ত্রিপুরায় পিটুনিতে নিহত তিন বাংলাদেশিকে ‘চোরাকারবারি’ বলল ভারত
Published: 17th, October 2025 GMT
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পিটুনিতে নিহত তিন বাংলাদেশি চোরাকারবারি ছিলেন বলে দাবি করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল। ওই ঘটনায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শুক্রবার তিনি এ দাবি করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ কথা জানানো হয়েছে।
ত্রিপুরায় তিন বাংলাদেশি নাগরিক নিহতের সাম্প্রতিক ঘটনায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ১৫ অক্টোবর ভারতীয় ভূখণ্ডের প্রায় তিন কিলোমিটার ভেতরে তিন বাংলাদেশি চোরাকারবারির মৃত্যুর ঘটনাটি ভারত সরকার অবগত।
রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ‘বাংলাদেশের তিন দুষ্কৃতকারী আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডের বিদ্যাবিল গ্রাম থেকে গবাদিপশু চুরির চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁরা স্থানীয় গ্রামবাসীর ওপর দা ও ছুরি নিয়ে হামলা চালান এবং একজনকে হত্যা করেন। অন্য গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে কর্তৃপক্ষ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখানে দুই চোরাকারবারিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তৃতীয়জন পরদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি জানান, তিনজনের মরদেহ বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ একটি মামলাও নথিভুক্ত করেছে।
রণধীর জয়সোয়াল আরও বলেন, এ ঘটনা আন্তসীমান্ত অপরাধ ও চোরাচালান রোধে আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘন না করার রীতি বজায় রাখতে এবং প্রয়োজনীয় স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
এর আগে ত্রিপুরা রাজ্যে তিন বাংলাদেশিকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায়। শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই জঘন্য কর্মকাণ্ড অগ্রহণযোগ্য। এটা মানবাধিকার ও আইনের শাসনের গুরুতর লঙ্ঘন। ভারত সরকারকে এই ঘটনার বিষয়ে অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ।
গত বুধবার ত্রিপুরায় পিটিয়ে হত্যা করা তিন বাংলাদেশি হলেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পণ্ডিত মিয়া (৪০), সজল মিয়া (২৫) ও জুয়েল মিয়া (৩৫)। তাঁরা পেশায় দিনমজুর ছিলেন। পরদিন বিকেলে নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ হস্তান্তর করে ভারত।
আরও পড়ুনত্রিপুরায় তিন বাংলাদেশিকে হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের তীব্র নিন্দা১২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ র ক রব র ঘটন য় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যুদ্ধ বন্ধে জেলেনস্কিকে চুক্তি করতে বললেন ট্রাম্প
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে চুক্তি করতে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, উভয় পক্ষের ‘বিজয় দাবি করা’ উচিত এবং এই রক্তপাত থামানো উচিত।
শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে এ কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ট্রাম্প এ কথা জানান।
ট্রাম্প বলেন, ‘জেলেনস্কির সঙ্গে খুবই আগ্রহোদ্দীপক এবং আন্তরিক বৈঠক হয়েছে। তবে আমি তাঁকে বলেছি, যেমনটি আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনকেও জোর দিয়ে বলেছি, এখন খুনোখুনি বন্ধের সময় আর চুক্তি করে ফেলো।’
বৈঠকের পর হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান।
জেলেনস্কি বলেন, তিনি এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আলাপ করেছেন। তবে এ বিষয়ে জনসমক্ষে ‘আমরা কোনো কথা না বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র চায় না (মস্কোর সঙ্গে) উত্তেজনা তৈরি হোক।’
এ সময় বিবিসির এক প্রশ্নের জবাবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা প্রয়োজন। আমাদের জনগণ আতঙ্কে আছেন যে, যদি (যুদ্ধবিরতি) হয়, তাহলে আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রয়োজন, যাতে পুতিন আবার আগ্রাসন না চালাতে পারেন।’
জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের আগের দিন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ ফোনালাপ হয় ট্রাম্পের। ওই ফোনালাপে দুই নেতা হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে বৈঠকে বসার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। তবে এই বৈঠকের দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
আরও পড়ুনট্রাম্প-পুতিন দীর্ঘ ফোনালাপ, হাঙ্গেরিতে হবে বৈঠক১৬ অক্টোবর ২০২৫আরও পড়ুনপুতিন যুদ্ধ না থামালে ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেবেন ট্রাম্প১৩ অক্টোবর ২০২৫