শিলবুনিয়া ঝরনায় আমরা ১১ নারী এবং একটা ঘণ্টা
Published: 22nd, October 2025 GMT
বান্দরবানের আলীকদম থেকে ঢাকার বাসে ওঠার আগে আমাদের হাতে সময় ছিল ঘণ্টা দুয়েক। আমরা ১৩ জন নারী মেঘচূড়া পাহাড়ে ট্রেকিং করে একটা রাত জুমঘরে থেকে নিচে নেমে জিরোচ্ছিলাম। এর মধ্যে দুজন আবার কক্সবাজার চলে যাবেন, আমাদের সঙ্গে ঢাকায় ফিরবেন না।
তাঁদের বিদায় দিয়ে বাকি দুই ঘণ্টা উসুল করতে আমরা গুগল ম্যাপ খুলে বসলাম। বাহ্, শিলবুনিয়া ঝরনাটা তো বেশ কাছে! যাওয়াই যায়। স্থানীয় লোকেরা জানালেন, হ্যাঁ, অটোরিকশা বেশ খানিকটা এগিয়ে দেবে। এরপর বড়জোর ২০-৩০ মিনিট হাঁটাপথ। তবে একদম সমতল রাস্তা।
হঠাৎ সিদ্ধান্তে শিলবুনিয়াআমাদের দলে ছিলেন বিভিন্ন বয়সের নারী। ডালিয়া আপু যেমন ষাটোর্ধ্ব, পা মচকে গেছে তাঁর। নাসিমা আপু আল্টাসনোগ্রাফির অধ্যাপক। কিন্তু এখানে এসে তিনিও ‘আপু’। চিকিৎসক সমাজে আমি তাঁর অনেক ছোট। উনি যখন পাস করে বের হয়েছেন, আমার তখন জন্মও হয়নি। বয়স হলেও আপু বেশ ফিট।
খালেদা আপুর ওজন বেশি হলেও মানসিক শক্তি প্রবল। এদিকে মৌসুমী আপুর বয়স কম, ওজনের সমস্যা না থাকলেও উচ্চতা ভীতি আছে। একটু উঁচু–নিচু জায়গায় পা ফেলতে ভয় পান। এমনিতে আয়েশি ট্যুরের নাম করে তাঁদের ট্রেক করিয়ে মেঘচূড়া পাহাড়ে উঠিয়েছি। তারপরও সহজ যাতায়াত শুনে ভাবলাম, যাওয়াই যায়।
দলের বাকিদেরও কোনো দ্বিমত ছিল না, তাই আমরা অটোরিকশায় চেপে এগিয়ে গেলাম। অটোরিকশা যেখানে থামাল, সেখান থেকে হাঁটাপথ। অটোরিকশাচালক সাইফকে অনুরোধ করে নিয়ে গেলাম আমাদের সঙ্গে। পাহাড়ে সন্ধ্যা তাড়াতাড়ি নামে, তাই ভাবলাম, স্থানীয় কেউ সঙ্গে থাকলে ভালো।
ঝরনার শীতল পানিতে নানা বয়সের একদল নারী.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
কেন বাংলাদেশে বেকারি ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন নিউজিল্যান্ডের ৮১ বছরের স্যান্ড্রা
রাজধানীর বনশ্রীর একটি খাবারের দোকানে ঢুকতেই একজন বয়স্ক বিদেশি নাগরিকের ছবি দেখা গেল। কেক, পাউরুটি, মিষ্টি, শিঙাড়া, জুস—এমন খাবারের দোকানে একজন বিদেশি নাগরিকের ছবি কেন? এই প্রশ্ন জেগে বসল। সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে এই নারীর পরিচয় জানা গেল। ৮১ বছর বয়সী নিউজিল্যান্ডের এই নাগরিকের নাম স্যান্ড্রা ম্যাকারসি। তিনি পেশায় একজন শিক্ষক ছিলেন। এখন বিভিন্ন ধরনের সমাজসেবামূলক কাজ করেন।
স্যান্ড্রা ম্যাকারসি ২০১৮ সালে বাংলাদেশে বেকারি ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৭৪ বছর। তৈরি করেন স্যান্ড্রা ফুডস ইন্টারন্যাশনাল। এখানে প্রায় ৩০০ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। স্যান্ড্রা ম্যাকারসি বিনিয়োগ করলেও কোনো মুনাফা নেন না। মুনাফার টাকা খরচ আবার বিনিয়োগ করেন। প্রতি মাসে মুনাফার একটি অংশ নারায়ণগঞ্জের একটি অনাথ আশ্রমে দান করেন।
কে এই স্যান্ড্রা ম্যাকারসিস্যান্ড্রা ম্যাকারসি বসবাস করেন নিউজিল্যান্ডের ওয়াঙ্গারেই শহরে। এই শহর নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড থেকে দেড় শ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। স্যান্ড্রা ম্যাকারসি পেশায় ছিলেন শিক্ষক। তবে পারিবারিক ব্যবসা হিসেবে নিউজিল্যান্ডে রয়েছে লাইব্রেরি। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ডে ‘পিপল পটেনশিয়াল’ নামে একটি ভকেশনাল প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানও রয়েছে তাঁর। শিক্ষা ও সামাজিক খাতে সেবামূলক কাজের জন্য ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে ‘কুইন্স সার্ভিস মেডেল’ পেয়েছেন স্যান্ড্রা ম্যাকারসি। ২৫ বছর বয়স থেকেই তিনি কাজ করছেন সেবামূলক বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান রোটারি ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে।
অসম্ভব প্রাণশক্তির মানুষ স্যান্ড্রা ম্যাকারসি। ৭৩ বছর বয়সে প্যারাস্যুট দিয়ে বিমান থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘নিউইয়র্ক ম্যারাথন, অকল্যান্ড ম্যারাথন, লন্ডন ম্যারাথনও দৌড়েছি। আমার দর্শন হলো যা কিছু সামনে আসে হ্যাঁ বলতে হবে।’ গত মাসে তিনি নিউজিল্যান্ড থেকে ঢাকায় আসেন। তখন তিনি প্রথম আলোকে তাঁর এই অভিজ্ঞতার কথা জানান। তিনি বছরে অন্তত একবার বাংলাদেশে আসেন।
স্যান্ড্রা ফুডস ইন্টারন্যাশনালের নিউজিল্যান্ডের বিনিয়োগকারী স্যান্ড্রা ম্যাকারসি