ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় শিবলু মিয়া (২০) নামের এক তরুণকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর দাপুনিয়া ইউনিয়নের সরকারি পুকুরপাড় বাজার এলাকায় তাঁকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে রাত আটটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিবলুর মৃত্যু হয়।

নিহত শিবলু মিয়া দাপুনিয়া ইউনিয়নের সরকারি পুকুরপাড় এলাকার হেলাল উদ্দিনের ছেলে। বাবা-ছেলে দুজনেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। এ ঘটনার পর থেকে শিবলুর শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক।

নিহত তরুণের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিবলু মিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ঘাগড়া ইউনিয়নের সুহেলী গ্রামের সিএনজিচালক সাইদ মিয়ার মেয়ে মিম আক্তারের। প্রথমে মেয়ের পরিবার এ সম্পর্ক মেনে নেয়নি। এক বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মিম বাড়িতে গেলে তাঁকে স্বামীর সংসারে ফিরতে না দেওয়া এবং শিবুলকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন একাধিকবার মারধর করেন। এ নিয়ে তাঁদের সংসারে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকত। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে শিবলু ও মিমের মধ্যে ঝগড়া হয়। তখন মিম বাবার বাড়িতে চলে যান। গত সোমবার স্ত্রীকে আনতে শিবলু শ্বশুরবাড়ি যান। সেখানে তাঁকে আটকে রেখে মারধর করা হয়। ওই সময় শিবলু তাঁর স্ত্রীকে মৌখিকভাবে তালাক দেন। পরে শিবলুর পরিবারের সদস্যরা এলাকার মাতব্বরদের নিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে আনেন। এ নিয়ে গতকাল শুক্রবার স্থানীয় হাতেম মাতব্বরের বাড়িতে সালিস হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শিবলুর শ্বশুরবাড়ির লোকজন উপস্থিত না হওয়ায় সালিস হয়নি।

শিবলুর চাচা আকিদুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যার আগমুহূর্তে শিবলু চাড়ালপাড়া তিন গাঁয়ের মোড় এলাকার একটি চায়ের দোকানে বসে ছিল। হঠাৎ কয়েকজন এসে তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার মৃত্যু হয়। শুনেছি, ঘটনার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়েছেন। তাঁরা বিয়ের পর থেকেই ছেলেটাকে মারধর করতেন। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’

কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিবলু তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজনকে বলেছেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজনই তাঁকে ছুরিকাঘাত করেছেন। ঘটনার পর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি, বাড়িতে তালা দেওয়া ছিল। তাঁরা ভয়ে পালিয়েছেন, নাকি হত্যার সঙ্গে জড়িত—তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ বল র ন র পর ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহ বোর্ডে চার বছরে সর্বনিম্ন পাস, ১৫ কলেজে শতভাগ ফেল

ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে এবার পাসের হার ৫১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। এটি গত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এবার জিপিএ–৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমেছে। বোর্ডে শতভাগ ফেলের ঘটনা ঘটেছে ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই পাস করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দেন বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ।

প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, এবার এইচএসসি পরীক্ষার জন্য ৩০৬টি প্রতিষ্ঠানের ৭৯ হাজার ২৩৭ শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেন। পরীক্ষায় অংশ নেন ৭৫ হাজার ৮৫৫ জন। এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাস করেছেন ৩৯ হাজার ৯৬ জন। পাসের হার ৫১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। বোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ৬৮৪ শিক্ষার্থী। শাখাভিত্তিক পাসের হার সবচেয়ে কম ব্যবসায় শিক্ষা শাখায়।

ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত চার বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে জিপিএ-৫ কম পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এবার ২ হাজার ৬৪৮ জন জিপিএ–৫ পেলেও ২০২৪ সালে ৪ হাজার ৮২৬ জন, ২০২৩ সালে ৩ হাজার ২৪৪ জন এবং ২০২২ সালে ৫ হাজার ২৮ শিক্ষার্থী জিপিএ–৫ পেয়েছিলেন। এ বছর পাসের হার ৫১ দশমিক ৫৪ হলেও গত বছর ছিল ৬৩ দশমিক ২২ শতাংশ। ২০২৩ সালে ৭০ দশমিক ৪৪ এবং ২০২২ সালে পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ৩২ শতাংশ।

৩ কলেজে শতভাগ পাস

ময়মনসিংহ বোর্ডের অধীনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় তিনটি কলেজের সব শিক্ষার্থী পাস করেছেন। শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ, জেলার ঈশ্বরগঞ্জের চরজিথর হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার আবদুল জব্বার রাবেয়া খাতুন গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ।

১৫ কলেজের কেউ পাস করেননি

এবার এই বোর্ডের ১৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেননি। এর মধ্যে ময়মনসিংহের ৭টি, জামালপুরের ২টি, শেরপুরের ২টি ও নেত্রকোনার ৪টি কলেজ আছে। এই ১৫টি কলেজ থেকে পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন ১৩২ জন। এর মধ্যে ১০ জনের বেশি পরীক্ষার্থী ছিল চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। বাকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় শিক্ষার্থী ২ থেকে ৯–এর ঘরে ছিল।

বোর্ড চেয়ারম্যানের কথা

ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, পাসের হার কম হওয়ার নানা কারণ আছে। এর মধ্যে আছে মনোযোগের অভাব, পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার অভাব, ভালো মানের শিক্ষকের অভাব ইত্যাদি। বিশেষ করে ইংরেজি, আইসিটি, হিসাববিজ্ঞানসহ বিভিন্ন বিষয়ের দক্ষ শিক্ষকের অভাব আছে। এ ছাড়া আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে, চরাঞ্চল, হাওর অঞ্চল ও সীমান্ত অঞ্চলে প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ–সুবিধার ঘাটতি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, স্থানীয় প্রশাসন, ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষার বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ থেকে উত্তরণ ঘটানোর চেষ্টা করা হবে বলে তিনি জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নেত্রকোনায় প্রধান শিক্ষককে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় স্ত্রী কারাগারে
  • এক মামলায় জামিনের পর সংস্কৃতিকর্মী শামীমকে আরও দুই মামলায় গ্রেপ্তার
  • ময়মনসিংহ বোর্ডে চার বছরে সর্বনিম্ন পাস, ১৫ কলেজে শতভাগ ফেল
  • ময়মনসিংহে কমেছে জিপিএ-৫ ও পাসের হার
  • স্বীকৃতির ১০ বছর পর ময়মনসিংহ জাতীয় ক্রিকেট লিগে
  • এনসিএল শুরু ২৫ অক্টোবর, প্রথমবার অংশ নিচ্ছে ময়মনসিংহ