কানাডার সাথে ‘সব বাণিজ্য আলোচনা’ অবিলম্বে বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার ট্রুথ স্যোশালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন।

কানাডায় শুল্কবিরোধী একটি বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। কানাডার অন্টারিও প্রদেশের সরকারের অর্থায়ন করা এই বিজ্ঞাপনে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের একটি বক্তব্য ব্যবহার করা হয়েছে। ১৯৮৭ সালের ওই বক্তৃতায় রিগ্যান বলেছিলেন, “বাণিজ্যিক বাধা প্রতিটি আমেরিকান কর্মীকে আঘাত করে।”

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, কানাডা ‘প্রতারণামূলকভাবে একটি বিজ্ঞাপন ব্যবহার করেছে।”

এরপর তিনি লিখেছেন, “তাদের জঘন্য আচরণের ভিত্তিতে, কানাডার সাথে সব বাণিজ্য আলোচনা বাতিল করা হয়েছে।”

ওয়াশিংটন চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে কাঠ, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং গাড়ি সহ কানাডিয়ান পণ্য আমদানির উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় কানাডাও পাল্টা মার্কিন পণ্যে শুল্ক আরোপ করে। আগস্টে ট্রাম্প আবারো শুল্ক হার বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশে উন্নীত করেছিলেন।

ট্রাম্পের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে অন্টারিও বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রদেশের প্রধানমন্ত্রী ডগ ফোর্ড মার্কিন সীমান্ত করের অন্যতম সোচ্চার সমালোচক।

ফোর্ড অক্টোবরের শুরুতে রিগ্যানের মন্তব্য সমন্বিত প্রদেশের নতুন বিজ্ঞাপন প্রচারণা শুরু করেছিলেন। তিনি সেই সময় ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে বলেছিলেন, “আমাদের কাছে থাকা প্রতিটি হাতিয়ার ব্যবহার করে আমরা কানাডার উপর আমেরিকান শুল্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা বন্ধ করব না। সমৃদ্ধির পথ হল একসাথে কাজ করা।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

জীবনযাত্রার ব্যয়ের লাগাম টানতে ব্যর্থ ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছে, সামাল দিতে কী করছেন

জীবনযাত্রার ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। এ অসন্তোষ কমানোর প্রচেষ্টা হিসেবে আজ মঙ্গলবার পেনসিলভানিয়ায় যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এর মধ্য দিয়ে ট্রাম্প আবার তাঁর সেই প্রচারণামূলক সমাবেশ কৌশলে ফিরতে চলেছেন। তিনি যখন দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার লড়াইয়ে নামার সিদ্ধান্ত নেন তখন এ বার্তা প্রচার করেছিলেন যে তিনি মূল্যস্ফীতি কমাতে চলেছেন। এ প্রচার-প্রচারণা আবার হোয়াইট হাউসে ফেরার পথে তাঁকে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছে।

তবে অভিযোগ আছে, ট্রাম্প জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টিকে ডেমোক্র্যাটদের ‘প্রতারণা’ বলে বর্ণনা করেছিলেন। এ অভিযোগ তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যানও করেছেন ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প।

ট্রাম্পের জোর দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে গরুর মাংস, ডিম ও কফির মতো নিত্যপণ্যের দাম কমছে এবং তিনি আদতে তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেনের রেখে যাওয়া বিশৃঙ্খল অবস্থা ঠিক করছেন।

নানা জরিপে দেখা গেছে, ক্ষমতায় আসার পর অর্থনৈতিক বিষয়ে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে।

রিপাবলিকান এ নেতা জীবনযাত্রার ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে তাঁর ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ আন্দোলনের সমর্থকদের থেকেও বাধার মুখোমুখি হচ্ছেন। তাঁর সমর্থকেরা তাঁকে বিদেশে শান্তিচুক্তির পরিবর্তে দেশের অর্থনীতির ওপর মনোযোগ দিতে বলেছেন।

মার্কিন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ট্রাম্প পেনসিলভানিয়ার পোকোনোতে মাউন্ট অ্যারি ক্যাসিনো রিসোর্টে বক্তৃতা দেবেন।

প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ট্রাম্প কয়েকটি ক্যাসিনো পরিচালনা করেছেন, যেগুলোর কয়েকটি দেউলিয়া হয়ে গেছে।

ট্রাম্পের পেনসিলভানিয়া সফর নিয়ে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, প্রথম দিন থেকেই প্রেসিডেন্টের লক্ষ্য, জো বাইডেনের রেখে যাওয়া মূল্যস্ফীতি সংকট শেষ করা। সে লক্ষ্য পূরণে তিনি ও তাঁর প্রশাসন কীভাবে গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করে যাবে, তা নিয়েই ট্রাম্প আলোচনা করবেন।

আরও পড়ুনমামদানির প্রচারকৌশলে এগোনোর চেষ্টা ট্রাম্পের ০৯ নভেম্বর ২০২৫

ট্রাম্পের জোর দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে গরুর মাংস, ডিম ও কফির মতো গুরুত্বপূর্ণ নিত্যপণ্যের দাম কমছে এবং তিনি আদতে তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেনের রেখে যাওয়া বিশৃঙ্খল অবস্থা ঠিক করছেন। যদিও গত সপ্তাহ পর্যন্ত তিনি জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টিকে ডেমোক্র্যাটদের ‘প্রতারণা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে এ সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্টের মধ্যে কিছুটা নমনীয়তা দেখা গেছে।

একজন ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ প্রেসিডেন্টের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্বের বিষয় হওয়া উচিত ছিল, অভ্যন্তরীণ নীতি; কিন্তু তা হয়নি।মারজরি টেইলর গ্রিন, ট্রাম্পের সাবেক ঘনিষ্ঠ সহযোগী

গতকাল সোমবার ট্রাম্প জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধি নিয়ে সংকট তৈরি হওয়ার বিষয়টিকে স্বীকার করেন নেন। ট্রাম্প বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিজনিত সমস্যা তৈরি করে গেছেন এবং আমরা এটা ঠিক করছি।’

জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর বিশেষ করে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিজনিত সংকটকে কেন্দ্র করে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বর্তমানে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত কিছু মানুষ মনে করেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণেই এমনটা হচ্ছে। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বার্ষিক গড় হারের চেয়ে গত সেপ্টেম্বর মাসে ২ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি বেড়েছে।

আরও পড়ুনমার্কিন পরিবারের ব্যয় বাড়তে পারে ২৪০০ ডলার, ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাব১৯ জুলাই ২০২৫

জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির বিষয়টি ট্রাম্পের ‘মাগা’ সমর্থকদের মধ্যে বিভাজনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নভেম্বর মাসে ট্রাম্পের থেকে আলাদা হওয়া তাঁর সাবেক ঘনিষ্ঠ সহযোগী মারজরি টেইলর গ্রিন বলেছেন, ট্রাম্প জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ন্ত্রণের ওপর যথেষ্ট মনোযোগ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।

সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্রিন বলেন, ‘একজন “আমেরিকা ফার্স্ট” প্রেসিডেন্টের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্বের বিষয় হওয়া উচিত ছিল অভ্যন্তরীণ নীতি, কিন্তু তা হয়নি।’

আরও পড়ুনট্রাম্প কি ভেনেজুয়েলায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন০২ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ