের উন্নয়নে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে।”
অনুষ্ঠানের নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের মহাপরিচালক আমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর মহাপরিচালক (যুগ্ম-সচিব) আরিফুল হক, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি)- মহাপরিচালক বেবী রাণী কর্মকার, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউট (বিএসটিআই)’র উপ-পরিচালক (হালাল সার্টিফিকেশন) এসএম আবু সাইদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক ড. মো. আবু সালেহ পাটোয়ারী, বেঙ্গল মিটের হেড অব সাপ্লাইচেইন এজিএম সায়েদুল হক ভূইয়্যা, মেটামরফোসিস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিক এম আলম এবং প্যারাগন গ্রুপের সহকারী ম্যানাজার (এক্সপোর্ট) মো. আবুল কালাম আজাদ সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
আবুল কালাম আজাদ তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক হালাল পণ্যের ডিজিটাল সার্টিফিকেট প্রদান ও পণ্য উৎপাদন কমপ্লায়েন্স অডিটের মাধ্যমে মান নিশ্চিতের ওপর জোরারোপ করেন। সায়েদুল হক ভূইয়্যা বলেন, “হালাল পণ্যের মূল্য সংযোজন এবং ব্লকচেইনের প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে পশুর জীবন বৃত্তান্তের তথ্য সংরক্ষণ করা এখন সময়ের দাবী, সেই সাথে দেশে হালাল সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিকভাবে অ্যাক্রিডিটেড হতে হবে।”
ডা. মো. আবু সালেহ পাটোয়ারী জানান, বাংলাদেশে হালাল সার্টিফিকেট প্রদান সরকারের একক কোন প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা নেই। তাই সংশ্লিষ্ট বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ের মাধ্যমে এ সনদ প্রদান করা হচ্ছে এবং হালাল পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিশেষকরে সরকারি প্রতিষ্ঠানের নজরদারি বাড়ানো জরুরি।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ফিরে এসেছে সবুজ কচ্ছপ
একসময় প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া গ্রিন টার্টল বা সবুজ কচ্ছপ আবারও প্রকৃতিতে ফিরে আসছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের তথ্য মতে, বিলুপ্তির উদ্বেগজনক শ্রেণি থেকে আবারও প্রকৃতিতে ফিরে আসছে এই কচ্ছপ। কয়েক দশক ধরে বৈশ্বিক প্রচেষ্টার ফলে সবুজ কচ্ছপের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
সবুজ কচ্ছপ একসময় অনেক শিকার করা হতো। একসময় এদের মাংস ও আলংকারিক খোলার জন্য ব্যাপক শিকার করা হতো। মারাত্মকভাবে এদের সংখ্যা হ্রাস পায়। কয়েক দশক ধরে সুসংগঠিত বৈশ্বিক প্রচেষ্টার কারণে এদের আবারও প্রকৃতিতে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি আইইউসিএন রেড লিস্টে সবুজ কচ্ছপকে বিপন্ন ন্যূনতম উদ্বেগজনক অবস্থার শ্রেণিতে পুনর্বিন্যস্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে মালয়েশিয়ার সাবাহর মেরিন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞানী নিকোলাস পিলচার বলেন, সবুজ কচ্ছপ ফিরে আসার বিষয়টি প্রেরণাদায়ক বটে। সবুজ কচ্ছপ বৃহত্তম সামুদ্রিক কচ্ছপ প্রজাতির মধ্যে অন্যতম। এদের উদ্ভিদভিত্তিক খাদ্যের কারণে শরীরের চর্বি হালকা সবুজাভ হয়।
যুক্তরাজ্যের এক্সটার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ব্রেন্ডন গডলি বলেন, ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সমন্বিত বৈশ্বিক প্রচেষ্টার কারণে সবুজ কচ্ছপ আবারও প্রকৃতিতে দেখা যাচ্ছে। সামুদ্রিক কচ্ছপের ফিরে আসা মানুষকে অনুপ্রাণিত করছে। লাখ লাখ মানুষ নিরলসভাবে এদের সুরক্ষার জন্য কাজ করেছে।
সবুজ কচ্ছপ মূলত তৃণভোজী। শৈবাল ও সামুদ্রিক ঘাস খেয়ে জীবনধারণ করে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং উপগ্রীষ্মমণ্ডলীয় মহাসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে বাস করে। এদের দীর্ঘ দূরত্বে পরিযায়ী হওয়ার অভ্যাস আছে। সবুজ কচ্ছপের ফিরে আসা উৎসাহব্যঞ্জক হলেও বিশেষজ্ঞরা সতর্ক থাকতে বলছেন। সবুজ কচ্ছপের সংখ্যা এখনো আগের তুলনায় অনেক কম হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার রেইন আইল্যান্ডে এই প্রজাতি শংকার মুখে আছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া