মাংস খেতেও শিকার হচ্ছে হাতি, প্রমাণ মিলেছে সাঙ্গু-মাতামুহুরী বনে
Published: 18th, October 2025 GMT
দাঁতের জন্য হাতি শিকারের পাশাপাশি দেশে মাংসের জন্যও যে প্রাণীটি শিকার করা হচ্ছে, এই প্রথম তার প্রমাণ পেয়েছেন একদল গবেষক।
মিয়ানমারের সীমান্তসংলগ্ন পার্বত্য অঞ্চলের সাঙ্গু-মাতামুহুরী সংরক্ষিত বনে মাংসের জন্য হাতি শিকার করার একটি স্থানের সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা। এই বনেই রয়েছে ‘সাঙ্গু বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য’।
এ বছরের এপ্রিলে এই বনে গবেষণা পরিচালনা করে চার সদস্যের দলটি। তাদের প্রতিবেদন ১৬ অক্টোবর কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়েছে।
নতুন এই তথ্য নিয়ে হাতিবিশেষজ্ঞ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম এ আজিজ বললেন, এটা মোটেই অস্বাভাবিক নয়। মাংসের জন্য হাতি শিকারের কথা তিনি আগেও শুনেছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাংসের জন্য পার্বত্য অঞ্চলে হাতি শিকার করা হয়, বহুদিন ধরে এমনটা শোনা গেলেও কোনো প্রমাণ ছিল না। এই প্রথম তার সত্যতা পাওয়া গেল।
এপ্রিলের ২৫ তারিখ সাঙ্গু-মাতামুহুরীর গহিন বনে একটি মাচার ওপর হাতির মাংস শুকানোর প্রমাণ পায় গবেষক দল। স্থানটি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সীমান্তসংলগ্ন এলাকা।
৩৬ ফুট দৈর্ঘ্য ও তিন ফুট উচ্চতার মাচার ওপর হাতির মাংসের শুকনা টুকরা পাওয়া গেছে। গবেষক দলের ধারণা, এ জন্য একটি পূর্ণ বয়স্ক হাতি হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। হাতির মাংসের পাশাপাশি হাতির হাড় ও চামড়া আগুন দিয়ে শুকানো হচ্ছিল।
স্থানীয় লোকজন সম্প্রতি হাতি নিধনের এ রকম কয়েকটি ঘটনা নিশ্চিত করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মিয়ানমার সীমান্তে গহিন বনে একটি মাচার ওপর হাতির মাংস শুকানোর প্রমাণ পাওয়া যায়। ৩৬ ফুট দৈর্ঘ্য ও তিন ফুট উচ্চতার মাচার ওপর হাতির মাংসের শুকনা টুকরা পাওয়া গেছে। গবেষক দলের ধারণা, এ জন্য একটি পূর্ণ বয়স্ক হাতি হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও শেরপুর এলাকায় হাতির জন্য যে হুমকি রয়েছে, তা সাঙ্গু অভয়াশ্রমে না থাকলেও এই ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে বলে গবেষকদের মন্তব্য।
গবেষক দলের একজন সদস্য নাম প্রকাশ করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাঙ্গু-মাতামুহুরীর সংরক্ষিত বন এখনো তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত এবং প্রাকৃতিক বনের সব বৈশিষ্ট্য এখানে অক্ষত রয়েছে। এ বন হাতির আবাসস্থল হিসেবে বেশ সমৃদ্ধ এখনো। মাংসের জন্য হাতি হত্যা এখানে একটি বড় উদ্বেগ।’
মাংসের জন্য মারা হাতির শুকনা হাড় ও দাঁত মিয়ানমারে পাচার করা হতে পারে বলে তার ধারণা।
বন বিভাগের তথ্য বলছে, গত ৯ বছরে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ১১৪টি হাতি মারা গেছে; কিন্তু বন আদালতে মামলা হয়েছে মাত্র ১৯টি। আর থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে ৭৫টি। একই সময়ে নেত্রকোনা, শেরপুর, ময়মনসিংহ ও জামালপুরে ৩২টি হাতি হত্যার শিকার হয়।বনের মধ্যে বসবাস, এমন একটি স্থানীয় সম্প্রদায়ের বক্তব্য নিয়েছে কেমব্রিজের গবেষক দলটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের কয়েকটি চক্র হাতি শিকারে জড়িত।
মাচার ওপর পাওয়া হাতির মাংসের শুকনা টুকরো।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম চ র ওপর হ ত র ম র জন য হ ত স র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
রাজধানীতে শুরু হচ্ছে তিন দিনের চামড়া পণ্য প্রদর্শনী
চামড়াশিল্প, জুতা তৈরির যন্ত্রপাতি, জুতার বিভিন্ন উপকরণ, রাসায়নিক ও আনুষঙ্গিক পণ্য নিয়ে রাজধানী ঢাকায় শুরু হতে যাচ্ছে তিন দিনের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। ৪ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ‘লেদারটেক বাংলাদেশ ২০২৫’ নামে আয়োজিত এ প্রদর্শনী শুরু হবে। ১১তম বারের মতো আয়োজিত এ আসরে বিভিন্ন দেশের দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য প্রদর্শন করবে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশনস। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু সুলতান ভূঁইয়া জানান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এলএফএমইএবি) সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।
আয়োজকেরা জানান, প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ ছাড়া ভারত, পাকিস্তান, চীনসহ মোট আটটি দেশ থেকে প্রায় ২০০টি কোম্পানি তাদের পণ্য প্রদর্শন করবে। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রদর্শনী চলবে। দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে বিনা মূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন। প্রদর্শনীতে কাউন্সিল ফর লেদার এক্সপোর্টস ইন্ডিয়া (সিএলই), পাকিস্তান ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (পিটিএ), ইন্ডিয়া ফুটওয়্যার কম্পোনেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (ইফকোমা) ও চীনের গুয়াংডং সু–মেকিং মেশিনারি অ্যাসোসিয়েশনের (জিএসএমএ) আলাদা প্যাভিলিয়ন থাকবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, লেদারটেক বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয় ১১ বছর আগে। শুরুতে এটি ছিল একটি প্রযুক্তি প্রদর্শনী প্ল্যাটফর্ম। সময়ের সঙ্গে এ আয়োজনটি বাংলাদেশের চামড়া, জুতা ও সংশ্লিষ্ট খাতের উদ্ভাবন ও বাজার সম্প্রসারণের অন্যতম নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকের পরই বাংলাদেশের চামড়া ও জুতাশিল্পের অবস্থান। বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের ৩ শতাংশ ও বৈশ্বিক চামড়ার মোট চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশ পূরণ করে এই শিল্প। শিল্পনীতি ২০২২–এ রপ্তানি বহুমুখীকরণের অগ্রাধিকার খাত হিসেবে চামড়াকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।