ভেতরে সমন্বয় সভা, বাইরে এনসিপির দুই পক্ষের হাতাহাতি
Published: 24th, October 2025 GMT
রাজধানীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) একটি সমন্বয় সভা চলাকালে দলটির নেতা–কর্মীদের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। পূর্ববিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন হলের দ্বিতীয় তলায় এ হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, এনসিপির নেতা–কর্মীরা দুই পক্ষে ভাগ হয়ে কনভেনশন হলে সভাস্থলের বাইরে হাতাহাতি করছেন। একজন হেলমেট দিয়ে আরেকজনকে আঘাত করার চেষ্টা করছেন। আরেকজন এসে তাঁকে কিলঘুষি দিচ্ছেন। বেশ কয়েকজন তাঁদের ছাড়ানোর চেষ্টা করছেন। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, যাঁরা এ ঘটনার ভিডিও করছেন, তাঁদের ভিডিও করতে নিষেধ করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিপির একজন যুগ্ম সদস্যসচিব প্রথম আলোকে বলেন, এনসিপির ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও ঢাকা জেলার সমন্বয় সভা চলছিল। এ সময় এনসিপির মোহাম্মদপুর থানা ও বংশাল থানার নেতা–কর্মীদের মধ্যে মারামরির ঘটনা ঘটে। এতে একজন আহত হয়েছেন। তবে এ ঘটনা দলীয় কোনো বিষয় নিয়ে নয়, নিজেদের মধ্যে আর্থিক লেনদেন নিয়ে হয়েছে বলে ওই নেতা জানান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনস প র এ ঘটন করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
শপথ নিলেন নির্বাচিত চাকসু নেতারা, ফেসবুক পোস্টের জেরে ছিলেন না একজন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচিত প্রার্থীরা শপথ নিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় তাঁরা শপথ নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের (ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভবন) মিলনায়তনে এ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ধর্ষণ ঘটনা নিয়ে ফেসবুক পোস্ট দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়া চাকসুর নির্বাহী সদস্য আকাশ দাস শপথ অনুষ্ঠানে আসেননি।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শপথ গ্রহণের এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শহীদ হৃদয় চন্দ্র তড়ুয়া ও শহীদ মো. ফরহাদ হোসেনের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার চাকসুর নির্বাচিত প্রার্থীদের এ শপথ পড়ান। আর হল সংসদের প্রতিনিধিদের শপথ পড়ান সংশ্লিষ্ট আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষ।
শপথ অনুষ্ঠান শেষে চাকসু ও হল সংসদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, চাকসু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য জরুরি একটি অঙ্গ। দীর্ঘদিন ধরে চাকসু ছিল না। শিক্ষার্থীরা বিভিন্নভাবে তাঁদের দাবি তুলে ধরেছেন। এখন তাঁরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে তাঁদের যেসব চাওয়া রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে কথা বলতে পারবেন এবং এর মাধ্যমে তাঁদের পরস্পরের মধ্যে যে সহমত–শ্রদ্ধাবোধ, সেগুলো জাগ্রত হবে।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, সহ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী, চাকসুর সাবেক ভিপি আ ম শামসুজ্জামান (হিরা), এস এম ফজলুল হক, মাজহারুল হক শাহ, মো. জসিম উদ্দিন ও জিএস আ ফ ম মাহমুদুর রহমান প্রমুখ।
এর আগে চলতি ১৫ অক্টোবর চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভিপি ও জিএস পদে ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত মো. ইব্রাহীম সাঈদ বিন হাবিব নির্বাচিত হন। এ ছাড়া এজিএস পদে ছাত্রদলের আয়ুবুর রহমান নির্বাচিত হন। এর বাইরে বাকি ২৩টি পদের ২২টিতেও ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা জয়ী হন।
সমালোচনার পর শপথে অনুপস্থিতবুয়েটের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ফেসবুকে নিজের আইডি থেকে পোস্ট করে সমালোচিত হওয়ার পর শপথে অনুপস্থিত ছিলেন আকাশ দাস। গতকাল বুধবার রাতে তিনি এ পোস্ট দিয়েছিলেন। আকাশ দাস চাকসু নির্বাচনে শিবির-সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন।
আকাশ দাসের দেওয়া পোস্টে তিনি ধর্ষণ-কাণ্ডের ঘটনায় ভুক্তভোগীকেও দায়ী করেন। এ ছাড়া তদন্ত করলে ভুক্তভোগী ব্যক্তির দোষ বেশি পাওয়া যাবে বলেও উল্লেখ করেন। যদিও এক ঘণ্টার মধ্যে তিনি পোস্ট মুছে দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর রাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ হয়। পাশাপাশি চাকসু ও হল সংসদের নির্বাচিত নেতারাও আকাশ দাসের সঙ্গে শপথ নিতে আপত্তি জানান।
শপথ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে আকাশ দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেহেতু আমি শপথ অনুষ্ঠানে গেলে সংঘাতমূলক পরিস্থিতি হতো, তাই আমি যাইনি।’
অনুপস্থিত থাকা প্রতিনিধিদের শপথ কীভাবে নেওয়া হবে, তা জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মনির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের কাজ ছিল নির্বাচিত করা। আমরা নির্বাচিত করে দিয়েছি, বাকিটা প্রশাসনের দায়িত্ব।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসনিক) অধ্যাপক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রীয় সংসদের জয়ী প্রার্থীরা চাকসুর সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আলাদাভাবে শপথ নিতে পারবেন। তবে আকাশ দাসের বিষয়ে যেহেতু অভিযোগ এসেছে, তাই তাঁর বিষয়ে চাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন।
আরও পড়ুনবুয়েটের ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে চাকসু নেতার পোস্ট, সমালোচনার পর মুছে দিয়ে দুঃখ প্রকাশ১৮ ঘণ্টা আগে